ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

স্বাধীনতাবিরোধীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশ বন্ধের দাবি

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৯, ১২ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বাধীনতাবিরোধীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশ বন্ধের দাবি

সংসদ প্রতিবেদক : স্বাধীনতাবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের সন্তান ও উত্তরসূরিদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশ বন্ধ এবং যারা চাকরিতে আছেন তাদের বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা। অন্যদিকে, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক লুটেরাদের সুবিধা দেওয়ায় অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা।

মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ সালের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার সূচনা দিনে তারা এ দাবি জানান।

আলোচনায় অংশ নেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী, ইসরাফিল আলম, মোহাম্মদ নোমান, কাজী রোজী, জাসদের নাজমুল হক প্রধান ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ নোমান ও শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতীয় ঐক্য গড়ার আহ্বানের সমালোচনা করে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, কাদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য হবে, বিএনপি-জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের সঙ্গে? স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে ঐক্য হতে পারে না।

বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ঐক্য গড়ার প্রস্তাবের প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেন, শুধু বদরুদ্দোজা নয়, এর পেছনে আরো অনেকে আছেন। এর সঙ্গে রয়েছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা কী ছিল আমার জানা নাই। তবে তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দল করেছেন। আবার একজন শিল্পপতিও বটে। তার পোশাক তৈরির কারখানায় শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ না করায় ২০০৯ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সেই ব্যক্তি এখন বিভিন্ন ছবক দিচ্ছে। এদের ষড়যন্ত্রে দেশবাসী সাড়া দেবে না। এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে আছে, স্বাধীনতাবিরোধীদের কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না।

মন্ত্রী আরো বলেন, কোটা সংস্কারের নামে যারা আন্দোলন করতে গিয়ে ভিসির বাসায় হামলা করেছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের ও তাদের উত্তরসূরিদের সরকারিতে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। এমনকি স্বাধীনতাবিরোধীদের যারা এখনো সরকারি চাকরিতে বহাল আছেন তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তানদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দিলে ওরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধ্বংস করবে।

স্বাধীনতার চেতনাবিরোধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান নৌপরিবহনমন্ত্রী।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নোমান বলেন, ব্যাংক খাতে লুটপাট নিয়ে কথা বলা যাবে না। চুরি করলে চোর বলা যাবে না। এটা কোন মহারাজার দেশে বাস করছি? বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরি হয়ে গেল। কোনো হদিস নাই, জবাবদিহিতা নাই। তদন্ত কমিটি হলো রিপোর্ট প্রকাশ করলেন না। তাহলে তদন্ত কমিটি কেন করলেন? যাদের নাম প্রকাশ করতে পারলেন না তারা কি রাষ্ট্র চালায়? তারা কি রাষ্ট্রের চাইতেও ক্ষমতাধর?

জাসদের নাজমুল হক প্রধান দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা এখনো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ যখন সবদিক থেকেই এগিয়ে যাচ্ছে তখন এই অপশক্তিরা পেছন থেকে ছুরি মেরে অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দিতে চায়। কিন্তু পাকিস্তানের পেতাত্মাদের পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন কোনোদিনই পূরণ হবে না।

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বাজেটের কিছু অংশের সমালোচনা করে বলেন, দেশের কয়েকটি ব্যাংকে রীতিমতো হরিলুট হয়ে গেল। সাগরচুরির মতো হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হলো। কিন্তু অর্থমন্ত্রী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বাজেটে এসব ব্যাংককে পুরস্কৃত করলেন। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ জুন ২০১৮/আসাদ/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়