ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সিনেমা করতে কি কি লাগে?।। টোকন ঠাকুর

টোকন ঠাকুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪১, ১৮ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিনেমা করতে কি কি লাগে?।। টোকন ঠাকুর

কাঁটা দ্য ফিল্ম- পরিচালকের সঙ্গে সিনেমার অন্যান্যরা

সিনেমা করতে কি কি লাগে? চিত্রনাট্য, পরিচালক, পর্যাপ্ত পুঁজি, কলাকুশলী, লোকেশন, ক্যামেরা, সম্পাদনা এসব তো লাগবেই। আর কি লাগে? লাগে ইচ্ছে, চূড়া ইচ্ছে। ইচ্ছেটা হলো তোমার দুচোখে পদ্মদিঘির ঘাট, ইচ্ছেটাই হলো আর্ট। ইচ্ছে যেমন গঙ্গা ফড়িং, ইচ্ছে একটি গল্প, ইচ্ছে অনেক কবিতা, ইচ্ছে নানান গান, ইচ্ছে হরেক শব্দ, ইচ্ছে হঠাৎ নৈঃশব্দও। ইচ্ছে ছবির পরে ছবি। ইচ্ছে দুপুর আকাশ উপুড় ইচ্ছে অনেক দূর...

ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে খুব স্বাভাবিকভাবে চরিত্রটি করে যেতে হয়। করার ইচ্ছেটা করতে হয়। করার চূড়ান্ত ইচ্ছে করতে হয়, তাইলেই হয়। এর বেশি কিছু লাগে না। আর অভিনেতা-নেত্রীদের খেয়ালে রাখা দরকার, চারপাশের মানুষ প্রত্যেকেই নিজের একটি চরিত্রে থাকা সত্ত্বেও নিজে নিজে সে তার প্রয়োজনে একাধিক চরিত্রে অভিনয় করে চলেছে। তাহলে অভিনয় কঠিন কিসের? ‘কক্ষণো অভিনয় করিনি’ কথাটা তবে কারও বেলায়ই কি সত্যি? কাজেই, অভিনয়ে না-পারা বলে কিছু নেই। চরিত্রটা ধরে উঠতে পারলেই একদম হয়ে গেল। চরিত্র ধরিয়ে দিয়ে সেই চরিত্র তোমার মধ্য দিয়ে উঠিয়ে আনার ব্রতই তো নিয়েছে প্রণেতা! প্রণেতা কে? কোথায় থাকেন, কোথায় হাঁটেন?

পিঠে পিরামিড নিয়ে যে-লোকটি হেঁটে যাচ্ছেন বুড়িগঙ্গার পাশ দিয়ে, তিনি ঢাকায় থাকেন, ছবি বানাবার নেশায় নির্ঘুম, ছবির নাম- ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’ মূল গল্পের কত্থক বাংলা সাহিত্যের নয়া ফেনোমেনা শহীদুল জহির, তিনি জন্মেছিলেন পুরান ঢাকার নারিন্দার ভূতের গলিতে। ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’-এর অন্যতম প্রধান চরিত্র আব্দুল আজিজ ব্যপারির বাড়ির হোল্ডিং নাম্বার ‘৩৬ নাম্বার ভূতের গলি’। ছবিতে পুরো ভূতের গলি মহল্লার গল্পটা ধরার ইচ্ছেটা বয়ে যাচ্ছে। এতে, তোমার ইচ্ছেটা এসে যোগ দিতে হবে।

সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি, সিনেমা একটি অডিও-ভিজুয়াল আর্ট। গান-সংগীত-গল্প-কবিতা-নাচ-চিত্রকলা-ভাস্কর্য যাই বলি না কেন আর্টে সিনেমাই মহাজন। ঠিক প্রচলিত জীবন ব্যবস্থার মতো আরো এক জীবনযাপন তৈরি করতে হয়। সেই জীবনের আনন্দ-বেদনার গপ্পো উপস্থিত দর্শকের সামনে মানে লক্ষ কোটি মানুষের সামনে সেটি উপস্থাপন করা হয়। কাড়ি-কাড়ি টাকা খরচের ব্যাপার সিনেমা। শতশত লোকের অংশগ্রহণ সিনেমা। ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’-এর চিত্রনাট্যে চরিত্র আছে আড়াইশোর বেশি। এরপরও চূড়ান্ত সত্য হচ্ছে, সিনেমা একটি ইচ্ছে, সিনেমা একটি ইচ্ছের ব্যাপার। সেই ইচ্ছে কার?

