ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

২২৯৫ কোটি টাকার ১২টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৭, ১৯ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২২৯৫ কোটি টাকার ১২টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

বিশেষ প্রতিবদক : সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ২২৯৫ কোটি টাকার ১২টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।

বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

এসব ক্রয় প্রস্তাবের মধ্যে দেশের খাদ্য মজুদ বাড়াতে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ১৭৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুটি ক্রয় প্রস্তাবে ব্যয় হবে ৯৭৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সিলেট-সুনামগঞ্জ এলাকায় বন্যার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও চলতি বছর আরো বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার দেশের খাদ্য মজুদ বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সরকারি উদ্যোগে কয়েকটি দেশ থেকে চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত ১২ জুলাই পর্যন্ত দৈনিক খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুসারে ১ কোটি ৬২ লাখ টন চাল ও ১ কোটি ৬৭ লাখ টন গমসহ মোট ৩ কোটি ২৯ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ ছিল। এ অবস্থায় সরকার ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে প্যাকেজ-০৪ এর আওতায় ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব জানান, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি খাদ্য বিভাগের ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। প্রতি টন চালের দাম পড়বে ৪৩০ ডলার। সে হিসেবে চাল আমদানির জন্য মোট ব্যয় হবে ১৭৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। মেসার্স ফনিক্স গ্লোবাল ডিএমসিসি নামের একটি প্রতিষ্ঠান এ চাল সরবরাহ করবে।

তিনি আরো জানান, বৈঠকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃক ‘২০টি ড্রেজারসহ সহায়ক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামাদি সংগ্রহ’শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দুটি অলাদা ক্রয় প্রস্তাবে পাঁচটি ২০ ইঞ্চি এবং পাঁচটি ১৮ ইঞ্চি কাটার সাকশন ড্রেজার ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ক্রেনবোটসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সংগ্রহের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৯৭৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড এসব সরঞ্জাম সরবরাহ করবে।

বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের পাঁচটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ভারতের খোলা বাজার থেকে পাওয়ার ট্রেডিং করপোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের মাধ্যমে ক্রয়কৃত ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানিতে প্রতি কিলোওয়াটের দাম ৬ দশমিক ০৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মোস্তফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে ২৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ’শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২৬ হাজার ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতের তসিবা ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেড  ট্রান্সফরমারগুলো সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৮২ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

বৈঠকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ’শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কন্ডাকটরসহ বিভিন্ন পণ্য ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মোট পাঁচটি লটে এসব পণ্য সরবরাহ করা হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৩৪৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া একই প্রকল্পে ২৩ হাজার ২১০টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব। এতে ব্যয় হবে ১৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। মেসার্স টিএস ট্রান্সফরমার লিমিটেড এসব পণ্য সরবরাহ করবে।

তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একই প্রকল্পে দুটি লটে মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৪২০টি এসপিসি পোল ক্রয়ের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। দুটি লটে বাংলাদেশের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেসকন এবং শেলটেক এসব পোল সরবরাহ করবে। এতে ব্যয হবে ২২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

বৈঠকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ চট্টগ্রাম-সিলেট বিভাগীয় কার্যক্রম-২’শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পৃথক দুটি ক্রয় প্রস্তাবের মাধ্যমে  তিনটি করে সাব-স্টেশন নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৮ কোটি ২ লাখ টাকা।

এ ছাড়াও বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুর জেলার গ্রামীণ যোগাযোগ ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার বুড়িরহাট-মহিপরি-কৈলাশগঞ্জ-শংকরদহ-কাকিনা সড়কে তিস্তা নদীর ওপর নির্মানাধীন ৮৫০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজের দুই কোটি ২০ টাকার ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই বিভাগের কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় ধরলা নদীর ওপর ৯৫০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজের ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ জুলাই ২০১৭/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়