ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

২ পাইলটের ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ উদ্ধার

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ২ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২ পাইলটের ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : যশোরে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত দুই পাইলটের ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। একইসাথে বিধ্বস্ত বিমানটির ৩৫ শতাংশের মতো উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানিয়েছেন যশোর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপপরিচালক পরিমল কুণ্ডু। এদিন সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান শুরু হয়।

রোববার রাতে যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ে বিধ্বস্ত হয় বিমান বাহিনীর এই প্রশিক্ষণ বিমানটি। দুর্ঘটনায় বিমানের দুই পাইলটই নিহত হন।

নিহত দুই পাইলট হলেন- স্কোয়াড্রন লিডার সিরাজুল ইসলাম ও স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত কবির পলাশ। পলাশ জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের সফিউদ্দিনের ছেলে এবং সিরাজুলের বাড়ি রাজবাড়ী জেলায়।

সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলের পাশেই ব্রিফিং করেন যশোর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপপরিচালক পরিমল কুণ্ডু। তিনি জানান, রোববার রাত ও সোমবার সকাল থেকে উদ্ধার অভিযানে এখন পর্যন্ত বিধ্বস্ত বিমানটির ৩৫ শতাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে বিমানের ইঞ্জিন এখনো উদ্ধার করা যায়নি। আর নিহত দুই পাইলটের মাথা, হাতসহ শরীরের ছিন্নভিন্ন বিভিন্ন অংশ উদ্ধার হয়েছে। সামগ্রিক এ উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার মাহাদি।
 


এর আগে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম জানিয়েছেন, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমান দুর্ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

যশোর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আলমগীর পাঠান জানান, রোববার রাত ৯টা ২০ মিনিটে যশোরের মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি থেকে প্রশিক্ষণ বিমান কে৮ডব্লিউ উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ পর সেটি যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ের মধ্যে আছড়ে পড়ে যায়। বিমানটিতে দুইজন পাইলট ছিলেন।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল বাশার মিয়া জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ের মধ্যে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান পড়ে যাওয়ার খবর পান তারা। এ খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়।

বিমান বাহিনী সূত্র জানায়, যশোরের মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি থেকে প্রশিক্ষণ বিমানটি নিয়ে উড়ে যান স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত ও স্কোয়াড্রন লিডার সিরাজ। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই তারা টাওয়ার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এরপরই বিমানটি বিধ্বস্তের খবর পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে বিমান বাহিনীর সদস্যরাসহ ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে রাতের আঁধার ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ডুবে যাওয়া বিমানের অবস্থান চিহ্নিত করতে বিলম্ব হয়। উদ্ধার অভিযানের শুরুতেই পানিতে ভাসতে থাকা বিধ্বস্ত বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়। পরে খুলনা থেকে এসে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। রাত প্রায় ৪টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এরপর অভিযান স্থগিত করা হয়। সোমবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ফের এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

রোববার রাতে বিকট শব্দে বিমান বুকভরা বাওড়ের মধ্যে পড়ে যাওয়ায় রাত হলেও এলাকাবাসী সেখানে ভিড় করেন। বাওড়ের পারজুড়ে এলাকাবাসী অবস্থান নেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও এলাকায় অবস্থান নেন।




রাইজিংবিডি/যশোর/২ জুলাই ২০১৮/বি এম ফারুক/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়