ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সিলেটে মানবপাচারে অভিযুক্ত ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযান

আব্দুল্লাহ আল নোমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৪, ১৩ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিলেটে মানবপাচারে অভিযুক্ত ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : জনশক্তি রপ্তানির নামে মানবপাচারে অভিযুক্ত ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে সিলেট জেলা প্রশাসন। ভূ-মধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে এ জেলার চার জন নিহত এবং বেশ ক’ জন জীবিত উদ্ধারের পরই এ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

অভিযানের শুরুর দিন সোমবার পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরের একাধিক ট্রাভেল এজেন্সিতে অভিযান চালায়। এ সময় ২৩টি এজেন্সিকে প্রায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া আট জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেটে একাধিক ট্রাভেল এজেন্সি দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রপ্তানির নাম করে মানবপাচার করে আসছিল। সম্প্রতি এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এমন শতাধিক প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দিয়েছিল। এর মধ্যে শুধু সিলেট জেলায়ই ৭৬টি ট্রাভেল এজেন্সি রয়েছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজারে ১২ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে প্রায় ৬০ জনের মৃত্যু হয়। যাদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নাগরিক। এদের মধ্যে সিলেট জেলার পাঁচ জন এবং মৌলভীবাজারের এক জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এ ছাড়া কয়েকজন নিখোঁজও রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

এ ঘটনায় সিলেটের যে চারজন নিহত হয়েছেন, তারা নগরীর জিন্দাবাজারের ইয়াহিয়া ওভারসিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইতালি পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক এনাম আহমদের বাড়িও সিলেটের গোলাপগঞ্জে। তিনি আট লাখ টাকা চুক্তিতে অবৈধভাবে ইউরোপে লোক পাঠানোর কাজ করছিলেন। নৌকাডুবির পর থেকে দোকান বন্ধ রেখে লাপাত্তা হয়ে যান এনাম। তার ফোন বন্ধ রয়েছে।

এ ঘটনার পর নড়েচড়ে ওঠে সিলেটের প্রশাসন। দুপুরে নগরীর জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশন, বন্দরবাজারের রঙমহল মার্কেট, সুরমা মার্কেট, উপশহরের রোজভিউ মার্কেটে গড়ে উঠা অবৈধ ট্রাভেল এজেন্সিগুলোতে হানা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রতিনিধিরা।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অভিযানকালে লাইসেন্সবিহীন এসব প্রতিষ্ঠান থেকে জরিমানা আদায় করেন এবং আট জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। তবে অভিযানের সময় অনেক ট্রাভেল এজেন্সির মালিকরা পালিয়ে যান।

আটাব সিলেট অঞ্চলের সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল জানান, সিলেটের বিভিন্ন মার্কেটে বিপুল সংখ্যক ট্রাভেল এজেন্সি নামধারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে মানবপাচার হচ্ছে। এসব এজেন্সির মধ্যে এমন এজেন্সি রয়েছে, যেগুলো বিদেশে মানবপাচারের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। 

সিলেটের জেলা প্রশাসক ও জেলা মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এম কাজী এমদাদুল ইসলাম জানান, পাঁচ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন পাঁচটি পৃথক মোবাইল টিম সিলেটের বিভিন্ন অনুমোদনহীন ট্রাভেলস এজেন্সিতে অভিযান চালিয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

 

 

 

রাইজিংবিডি/সিলেট/১৩ মে ২০১৯/আব্দুল্লাহ আল নোমান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়