ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সার ও গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ৮ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সার ও গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন

বিশেষ প্রতিবেদক : কৃষি খাতের প্রয়োজনীয় সারের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তির আওতায় এক লাখ ৫ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য মোট ব্যয় হবে ৩৬৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এছাড়াও খাদ্য মজুত বাড়াতে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন গম আমদানি করা হবে। এজন্য ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

বুধবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ক্রয় প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। বৈঠকে মোট ১১ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরবর্তী শস্য মওসুমে সারের চাহিদা পূরণে শিল্প মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের আলাদা ৫টি প্রস্তাবে বিভিন্ন ধরনের মোট এক লাখ ৫ হাজার টন সার আমদানি করা হবে। এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে চুক্তিবদ্ধ সাড়ে ৫ লাখ টনের মধ্যে ১ম লটে ৩০ হাজার টন গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানি করবে। প্রতি টনের দাম ২৭১ দশমিক ৫০ ডলার হিসেবে মোট খরচ পড়বে ৬৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

বৈঠকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংস্থা মা’আদেন ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির অধীনে ১ম লটে ২৫ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতি টনের দাম ৪২০ ডলার হিসেবে মোট খরচ হবে ৮৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বেলুরাশিয়ান পটাশ কোম্পানি ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির অধীনে ১ম লটে ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি টনের দাম ২৭৫ দশমিক ৫০ ডলার হিসেবে মোট খরচ হবে প্রায় ৬৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। 

অতিরিক্ত সচিব বলেন, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ১ম লটে ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি টনের দাম ২৭৫ দশমিক ৫০ ডলার হিসেবে মোট খরচ হবে প্রায় ৬৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। এছাড়া জেএসসি ফরেন ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন ‘প্রোডিনটর্গ’ রাশিয়া ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন মধ্যে চুক্তির অধীনে ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির ক্রয় প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি টন সারের দাম ২৭৫ দশমিক ৫০ ডলার হিসেবে মোট খরচ হবে প্রায় ৬৯ কোটি ২২ লাখ টাকা।

বৈঠকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক ডিএপি ও এমওপি সার আমদানির বিষয় অবহিত করা হয় বলে অতিরিক্ত সচিব জানান।

বৈঠকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্যাকেজ-১ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি টনের দাম ২৭০ দশমিক ৮৯ ডলার টন হিসেবে মোট খরচ হবে ১১৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স এ্যাগ্রোকোর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড গম সরবরাহ করবে বলে তিনি জানান।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় চারলেনের ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় বেড়েছে।  প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৪০ কোটি পাঁচ লাখ ৬৬ হাজার ২০৮ টাকা। তবে এটি আরো ৫৮ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার ৪৮৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে মোট খরচ দাঁড়াল ২৯৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৫ টাকা। সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়েছে।

এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের  ‘শতভাগ পল্লি বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ  (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চটগ্রাম ও সিলেট বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পের একটি প্যাকেজের আওতায় দুই লাখ ১৭ হাজার ৫৬৩টি এসপিসি পোল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চারটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসব পোল সরবরাহ করবে। এজন্য ব্যয় হবে ৬৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

পুরান ঢাকার টিকাটুলি হৃষিকেশ রোডের যে ভবন থেকে আওয়ামী লীগের যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেই ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন কিনে নিচ্ছে সরকার। ব্যক্তি মালিকাধীন পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষিত ওই বাড়ি কিনতে সরকারের ব্যয় হবে ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ ২৯০০ টাকা। ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন’ অনুসারে সরকার ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে’ বর্তমান মালিকদের কাছ থেকে রোজ গার্ডেন কিনবে।

এছাড়া গ্যাসভিত্তিক ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড (ইউএফএফএল) ও পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেডের (পিইউএফএফএল) ব্যবহৃত গ্যাস দিয়ে পিইউএফএফএল এর খালি জায়গায় নতুন, আধুনিক, শক্তি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে অর্থায়নকারীর সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১০২৫ দশমিক ৮০ মিলিয়ন ডলার। জাপানের মিৎসুবিসি হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং চায়না ন্যাশনাল কোম্পানি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ আগস্ট ২০১৮/হাসনাত/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়