ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

সুপেয় পানির সংকট নিরসনে জলাশয় খনন

এম.শাহীন গোলদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ২০ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সুপেয় পানির সংকট নিরসনে জলাশয় খনন

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা : তীব্র গরমে নাকাল মানুষ। চৈত্রের শেষে ও বৈশাখের শুরুতে অনাবৃষ্টির কারণে সাতক্ষীরা জেলার পুকুরগুলো শুকিয়ে গেছে। সুপেয় পানির অভাবে রান্না থেকে শুরু করে খাওয়া ও গোসল করতে বিপাকে পড়েছে তারা। এই অবস্থা প্রতিবছরের।

সরকারি যে সব দীঘি ও পুকুরে সারা বছর পানি থাকে, প্রভাবশালীরা তা দখল করে রেখেছে। ফলে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি সাতক্ষীরায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন প্রভাবশালীদের দখলে রাখা ১৩০টি জলাশয় উদ্ধার করা হয়েছে।

এরমধ্যে ৭৩টি জলাশয় খনন, পুনঃখনন ও সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পরিষদ। এর মধ্যে ৪৮টি জলাশয়ের টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। জলাশয়ের পুনঃখনন বা সংস্কার কাজ সমাপ্ত হলে লক্ষাধিক মানুষ সুপেয় পানির সুবিধা পাবে।

জলাশয়গুলো যুগ যুগ ধরে প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় তা উদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। পুকুরের আয়তন ও গভীরতা পরিবর্তন করে উদ্ধার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জেলা পরিষদের উদ্যোগে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি পুকুর, দীঘি ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পে জেলা পরিষদের অধীন ৭৩টি পুকুর ও দীঘি পুনঃখনন করা হবে। এতে সুপেয় পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বেদখল হয়ে যাওয়া পুকুর ও দীঘি উদ্ধার হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে বেদখলে থাকা সুপেয় পানির উৎস দখলমুক্ত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে জেলা পরিষদের সব পুকুর, দীঘি ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প ২০১৭-১৮ গ্রহণ করা হয়। গত জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পের অধীনে সদর উপজেলায় একটি, কলরোয়া, তালা ও দেবহাটায় দুটি করে জলাশয় পুনঃখনন করা হবে। কালীগঞ্জে ১১টি, আশাশুনীতে ২৪টি ও শ্যামনগরে ৩১টি পুকুর ও দীঘি পুনঃখনন করা হবে।

আয়তন ও গভীরতা অনুযায়ী জলাশয়ের কাজ ঠিক মতো হচ্ছে না। খনন ও সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প অনুযায়ী জলাশয়ের যে আয়তন দেখানো হযেছে, বাস্তবে তার মিল নেই। কারণ প্রভাবশালীদের কাছ থেকে দখলকৃত সম্পত্তি পুরোপুরি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ বছর ধরে সরকারি জমিতে আধাপাকা ও পাকা ঘর নির্মাণ করায় তা উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ জানায়। 

খনন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন এন্ড ব্রাদার্স, এমএম বিল্ডার্স, আরাধনা ইন্টাপ্রাইজ, এমএসএবিটিসিবিবিএল। তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রভাবশালীদের কাছ থেকে তাদের পক্ষে দখলমুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছ। যতটুকু দখল করা সম্ভব হচ্ছে, সেই অংশে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।

সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ১৩০টি পুকুর ও দীঘি রয়েছে। এরমধ্যে আপাতত ৭৩টি পুনঃখনন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে ২০১৯ সালের জুনে।

তিনি আরো বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জেলার সুপেয় পানির সংকট কিছুটা কমবে। বিশেষ করে শ্যামনগর, আশাশুনী ও কালীগঞ্জ উপজেলার মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পের অধীনে যতগুলো পুকুর ও দীঘি পুনঃখনন হচ্ছে, তার মধ্যে ৬৬টি এই তিন উপজেলার। 

সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জেলার মানুষের পানির কষ্ট দূর হবে। দীর্ঘ দিন বেদখলে থাকা সরকারি জলাশয় উদ্ধার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।



রাইজিংবিডি/সাতক্ষীরা/২০ এপ্রিল ২০১৮/এম. শাহীন গোলদার/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়