ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সাফল্যে রঙিন বছর

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫২, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাফল্যে রঙিন বছর

ইয়াসিন হাসান, সিলেট থেকে : খুব আগ্রহ নিয়ে সিনিয়র এক সাংবাদিক বলছিলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশ ম্যাচের পর ম্যাচ হারত! প্রতিদিন পরাজয়ের ম্যাচ রিপোর্ট লিখতাম। ভুল বের করতাম। কোথায় দল হারল? কেন হারল? কিংবা আমাদের দলের কি জয়ের সামর্থ্য নেই…। কিন্তু আমরা আশা হারাতাম না।’

একটা সময়ে বাংলাদেশ একটানা হেরেছে ২৩ ম্যাচ, যা এখনো রেকর্ড বইয়ের শীর্ষে। ১৯৯৯ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ২০০২ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ২৩ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হেরেছে। অবশ্য জয় কিন্তু ওই সময়েও পায়নি। ২৩ ম্যাচ পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ম্যাচটিতে কোনো ফল হয়নি। চার ম্যাচ হারের পর আবার নো রেজাল্ট। এরপর আবার টানা ম্যাচে পরাজয় এবং তারও দুই ম্যাচ পর আসে কাঙ্ক্ষিত জয়। মাঝে দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত তাই সেগুলো হিসাবের বাইরে। অর্থাৎ, টানা ৪৭ ম্যাচ পর জয়হীন ছিল বাংলাদেশ। ভাবা যায়?

অথচ চলতি বছর বাংলাদেশের পারফরম্যান্স অভাবনীয়, অকল্পনীয়। ২০ ওয়ানডের মধ্যে জিতেছে ১৩টি। সাফল্যের হারে  ইংল্যান্ড ও ভারতের পর বাংলাদেশের অবস্থান। বলার অপেক্ষা রাখে না বাংলাদেশ ক্রিকেটের দিন বদলের নায়ক ওই মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার নেতৃত্বে পুরো দলটার চিত্রই এখন আলাদা।

 



২০১৪ সালে নেতৃত্ব পাওয়ার পর থেকে ১২ দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজের ৮টিই জিতেছেন মাশরাফি। তার সঙ্গে আছেন চতুষ্টয়-সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। এই পঞ্চপাণ্ডবের হাত ধরেই পাল্টে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্র্যান্ড। যারা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে, প্রতিপক্ষকে বলে-কয়ে হারাতে পারে, জিততে পারে যেকোনো কন্ডিশনে, ওড়াতে পারে বিজয়ের ঝান্ডা।

পঞ্চপাণ্ডবের সঙ্গে যোগ হয়েছেন সৌম্য, সাব্বির, মোসাদ্দেক, মিরাজ ও মুস্তাফিজদের মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটার। তারা প্রত্যেকেই উজ্জ্বল আকাশের একেকটি ধ্রুবতারা। ধূমকেতু হয়ে প্রত্যেকে এসেছিলেন। নিজেদের জাত চিনিয়ে, নিজেদের পারফরম্যান্স দেখিয়ে প্রত্যেকে থিতু হয়েছেন।

২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে এখন পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় সিরিজের পাশাপাশি বৈশ্বিক ও মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স দারুণ চিত্তাকর্ষক। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ খেলে সেমিফাইনাল। ২০১৬ এবং ২০১৮ এশিয়া কাপে বাংলাদেশ খেলেছে ফাইনাল। ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ খেলেছে ফাইনাল (সেটা অবশ্য টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ছিল)। পাশাপাশি চলতি বছরের শুরুতে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালও খেলেছে লাল-সবুজ জার্সীধারীরা। বলার অপেক্ষা রাখে না ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ক্রিকেট তার সবচেয়ে ভালো সময় পার করছে।

 

 

আশা হচ্ছে জেগে থেকে স্বপ্ন দেখার মতো। ওই স্বপ্নবাজরা স্বপ্ন দেখছেন বলেই আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বর্তমান অবস্থায়। তবে এখানেই থামলে চলবে না। দিগন্ত বিস্তৃত সীমাহীন নীল আকাশ ছোঁয়ার লক্ষ্য বাংলাদেশের। 

 

রাইজিংবিডি/সিলেট/১৫ ডিসেম্বর ২০১৮/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়