ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

টেম্পার হারাবেন না: পুলিশ কর্মকর্তাকে আদালত

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪২, ২৫ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টেম্পার হারাবেন না: পুলিশ কর্মকর্তাকে আদালত

মামুন খান : মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল।

মামলাটিতে এদিন তৎকালীন গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. আ. আহাদ, গুলশান ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার জসিম উদ্দিন, ঢাকা ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ওবায়দুল হক, বনানী থানার এসআই মাহাবুব আলম ও এএসআই মো. বিল্লাল ভুইয়া সাক্ষ্য দেন।

এদিন এই পাঁচ সাক্ষীর মধ্যে প্রথমে সাক্ষ্য দেন তৎকালীন গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আ. আহাদ।

তিনি জবানবন্দিতে বলেন, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে হলি আর্টিজানের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারি। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে সেখানে যায়। আমার সাথে গুলশান জোনের ডিসে মোস্তাকও যান। সেখানে অনেক পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পাই। আমাকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে ঘটনা জানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ৫-৭ মিনিটের মধ্যে সমস্ত চেকপোস্ট বন্ধ করে দেই যাতে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে না পারে। এ সময়ের মধ্যে গুলশান জোনের ডিসি মোস্তাক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হামলা সম্পর্কে অবহিত করেন। এরপর রেস্টুরেন্টের বাইরের গেটে মহানগর পুলিশ কমিশনার সেখানে গিয়ে ব্রিফ করেন। ব্রিফ করার মধ্যে সন্ত্রাসীরা ভিতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোঁড়ে। গ্রেনেডে আমিসহ ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন  মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে পড়ি। সেখানে আরো ৩০-৩২ জন পুলিশ আহত হন। আমি আহত হই। ১০-১২ টা স্প্রিন্টারের আঘাত আমার শরীরে লাগে। আমার শরীর থেকে অঝোরে রক্ত ঝরছিল। এরপর অচেতন অবস্থায় আমাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যান্য পুলিশ সদস্যদেরও সেখানে নেওয়া হয়। জ্ঞান ফেরার পর শুনতে পারি সালাউদ্দিন ও রবিউল মারা গেছেন। ২১ দিন ইউনাইটেড এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা শেষে পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকার আমাকে সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডে পাঠান।

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ তাকে জেরা করেন। জেরার ফারুক আহমেদ বলেন, আপনি যে ১৬১ দিয়েছেন সেখানে ডিসি মোস্তাকের নাম উল্লেখ করেননি। জবাবে আ. আহাদ বলেন, আমি সেখানে ডিসি গুলশান উল্লেক করেছি। তখন ফারুক আহম্মেদ বলেন, আপনি তো নাম বলেননি। তখন আ. আহাদ বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করেছি। আর তিনি তখন ওই খানে কর্মরত ছিলেন। এ নিয়ে আদালতে একটু উচ্চবাচ্য করেন আ. আহাদ।

এরপর জেরার একপর্যায়ে ফারুক আহম্মেদ বলেন, ১৬১ এ আপনি যে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিতে গেছেন সে কথা উল্লেখ করেননি।

জবাবে আ. আহাদ বলেন, আমি ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর ১৬১ দিয়েছি। তখন আমি থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নেইনি। আমি ২০১৯ সালে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিয়েছি। আমি যে চিকিৎসা নিয়েছি আপনার তা বিশ্বাস হয় না। আমার কি অবস্থা হয়েছিল আপনি জানেন। আমার অবস্থা মারাত্মক ছিল। আমাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল। আপনি আমাকে নিয়ে তামাশা করছেন, ক্রিটিসাইজ করছেন। তখন ফারুক আহম্মেদ বলেন, আমরা কেউ কারো শত্রু না। আমার প্রশ্ন আমার মিথ্যা মনে হলে আপনি না বলে দিতে পারেন।

তখন বিচারক ফারুক আহমেদকে মেরিট অনুযায়ী জেরার করার আহবান জানান। আর আ. আহাদকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, এটা কোর্ট , এখানে অবান্তক প্রশ্ন আসতে পারে। টেমপার হারাবেন না।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জুন ২০১৯/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়