কাঁটা দ্য ফিল্ম- শুটিংয়ের  ফাঁকে  


ইচ্ছেকারের ইচ্ছে। ইচ্ছেকারকে কেউ বলে নির্মাতা, কেউ পরিচালক। সেই নির্মাতার ইচ্ছেটাই যদি নির্মিত হয়, সিনেমা হয়। সিনেমা হয়ে ওঠে। বা ঠিক সিনেমা হয়ে ওঠে না, হয়ে ওঠাতে হয়। কোনোদিন কোনো আসমানী কায়দায় তো হয় না, এটি তিলে তিলে নির্মাণ করতে হয়। সেই নির্মাণে নির্মাতার প্রধান শক্তি তার ক্যারেক্টরস আর তার টিম। সেই টিমে সিনেমাটোগ্রাফার, অ্যাসিসন্ট্যান্ট ডিরেক্টরস, ক্যামেরা-লাইটের লোকজন, ট্রান্সপোর্ট, খাবার-দাবার, প্রোডাকশন ও লোকেশন ম্যানেজমেন্ট, সেট-প্রপস-কস্টিউমের হিসাব ও হিসাব সামলানো...তারপর আফটার শ্যুট এডিটং-সাউন্ড-মিউজিক-গ্রাফিক্স-অ্যানিমেশন করা...কাজ অনেক। ওই যে, পৃথিবী জানে, সিনেমা মহাজনী আর্ট। অনেক লোকবলের পরিশ্রম, অর্থকড়ির বিপুল ব্যবহার সাপেক্ষে সব আর্টকে গিলে খেয়েও সিনেমা আরো এক অন্যমাত্রার মহাজনী আর্ট হয়ে ওঠে। তারপর সেটি দেখতে থাকে লক্ষ-কোটি মানুষ, বছরের পর বছর ধরে। সমকালীন নানামুখি ঘাপলাবাজির পরেও সত্য, খুব ভালো সিনেমার একমাত্র সংজ্ঞা হচ্ছে- সেটি টিকে থাকে বছরের পর বছর। ভালো সিনেমার সেই ক্ষমতা থাকে, থাকতে হবে। দশকের পর দশক ধরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরের ভেতর সেই সিনেমার আদর-গ্রহণযোগ্যতা থাকবে বা থাকতে হবে। ‘সুবর্ণরেখা’ ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ‘কোমলগান্ধার’ বা ‘টেস্ট ওফ চেরি’র সেই ক্ষমতা আছে। ‘রশোমন’র আছে। ‘পথের পাঁচালি’র আছে। কনটেম্পরারিকে ছাপিয়ে যেতে না পারলে আর কিসের কি? রিলিজের পর কয়দিন খুব হাবড়ি-তাবড়ির মার্কেটিং কেরামতি দেখিয়ে তাৎক্ষণিক ইনভেস্টের টাকাটা তোলার একটি প্রয়োজনীয়তা থাকে সত্য; যেহেতু এটি নির্মাণে অনেক টাকা যায়। একটি সিনেমাতে কোটি টাকা খরচ খুবই সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু তারপরও সত্য, সমকালীন নানান হিসেব-নিকেশি ঢেউ খুব দ্রুতই থিতু হয়ে আসে। বাজারে ততদিনে আরো আরো নতুন সিনেমা নেমে পড়ে। তখনও যদি সেই আগে রিলিজ করা সিনেমাটি তার অস্তিত্ব নিয়ে দর্শকের সামনে হাজির হবার ক্ষমতা রাখে বা সেই সিনেমাতে যদি কনটেম্পরারিকে ছাপিয়ে যাওয়ার মৌল উপাদান থাকে, সেটি ভালো সিনেমা, ক্ষমতাবান সিনেমা। সেই সিনেমার জন্যে প্রস্তুতি থাকতে হয় নির্মাতার, নির্মাতার নির্মাণ টিমের সবারই সেটি কমবেশি থাকতে হয়। একা নির্মাতাই যদি প্রস্তুতির মধ্যে থেকে চিৎকার করতে থাকে, কিচ্ছু হবে না। বাকিরা যদি টেলিভিশন মার্কা প্রস্তুতি নিয়ে আসে, তাহলে হবে না। নির্মাতার ইচ্ছে বুঝে, অনুভূতি বুঝে প্রস্তুত হতে হবে টিমের সামনে-পেছনের সবাইকে। তাহলেই নির্মাতার প্রস্তুতি কাজে লাগবে, দর্শক একটি ক্ষমতাবান সিনেমা পাবে।

