ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অগ্নিঝরা মার্চ

স্বাধীনতার ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৩, ২৩ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বাধীনতার ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক

২৩ মার্চ ৭১, ৩২ ধানমন্ডিতে উৎফুল্ল জনতার মাঝে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু

শাহ মতিন টিপু : ২৩ মার্চ, ৭১। সেদিন ঢাকায় ছিল গণআন্দোলনের জোয়ার।রাজপথে লাঠি, বর্শা, বন্দুকের মাথায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে প্রকম্পিত করে তুলেছিল ঢাকার আকাশ-বাতাস।

হোটেল ইন্টারকনের সামনে পোড়ানো হয় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছবি, ইয়াহিয়া খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টোর কুশপুতুল। স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ আজ ‘প্রতিরোধ দিবস’ পালন করে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আজ ছিল সাধারণ ছুটির দিন।

আজ সাধারণ ছুটি থাকায় ঢাকা শহর ও শহরতলির বিভিন্ন দিক হতে বন্যার স্রোতের মতো জনতার স্রোত প্রবাহিত হতে থাকে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের দিকে। কাকডাকা ভোর হতে গভীর রাত অবধি ঢেউয়ের মতো একের পর এক শান্তিপূর্ণ ও নিয়মানুগ মিছিলের পর মিছিল। মিছিলকারী সকলের হাতেই স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও বাঙালী প্রাক্তন সৈনিকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘জয় বাংলা বাহিনী’র আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ ও মহড়া আউটার স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। জয় বাংলা বাহিনীর পাঁচ শতাধিক সদস্য প্যারেড করে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে যান।

২৩ মার্চ এদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক। ১৯৭১-এর এই দিনেই স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পল্টন ময়দানে জয়বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে এবং মিছিল করে পল্টন হতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে পৌঁছে সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে নূর-এ আলম সিদ্দিকী স্বাধীন বাংলার পতাকা বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

ঢাকাসহ সারা দেশের প্রতিটি বাড়িতে, যানবাহনে, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ভবনসমূহের শীর্ষে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিষদ ভবন, সুপ্রিমকোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট, বঙ্গবন্ধুর বাসভবনসহ সকল প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকার পাশাপাশি স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত পতাকা উত্তোলিত হয়। রাজধানী ঢাকা পরিণত হয় পতাকার নগরীতে।

সে এক অভাবনীয় দৃশ্য! সমগ্র বাঙালী জাতি এদিন মেতে ওঠে পতাকা উৎসবে। প্রেসিডেন্ট ভবন, গভর্নর হাউস এবং ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া আর কোথাও পাকিস্তানের পতাকা দেখা যায়নি।

অন্যদিকে ঢাকায় আগমনের পর আজই প্রথমবারের মতো জেনারেল ইয়াহিয়া প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বের হয়ে সেনানিবাসে গমন করেন এবং সেখানে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এ ছাড়া ভুট্টোও আজ লে. জেনারেল পীরজাদার সঙ্গে এক দীর্ঘ বৈঠকে মিলিত হন। এসব বৈঠকেই ২৫ মার্চ গণহত্যার জন্য প্রণীত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নীল-নকশাটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ মার্চ ২০১৮/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