ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সংসারে কাজের লোকের বাড়াবাড়ি

ঝুমকি বসু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সংসারে কাজের লোকের বাড়াবাড়ি

ছবি : সংগৃহীত

ঝুমকি বসু : কেস স্টাডি-১ : সোহেল ও রিয়ার বিয়ে হয়েছে সম্প্রতি। শাশুড়ি চাকরির সুবাদে থাকেন ঢাকার বাইরে। বাসায় সার্বক্ষণিকভাবে থাকেন কাজের লোক মালেকা খালা। কোলেপিঠে করে ছোট থেকেই সোহেলকে মানুষ করেছেন তিনি। প্রতিদিন সংসারের যাবতীয় কাজ করেন নিজ দায়িত্বে। এতে রিয়ারও বেশ সুবিধা হয়। কিন্তু তারপরও মাঝেমাঝেই রিয়ার সঙ্গে খালার  ঠোকাঠুকি লেগে যায়।

এই তো সেদিন ওরা ঠিক করলো বাইরে থেকে খাবার এনে ডিনার করবে। কিন্তু মালেকা নারাজ। রাতে বাইরের খাবার খেলে বুক জ্বালা করবে তাই উনি ওদেরকে খেতে দেবেন না। সোহেলের সঙ্গে রিয়ার মনোমালিন্য হলে তার মধ্যেও ঢুকে পড়েন তিনি। সোহেলকে ছোট থেকে মানুষ করায় সে কিছু বলতেও দ্বিধা করে। শাশুড়িকে বললে তিনি বলেন খালা কতো কাজ করে একটু সহ্য করে নিতে। এভাবে ব্যক্তিগত ব্যাপারে ঢুকে যাওয়া রিয়ার একদম পছন্দ নয়। তারপরও কিছুই করার নেই ওর।

কেস স্টাডি-২ : মেঘার শাশুড়ি আর কাজের বুয়া মিলে ওর জীবনটা দুর্বিষহ করে ফেলেছে। ব্যাপারটা মেগা সিরিয়ালের মতো শোনালেও, সত্যি সত্যিই দুজন মিলে সব সময় সবার সামনে মেঘাকে ছোট করে। প্রতিদিনই মেঘার কোনো না কোনো কাজের ভুল ধরে বুয়া তা লাগায় ওর শাশুড়ির কাছে। আর তাই নিয়েই শুরু হয় অশান্তি। শ্বশুর আর স্বামী দুজনেই ব্যস্ত ডাক্তার, আর স্বভাবে নিতান্তই ভালো মানুষ। এতো ঘোরপ্যাঁচ বোঝেন না। ওনাদের সামনে আবার মেঘার সঙ্গে ওরা খুব ভালো ব্যবহার করে। তাই মেঘা শ্বশুর কিংবা স্বামীকে কিছুই বলতে পারে না। কিন্তু ওর মানসিক অশান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে।

আজকালকার ছুটে চলা জীবনে কাজের বুয়া অনেক বড় হেল্পিং হ্যান্ড। বলতে পারেন এদের ছাড়া আমাদের চলেই না। কিন্তু মাঝে মাঝে সংসারের বিভিন্ন বিষয়ে এদের বাড়াবাড়ির মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যায়। বাড়াবাড়ি অনেক সময় সহ্যও করা যায় না। কিন্তু কাজের মানুষ পাওয়া খুব কষ্টের। তাই কিছু বলতেও দ্বিধা লাগে। এরকম পরিস্থিতিতে পড়লে কীভাবে তা সামলাবেন চলুন একটু দেখে নেওয়া যাক।

* বাসায় শাশুড়ি থাকলে আপনার সমস্যাটা প্রথমে তার কাছে বলুন। তিনি কিছু না করতে পারলে তখন আপনাকেই পরিস্থিতি সামলাতে হবে।

* কাজের লোকের খবরদারি যে আপনার পছন্দ নয়, এটা তাকে বুঝিয়ে বলুন। বিশেষ করে আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানো যে তার উচিত নয় ভালোভাবে তা বুঝিয়ে দিন।

* বুয়া চলে যাওয়ার ভয়ে তার অন্যায় মেনে নেবেন না। তাহলে তা বাড়তেই থাকবে। কাজের বুয়ার যেসব ব্যবহার আপনার অপছন্দ তা নিয়ে বাসার সবার সামনে খোলাখুলি কথা বলুন।

* আপনার আচার-আচরণে বুঝিয়ে দিন আপনি বাসার অন্যদের মতোই একজন সদস্য। বাসার অন্য কেউ যদি কাজের বুয়ার অন্যায় আচরণের পক্ষ নিয়ে আপনাকে অপমান করে, সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবাদ করুন।

* প্রায়ই যদি কাজের বুয়া নিয়ে এমন অশান্তি হয়, তাহলে সবাইকে তা বুঝিয়ে অন্য লোক রাখুন।

* পাশের ফ্লাটের অন্য কারো সঙ্গে কাজের লোকের নিন্দা করবেন না। এতে আপনারই সম্মান নষ্ট হবে।

* যিনি বাসায় সব সময় কাজ করেন মাঝে মাঝে তার চাহিদা মতো তাকে ছোটখাটো উপহার দিন। এতে সম্পর্কটা সহজ হবে।

* কোনো কাজ অপছন্দ হলে বাসার সবার সামনে তা নিয়ে বকাঝকা করবেন না। বাসায় কাজ করলেও তার কিন্তু সম্মান আছে, এটা ভুলে যাবেন না।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়