ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

১০ মাসে ১৪৫১ ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৪, ২ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
১০ মাসে ১৪৫১ ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জানিয়েছেন, গত ১০ মাসে (জুলাই ২০১৮ থেকে ২৮ এপ্রিল ২০১৯) মোবাইল কোর্ট, সার্ভিল্যান্স টিমের মাধ্যমে ১ হাজার ৪৫১টি ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

অভিযানে ৮৫৬ টি মামলা করা হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা, বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ২৯ জনের । এ ছাড়া ১৩টি কারখানা সীলগালা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই কর্তৃক গৃহীত বিশেষ কার্যক্রম সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএসটিআই এর প্রধান কাজ হচ্ছে প্রসেস ফুড এবং শিল্পজাত পণ্যের মান প্রণয়ন, পরীক্ষণ ও মানসনদ প্রদান। এর পাশাপাশি ক্রেতা ভোক্তার বৃহত্তর স্বার্থে এ প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে পণ্য ও সেবার গুণগতমান বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করে আসছে। বিএসটিআই প্রতি বছর রমজান উপলক্ষে ভেজালবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এবারো রমজান মাসে জনসাধারণ যাতে মানসম্মত খাদ্য ও পানীয় পেতে পারে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অভিযানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

আকস্মিকভাবে পরিচালিত অভিযানগুলোতে বিশেষ করে রোজাদারগণ সচরাচর যেসকল খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে থাকেন, যেমন- মুড়ি, খেজুর, আম, সফট ড্রিংক পাউডার, কার্বোনেটেড বেভারেজ, ফ্রুট সিরাপ, ফ্রুট ড্রিংকস, ভোজ্যতেল, সরিষার তেল, ঘি, পাস্তুরিত দুধ, নুডুলস, ইনস্ট্যান্ট নুডুলস, লাচ্ছা সেমাই, সেমাই, পানি, ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট এবং ইফতার সামগ্রীর উপর বিশেষভাবে নজর রাখা হবে বলে জানান নূরুল মজিদ।

তিনি জানান, রমজান মাসে ভেজালমুক্ত পণ্য সরবরাহ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ২ মাসে ইফতার ও সেহরির সঙ্গে সম্পৃক্ত ২৭ ধরনের খাদ্য পণ্য সার্ভিল্যান্স টিমের মাধ্যমে খোলাবাজার থেকে সংগ্রহপূর্বক পরীক্ষা করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘২০১৯ সালে ৪ মাসে বর্ণিত সার্ভিল্যান্স টিম পরিচালনার সংখ্যা ছিল ৯৪ টি, কারখানার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়ে ৭১টি, নোংড়া, নন-ফুড গ্রেড জার জব্দ বা ধ্বংস করা হয়েছে ৬৪ হাজার দুইশোটি। এ ছাড়া ৩৮টি অবৈধ কারখানার উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে।’

মৌসুমী ফলমূলে ফরমালিনের ব্যবহার প্রতিরোধের উদ্যোগ হিসেবে বিএসটিআই এর আওতাভূক্ত না হওয়া সত্ত্বেও হাইকোর্টের নির্দেশে এবং জনস্বার্থ বিবেচনা করে বিএসটিআই ফলমূলে ফরমালিনের পরীক্ষা করে থাকে। চলতি অর্থবছরে  বিভিন্ন ধরণের ২১০টি নমুনা বাজার থেকে ক্রয় করে ফরমালিনের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়েছে।  কোনটিতে ফরমালিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বিএসটিআই সারা বছর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এ ছাড়া ওজনে কারচুপিরোধেও বিএসটিআই আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।

পাশাপাশি বিএসটিআই এর প্রধান কার্যালয়ে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে পরিচালিত কর্মকাণ্ডের সমন্বয় সাধন করা হবে। এ ছাড়া ০১৯৬৭৬১৩৬৭৪, ০১৯১৫৪৭৯৫৫৩ নম্বরে ফোন করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।

বিএসটিআই ল্যাবরেটরিতে সম্প্রতি কিছু পরীক্ষণের ফলাফলও জানানো হয় প্রেস ব্রিফিংয়ে।

জানানো হয়, গত দুই মাসে ইফতার ও সেহরির জন্য ব্যবহৃত ২৭ ধরনের খাদ্যপণ্যের ৪০৬টি নমুনা সার্ভিল্যান্স টিমের মাধ্যমে বাজার থেকে সংগ্রহ করে বিএসটিআই ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। ৪০৬টি নমুনার মধ্যে ৩১৩টির ফল পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৫২টি নিম্নমানের পণ্য। এর মধ্যে দেশের নামিদামী ব্র্যান্ডও রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

আগামীতে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ মে ২০১৯/নাসির/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়