ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূলে অসন্তোষ

এম.শাহীন গোলদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৯, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাতক্ষীরায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূলে অসন্তোষ

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: সাতক্ষীরা সদরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

তৃণমূল নেতাকর্মী অনেকেরই অভিযোগ- এখানের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নে নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে সে তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

তবে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এসএম শওকত হোসেন জানান, অভিযোগ সত্য নয়। বরং শতভাগ স্বচ্ছতার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই বাছাই প্রক্রিয়া। গত ৩ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই বাছাই। এতে ১৬৪ ভোট পেয়ে প্রথম হন এসএম শওকত হোসেন। এছাড়া বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু ১৪৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়, ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোরশেদ ৬২ ভোট পেয়ে তৃতীয় ও ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ২০ ভোট পেয়ে চতুর্থ হন। এতে কাউন্সিলর ছিলেন মোট ৩৯৫ জন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবু জানান, ভোট গ্রহণ করা হয় ৩ ফেব্রুয়ারি। অথচ প্রার্থীদের কাছে ভোটার তালিকা পৌছায় ১ ফেব্রুয়ারি রাত ৮ টায়। এ অবস্থায় সব কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি যে ভোটার তালিকা দেওয়া হয় তাতে তাদের মোবাইল নম্বর কিংবা অন্য কোনো নির্দেশনাও ছিল না।

তিনি জানান, ২০১৫ সালে গঠিত কমিটির অনেকে মারা গেছেন, কেউ বিদেশে রয়েছেন। এমন সংখ্যা প্রায় ৩০ জন। তাদের স্থলে নতুন সদস্য নেওয়া হয়েছে খেয়াল খুশী মতো। এমন অবস্থায় কাউন্সিলর হতে ব্যর্থ হয়েছেন স্বনামধন্য অ্যাড. শাহনাজ পারভিন মিলি, পৌর কাউন্সিলল ফিরোজ আহমেদ, পৌর কাউন্সিলর অনিমা রানী মন্ডল, শেখ আহমদ আলি কচিসহ অনেকেই।

আরেক মনোনয়ন প্রার্থী সদর উপজেলা ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান জানান, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের  ১২৬ টি ওয়ার্ডে ভোটার ২৫২ জন। এই তালিকা থেকে ঘোনা ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি শহিদুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে সেখানে বসানো হয়েছে আসাদুল ইসলামের নাম। এমনকি ৭ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি জগদীশ চন্দ্রের নাম তুলে দিয়ে সেখানে বসানো হয়েছে মো. শহিদুল ইসলামের নাম। তিনিও অভিযোগ করে বলেন, যথা সময়ে ভোটার তালিকা দেওয়া হয়নি। আমি এই অনিয়মের প্রতিবাদ করেছি। বৈকারি ইউনিয়নে কাউন্সিলর পরিবর্তনের ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।

মনোনয়ন প্রার্থী বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোরশেদ জানান, আগের কাউন্সিলর তালিকা ইচ্ছা মতো কাটা ছেঁড়া করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি। ফলে অনেকে বাদ পড়েছেন। আবার অনেকেই তালিকাভূক্ত হয়েছেন। এতে গরমিল হয়েছে এটাই বড় অনিয়ম। তিনি জানান, ৬৭ সদস্যের পৌর কমিটির সদস্য সংখ্যা পছন্দের লোক দিয়ে বাড়িয়ে ৭৩ করা হয়েছে। সেখানেও বাদ পড়েছেন অনেকেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এসএম শওকত হোসেন জানান, কারও কোনো আপত্তি থাকলে তা নিয়ে তিনি বাছাই প্রক্রিয়ার সময় অভিযোগ করতে পারতেন। ভোটাভুটি যা কিছু হয়েছে সবার সহযোগিতার ভিত্তিতেই হয়েছে। এ সময় সাতক্ষীরা ২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পৌর কমিটির সভাপতি আবু সায়ীদ জানান, পৌর কমিটির মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসনে সমঝোতা করে সদস্য পদে কিছু রদবদল  করা হয়েছে। এ বিষয়টি অনুমোদন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কাউকে ইচ্ছা করে বাদ দেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। ভোটার তালিকা স্বচ্ছ এবং তা ছিল সমঝোতামূলক।

 

 


রাইজিংবিডি/সাতক্ষীরা/৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/শাহীন গোলদার/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়