ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সরকারে এসেছি জনগণের ভাগ্য গড়তে : প্রধানমন্ত্রী

রফিক মুয়াজ্জিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২০, ৪ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সরকারে এসেছি জনগণের ভাগ্য গড়তে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারে এসেছি নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, জনগণের ভাগ্য গড়তে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবনে ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, দিন যত এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের বহির্বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে ততই প্রগতির পথে যেতে হবে। প্রগতির পথে না গেলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চললে আমরা দেশকে সেভাবে উন্নত করতে পারব না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ এর পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ একরকম নিষিদ্ধ ছিল। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমার ছাত্রলীগের নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ভিপি চুন্নুকে জীবন দিতে হয়েছিল। খালেদা জিয়ার নির্দেশে তাকে গুলি করে হত্যা করে ছাত্রদলের ক্যাডাররা। এরকম আমাদের আরো বহু নেতা-কর্মী জীবন দিয়েছে। ওই শহীদ মিনারে সোহরাবকে হত্যা করেছে। আমাদের নেতা (বর্তমান ত্রাণমন্ত্রী) মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বুকে চুরি মেরেছিল। তারা আসলে কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে পারেনি।

তিনি যুক্তি উপস্থাপন করেন, তারা যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতাতেই বিশ্বাস রাখত তাহলে কখনো ৭ মার্চের ভাষণকে নিষিদ্ধ করত না। আর আজকে সেই ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

ব্রিটিশ লেখক জ্যাকব এফ ফিল্ডের ‘উই শ্যাল ফাইট অন দ্য বিচেস- দ্য স্পিচেস দ্যাট ইনস্পায়রড হিস্ট্রি’শীর্ষক বইতেও জাতির পিতার ভাষণকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সেখানে আরো ৪১টি ভাষণ রয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন- অ্যালেকজান্ডার দ্য গ্রেট, জুলিয়াস সিজার, অলিভার ক্রমওয়েল, জর্জ ওয়াশিংটন, নেপোলিয়ান বোনাপার্ট, জোসেফ গ্যারিবল্ডি, আব্রাহাম লিংকন, ভ্লাদিমির লেনিন, উইনস্টন চার্চিল, উড্রো উইলসন, ফ্রাংকলিন রুজভেল্ট, চালর্স দ্য গল, মাও সে তুং, হো চি মিন। তাদের ভাষণের সঙ্গে এক নম্বরে আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। বিশ্ব প্রামাণ্য দলিলে স্থান পাওয়ায় এই একটি মাত্র ভাষণ আজকে সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। অথচ এই ভাষণকেই প্রজন্মের পর প্রজন্মকে শুনতে দেওয়া হয়নি। তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আজকে আমরা বিশ্বব্যাপী যে স্বীকৃতি পেয়েছি তাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আমি বলব, মনযোগ দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে। সব সময় মনে রাখতে হবে যে, দেশকে আগামীতে নেতৃত্ব দিতে হলে শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ছাড়া কখনো নিজেকেও গড়ে তোলা যাবে না। দেশকেও এগিয়ে নেওয়া যাবে না। কাজেই ছাত্রলীগের যে মূলনীতি (শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি) সেই নীতি ধরেই এগুতে হবে। শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষার আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে শান্তির পথে প্রগতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকের এটা খেয়াল রাখতে হবে, যার যার নিজের বাড়িতে গেলে আশপাশে কেউ যদি নিরক্ষর থাকে তাহলে তাকে অক্ষর জ্ঞান দিতে হবে। সেইসাথে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীদের কাছে এটাই থাকবে এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমার অনুরোধ। ইনশাল্লাহ, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব। আর ছাত্রলীগই হবে তার অগ্রসেনানী।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়।

সূত্র : বাসস

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ জানুয়ারি ২০১৮/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়