ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

সেঞ্চুরিতে জবাব বিজয়ের

আব্দুল্লাহ এম রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সেঞ্চুরিতে জবাব বিজয়ের

সেঞ্চুরির পর বিজয়ের উল্লাস (ছবি : মিলটন আহমেদ)

আব্দুল্লাহ এম রুবেল : ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ২০১৩ সালে অসাধারণ সেঞ্চুরি ছিল এনামুল হক বিজয়ের। সেঞ্চুরির পর শূন্যে লাফিয়ে অসাধারণ ভঙ্গিতে উদযাপন করেন তিনি। পুরো গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে আর্ন্তজাতিক ম্যাচে এমন উদযাপন অনেককেই করতে দেখা যায়। তাই বলে প্রায় দর্শকহীন মাঠে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বিজয়ের সেই একই উদযাপন! ওয়ালটন ১৯তম জাতীয় ক্রিকেট লিগে সেঞ্চুরির পর এই উদযাপন কি কোন জবাব?

২০১৫ সালে বিশ্বকাপে খেলার সময় ইনজুরিতে পড়েন এক সময় দলের ওপেনার এনামুল হক বিজয়। এরপর আর দলে জায়গা হয়নি। গত দু’বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ কয়েকবার নিজেকে প্রমাণ দিয়েছেন। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য হঠাৎ আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। সৌম্য ও ইমরুল কায়েসের ব্যাটিং ব্যার্থতায় অনেকেই ভেবেছিলেন এবার বোধহয় বিজয়ের নাম আসতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলে ডাক পাননি। ডাক পাওয়ার যোগ্য ছিলেন, জবাব দিলেন ব্যাটে।

শনিবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ওয়ালটন ১৯তম জাতীয় ক্রিকেট লিগে রংপুরের বিপক্ষে বড় স্কোর তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন এনামুল হক বিজয়। আর তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন খুলনার আরেক ওপেনার রবিউল ইসলাম। দারুণ ব্যাট করতে থাকা এনামুল হক বিজয় দিনশেষে অপরাজিত থাকেন ১০৫ রানে।
জাতীয় ক্রিকেট লিগে সর্বশেষ মৌসুমে খুলনার শেষ ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেছিলেন বিজয়। যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন। সেই একই ছন্দে এনামুল হক বিজয়। ব্যাটিংয়ের শুরুতে খেলেছেন ওয়ানডে স্টাইলে। শুরুতে স্ট্রাইক রেটও ছিল বেশি। প্রথম ৫০ রান এভাবেই খেলে তোলেন তিনি। পরের ৫০ রান করেছেন কিছুটা রয়ে-সয়ে। এবার বিজয়ের লক্ষ্য আরও সামনের দিকে। ম্যাচে যতক্ষণ খুশি খেলতে চান। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত রান করার পরেও জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ার আক্ষেপটাও আছে তার। তবে আরও পারফর্ম করে ফের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তুলতে চান। শনিবার দিনের খেলা শেষে রাইজিংবিডির সাথে একান্তে আলাপে এসব কথা বলেন।

উইকেট নিয়ে তিনি বলেন, পেস বোলাররা যদি উইকেটে ঠিকভাবে হিট করতে পারে, তাহলে উইকেটে বাউন্স হবে। যেমন আমাদের আল আমিন ৪ উইকেট পেয়েছে। উইকেটে ব্যাটিং সহায়তা আছে, তবে এসব উইকেটে খেলতে হলে ধৈর্য্য ধরতে হবে, সেই ধৈর্য্যটা নিয়ে খেলতে পেরেছি বলেই বড় ইনিংস খেলতে পেরেছি।’

 


শুরুর দিকে ঝুঁকি নিয়ে খেললেও পরের দিকে কিছুটা রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছেন। তবে এটাকে কনফিডেন্টের অভাব বলছেন না বিজয়। তিনি বলেন, ওরা (রংপুর) ফিল্ডিং প্ল্যানিংয়ে কিছুটা চেঞ্জ এনেছিল। পয়েন্ট, কাভার, গালি এসব জায়গা ফাঁকা করে রেখেছিল। তখন আমি ধৈর্য্য ধরেছি। এরকম সময় উল্টা পাল্টা শর্ট খেললে বড় ইনিংসের সম্ভাবনা কমে যায়।’

এই ম্যাচে এখনও খুলনার জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে জানান বিজয়। তিনি বলেন আমরা যদি ১৫০ রানের লিড নিতে পারি, তাহলে সম্ভাবনা আছে। আমাদের টিমে রাজ ভাই, মাশরাফি ভাই, আল আমিনের মতো বোলার আছে, দ্বিতীয় ইনিংসে ওদের দ্রুত আউট করা সম্ভব। আর আমাদের অনেক হার্ড হিটার ব্যাটসম্যানও আছে। যারা অল্প সময়ে অনেক কিছু করতে পারে। সব কিছুই আসলে আরেকটা দিন না গেলে বলা সম্ভব হচ্ছে না।’

ঘরোয়া লিগে নিয়মিত রান পাচ্ছেন। তবুও জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছেন না, এজন্য আক্ষেপ নয়, বিজয়ের রয়েছে কষ্ট। তিনি বলেন, জাতীয় দলের বাইরে থাকা যে কোন খেলোয়াড়ের জন্য কষ্টের। ২০১৫ সালের পর থেকে জাতীয় দলে খেলা হয়নি। অবশ্যই জাতীয় দলের জন্য মরিয়া হয়ে আছি। সে জন্য চেষ্টা করছি, কষ্ট করছি। নিজের যে ল্যাকিংসগুলো আছে, সেগুলো ইমপ্রুভ করার চেষ্টা করছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে ইমপ্রুভ ভালো হচ্ছে। প্রতিদিই কিছু না কিছু শিখে ব্যাটিংটাকে উন্নত করার চেষ্টা করছি। এই জিনিসগুলো চেষ্টা করছি বলেই হয়তো বড় রানগুলো আসছে।’

সেঞ্চুরি করার পর শূন্যে লাফিয়ে অন্য ভঙ্গিতে উদযাপন, এটা কি কোন কিছুর জবাব। বিজয় বললেন, তেমন কিছু না, সেঞ্চুরিটা আমার কাছে স্পেশাল। কোন কিছু এচিভ করার যে আনন্দ, সেটা আসলে ভিতরে না রাখাই ভালো। এটাকে উদযাপন করা অবশ্যই উচিৎ। আল্লাহ তো সবাইকে সব কিছু দেন না। আমাকে বড় কিছু দিয়েছেন। এটাকে সেলিব্রেশন না করলে আল্লাহও হয়তো খুশি হবেন না।’

 

 

রাইজিংবিডি/খুলনা/১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭/রুবেল/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়