নির্মাতার মাথা ব্যথা তো টোটাল প্রোডাকশনের মাথা ব্যথা, নির্মাতার মন খারাপ তো প্রোডাকশনের মন খারাপ, নির্মাতার ঠান্ডা লাগা মানেই প্রোডাকশনের ঠান্ডা লাগা, নির্মাতার সর্দি-কাঁশি, নির্মাতার জ্বর তো টোটাল প্রোডাকশনেরই সর্দি-কাঁশি-জ্বর...। নির্মাতার অসুখ ছেড়ে গেল তো প্রোডাকশনের অসুখ সেরে গেল। নির্মাতা প্রস্তুত তো প্রোডাকশনের সব্বাই প্রস্তুত- এই হলো রীতি। রীতি, কারণ, এই-ই হয়। এভাবেই হয়।

নির্মাতার চোখে শূন্যতা ও নীল, তাই আকাশ এমন শূন্যসূচক নীল। নির্মাতার ইচ্ছেয় প্রকাশিত পালক, নির্মাতার ইচ্ছেয় কম্পমান ডানা তো একঝাঁক পাখি উড্ডীন আকাশে। সেই আকাশটা নীল। কিন্তু আকাশ বলে কিছু নেই, কেবলই অপার শূন্যতা...। সেই শূন্যতায় পাখি উড়ে যাবে নির্মাতার ইচ্ছে বলেই পাখি উড়বে। তুমি যদি একটি পাখির চরিত্র করো, তুমিও উড়বে। তুমি যে উড়বে, ইচ্ছে কার?

নির্মাতার।

ইটস কলড ডিরেক্টরস মিডিয়া!

গোত্রে নানারকম মানুষের বসবাস। মানুষের মধ্যে যারা সিনেমার দর্শক, তারাও নানান শ্রেণীর। শ্রেণীগত বাস্তবতায় গড়ে ওঠা বোধ-বুদ্ধি ও অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক কারণে গ্রহণ ক্ষমতায় দর্শকও কত রকম! কোন শ্রেণীর দর্শক কোন ছবি দেখবে, সে স্বাধীনতা একান্তই যার যার।

‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’ সংশ্লিষ্ট সবার ভাবনা এখন সিনেমাটি ঘিরে 

  
জীবনানন্দ দাশ ও কাজী নজরুল ইসলাম জন্মেছিলেন ১৮৯৯ সালে। দুজনই বাংলা ভাষার কবি। নজরুলের কবিজীবন বিশের দশকেই বিকশিত ও মিথের মতো তার উত্থান ছড়িয়ে পড়েছিল বাংলায়। ১৯৪১ এ গুরুতুল্য রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু হলো, ’৪২ এর দিকে নজরুল পক্ষাঘাতে আক্রান্ত এবং এরপর ১৯৭৬ সালে মৃত্যু পর্যন্ত নজরুল আর সৃষ্টিতে ফিরতে পারেননি। অন্যদিকে নজরুলের জন্মের বছরেই জন্ম জীবনানন্দ দাশের, দাশের লেখালেখির শুরু বা প্রকাশ আমরা দেখলাম নজরুল বিখ্যাত হয়ে ওঠারও ১০-১৫ বছর পরে এবং ১৯৫৪ সালে কোলকাতায় শ্লথগতির চলন্ত ট্রামের ধাক্কায় এই দাশ কুপোকাত। ধরাশায়ী।

