ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সেচের বিষয়ে কমান্ড এরিয়া মানা হচ্ছে না

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৯, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সেচের বিষয়ে কমান্ড এরিয়া মানা হচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসরকারিভাবে দায়িত্ব দেওয়ার পরে সেচের বিষয়ে কমান্ড এরিয়া মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

শনিবার ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘বাংলাদেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের পথপরিক্রমা ও সরকারি উদ্যোগ’ শীর্ষক সেমিনারে এ অভিযোগ করেন কৃষিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আগে কৃষির সব কিছু বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) দেখভাল করত, তখন সব ঠিক ছিল। পরবর্তীতে বেসরকারিভাবে দায়িত্ব দেওয়ার পরে সেচের বিষয়ে কমান্ড এরিয়া মানা হচ্ছে না। কৃষিকাজের জন্য যত্রতত্র গভীর নলকূপ বসানোর ফলে পরিবেশের ভারসম্য নষ্ট হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে এবং আমরা কৃষকদের জন্য এমন কোনো যন্ত্র তৈরি বা আমদানি করব না; যা এক বছর ব্যবহার করার পরেই নষ্ট হয়ে যাবে ও কৃষকদের আবার নতুন করে কিনতে হবে। এ দিকেও কিন্তু বিশেষ নজর রাখতে হবে।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের আরো উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। কারণ আমাদের দেশের অনেক ধানের গাছ একটু বড় হওয়ার পরে অনেক সময় নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। এখন যে যন্ত্র আমাদের রয়েছে তা ধান পাকার পরে সোজা হয়ে দাঁড়ানো ধান গাছগুলো কাটতে পারে। তবে নুয়ে পড়া ধান গাছ কাটতে পারে না। তাই এগুলো কাটার জন্য তেমন মেশিন তৈরি বা আমদানি করতে হবে আমাদের।

তিনি বলেন, এ ছাড়া ছোট কৃষকদের কথা চিন্তা করে তাদের জন্য কম খরচে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি করতে হবে। যাতে করে তারাও এ সকল যন্ত্রপাতির সুফল ভোগ করতে পারে এবং কৃষিক্ষেত্রে দেশ আরো এগিয়ে যেতে পারে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল আলম।

কৃষি মন্ত্রনালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন প্রমুখ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৮৭৩টি পাওয়ার টিলার, ১ হাজার ২৯৪টি ট্রাক্টর, ৭ হাজার ৫৫৮টি পাওয়ার  থ্রেসার, ২ হাজার ১৮০টি রিপার, ১ হাজার ফুট পাম্প, ৫০০ স্প্রেয়ার, ১ হাজার ৩৩৮টি সিডার, ৩৭৯টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার এবং ৭টি রাইস ট্রান্সপ্লান্টার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় চালু করা হয়েছে কৃষি যন্ত্রপাতি সেবা কেন্দ্র।

এদিকে, বর্তমানে সরকার প্রতিটি উপজেলায় কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৫০ শতাংশ উন্নয়ন সহয়তা দিচ্ছে। খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্র ক্রয়ে কৃষককে দাম দিতে হচ্ছে অর্ধেক। বাকিটা পরিশোধ করছে সরকার। কেনা যাচ্ছে জেলা বা উপজেলা থেকেই। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় হাওর ও দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার কৃষক ৭০ শতাংশ ছাড়ে কিনতে পারছে কৃষি যন্ত্র। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যান্ত্রিকীকরণের মাত্রা বেড়েছে।  জনপ্রিয়তা পাচ্ছে নতুন নতুন যন্ত্রপাতিও।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে জমি চাষে ৯০, সেচে ৮০, মাড়াইয়ে ৭০, কর্তনে ২ ও রোপনে ১ শতাংশ ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। তবে শস্য রোপনে ২০২১ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ পর্যন্ত যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে চায় সরকার। রোপনে বর্তমানে ১ শতাংশ ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার হলেও ২০৪১ সালের মধ্যে তা ৮০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। আর ২০২১ সালের মধ্যে কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায় সরকার, যা ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রায় ৮০ শতাংশ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/নাসির/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