এত বছর পর, বাংলা কবিতার পাঠক কাকে কীভাবে নেন, তাও যার যার ব্যাপার। জীবনানন্দ দাশকে তার সমকালে নাকি বুঝতেই পারেননি, এমন আমরা জানি। আজও তিনি বোধগম্যতার শাদামাটা স্তরে এসে গেছেন, তাও বলার দিন আসেনি। তবু এ কথা বোধ হয় অস্বীকার করা যাবে না, রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলের চেয়ে বাংলা কবিতায় জীবনানন্দ দাশ একটু বেশিই আদরের। এবং ক্রমশ তা পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও।

সমগ্র শিল্পকলার ইতিহাসটাই অনেকটা এইরকম। সিনেমার বেলায়ও কি তাই নয়? সমকালীন দর্শকের কাছে ব্যবসায়িকভাবে ফ্লপ করা ছবির নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ছবিও এখনো চলছে পৃথিবীর নানান দেশে। ঋত্বিক মাত্র সাড়ে পঞ্চাশ বছর বয়সেই তার সৃষ্টিটুকু রেখে চলে গেছেন। অথচ ঋত্বিকের সময়কার ব্যবসা সফল ছবির প্রায় বেশির ভাগ পরিচালকই আজ আর পরিচিত নন, তাদের ছবিরও নাম মনে নেই চিন্তাশীল মানুষের কাছে।

নানারকম সিনেমা হয়। তবু সব তর্ক শেষে সামগ্রিকভাবে দর্শকই চূড়ান্ত বিচারক হয়ে থাকে। ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’-এর প্রতিজন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বা ক্যামেরার পেছনে আমরা যারা কাজ করছি, সবাই যদি এসব একটু চিন্তার মধ্যে রেখে এতে যুক্ত থাকি, ভালো হয়, ভালো হবে।
 

আর নির্মাণের পর ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’ দেখতে আইসো ...


‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’-এর নির্মাতার একান্ত আকাঙ্খা যে, আমরা যেন একটি ভালো ছবি নির্মাণের কারিগর হয়ে উঠি...তাই ভালো ছবির কারিগর হওয়ায় ঋত্বিক ঘটক দ্যাখো, পুনরায় দ্যাখো। ছেচল্লিশ সাল দ্যাখো। দাঙ্গা দ্যাখো। দেখামাত্রই হিন্দু মুসলিমকে এবং মুসলিম হিন্দুকে কেটে ফেলছে, ইতিহাসের রক্ত লাগা পৃষ্ঠায় চোখ বুলিয়ে হাঁটো। সাতচল্লিশ সাল দ্যাখো, দেশভাগ দ্যাখো। তাই আবারও ঋত্বিক ঘটক দ্যাখো। ‘কোমলগান্ধার’ দ্যাখো। ভৃগু আর অনুসূয়াকে দ্যাখো। ‘সুবর্ণরেখা’ দ্যাখো। সীতা আর অভিরামের মাকে দ্যাখো। নবরতন কলোনির জীবনযাপন দ্যাখো। আবারও ‘মেঘে ঢাকা তারা’ দ্যাখো। ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ দ্যাখো। বারবার দ্যাখো। ইচ্ছে হলে পঞ্চাশের দশক দ্যাখো। কাশ্মিরের হজরত বাল মসজিদের ঘটনাটি দ্যাখো। ১৯৬৪ সাল দ্যাখো। আবারও ঢাকা-কোলকাতার দাঙ্গা দ্যাখো। উন্মাদ হিন্দু-মুসলমানের হিংস্র্রতা দ্যাখো। ১৯৭১ সাল দ্যাখো। পাকিস্তানি প্রশাসনের শোষণ দ্যাখো। ৭ মার্চ দ্যাখো। বঙ্গবন্ধুকে দ্যাখো। ২৫ মার্চের ভয়াল রাত দ্যাখো। নির্বিচারে অগণন বাঙালিকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করে ফেলা দ্যাখো। নদীপাড়ের বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ দ্যাখো। তারপর স্বাধীন দেশেও সামরিক শাসন দ্যাখো। ১৯৮৯-৯০ সাল দ্যাখো। বাবরি মসজিদ দাঙ্গা দ্যাখো। পারলে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া, দেশ ছেড়ে যাওয়া শরণার্থীদের দ্যাখো।

পারলে বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ, আদিবাসি-সাঁওতাল উৎপীড়ন দ্যাখো। উৎপীড়িত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের দ্যাখো। এবং সিনেমা দ্যাখো। কিম কি ডুক দ্যাখো। কিওরোস্তমি দ্যাখো। ক্রিস্টোফার নোলান বা গঞ্জালেস ইনারিতু দ্যাখো। পারলে বই পড়ো। ভালো গল্প, ভালো কবিতা পড়ো। ভালো ছবি দ্যাখো। ফেলিনি দ্যাখো। তারকাভস্কি দ্যাখো। প্লিজ, টিভি দেখো না। গাছপালা-মানুষের জীবনযাপন দ্যাখো। গান শোনো। সমুদ্রের শব্দ শোনো। যদি সত্যিই উৎকর্ণ হও, পাহাড়ের ডাক শুনতে পাবে, শোনো।  নৈঃশব্দের মধ্যে গুম হয়ে যাওয়া শেখো, জানালার শিক ভেদ করে তাকিয়ে থাকা শেখো, কিন্তু টিভি দেখো না।

পারলে অমিয়ভূষণ বা কমলকুমার মজুমদার পড়ো, তিন বাড়ুজ্যে পড়ো (মানিক, বিভূতি, তারাশঙ্কর) ওয়ালিউল্লাহ পড়ো, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হক পড়ো, কায়েস আহমেদ পড়ো, শহীদুল জহির পড়ো...নাবালকদের মতো শুধু সস্তা পপুলারিটি পড়ো না।
 

কাঁটা দ্য ফিল্ম- প্রিপ্রোডাকশন ক্যাম্প ...

  
এই মুহূর্তে ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’ নির্মাণাধীন। আমি লেখক শহীদুল জহিরকে ধরতে চেয়েছি, পড়তে চেয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ, মানুষের মন, মনন, তাদের ভালোবাসা-ঘৃণা, তাদের ধর্মবোধ, সর্বোপরি এখানকার মানুষের জীবনযাপন ধরতে চেয়েছি ভূতের গলির মহল্লার মানুষের মধ্য দিয়ে, ভূতের গলিতে ভাড়াটিয়া হয়ে আসা হিন্দু দম্পতি সুবোধ-স্বপ্নার মধ্য দিয়ে। বিশাল একটি টিম কাজ করছে আমার সঙ্গে। তাদের প্রত্যেকের প্রতি আমি ভালোবাসা জানাচ্ছি, কারণ তারাই নির্মাণাধীন ছবি ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’-এর সব কিছু। ছবিটা নির্মাণ করছে তারাই। আমি শুধু স্থপতির দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আশা করি বাড়িটা বানানো হলে সিনেমা দর্শক ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’-এর ঘর-বারান্দা-চিলেকোঠায় দু’ দণ্ড আড্ডা দিতে পারবে, ভালোবাসাকে ভালোবাসতে পারবে। সেই পারার জন্যে তোমাকে আরও কিছুদিন অপেক্ষায় রাখছি আমরা।

পারলে নদী দেখতে যাইও, ধানী-দিগন্তে যাইও, সিনেমা দেখতে যাইও, আর নির্মাণের পর ‘কাঁটা দ্য ফিল্ম’ দেখতে আইসো ...

আলোকচিত্র: হোসেইন আতাহার সূর্য



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ মার্চ ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়