ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জমির আগাছাই জীবিকা রহিম আলীর

একে আজাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২৮, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জমির আগাছাই জীবিকা রহিম আলীর

বিক্রির আগে ঘাস ধুয়ে প্রক্রিয়াজাত করছেন রহিম আলী

একে আজাদ, বগুড়া : অন্যের জমির আগাছা দিয়ে জীবিকার পথ খুঁজে পেয়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বাটিরচর গ্রামের যুবক রহিম আলী।

পাঁচ বছর আগে বসতভিটাসহ ফসলি সব জমি চলে গেছে যমুনার গর্ভে । তার বাবা-মা বেঁচে নেই। এখন স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে চাচার বাড়িতে আশ্রিত হিসেবে বাস করেন এই যুবক।

চরাঞ্চলের জমিতে পলির পরিমাণ বেশি থাকায় দূর্বা জাতের ঘাস ফসলি জমির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর এই দূর্বা ঘাসসহ জমির অন্যান্য আগাছা বেচে সংসার খরচের পাশাপাশি তার দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচও জোগাচ্ছেন কঠোর পরিশ্রমী রহিম আলী।

শুক্রবার বিকেলে বাটিরচরে কথা হয় রহিম আলী সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতিদিন চরের বিভিন্ন জায়গা থেকে দূর্বাসহ বিভিন্ন জাতের ঘাস নিড়ানি দিয়ে তোলেন। পরে ঘাস ধুয়ে বিকেলে উপজেলার ঘাসের হাটে নিয়ে বেচে দেন। প্রতি ভাঁড় ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দরে বেচা হয়।

রহিম বলেন, দূর্বা ঘাস গাভির জন্য খুব ভালো গো-খাদ্য। এটা খেলে গাভির দুধ বাড়ে। তাই গরুর মালিকেরা এই ঘাস কিনে থাকেন।

রহিম আলী তার এই পেশাটি সম্পর্কে জানান, কোনো পুঁজি না লাগায় এই কাজ ভালো লাগে তার।  প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি এই কাজ করছেন। বিয়ে করেছেন আট বছর আগে। দুটি ছেলে নিয়ে ছোট সংসার। স্ত্রী সংসারের কাজের পাশাপাশি কাঁথা সেলাই করেন। তাতে মোটামুটিভাবে ভালোই সংসার চলে তার।

সাদামাটা, সীমিত চাহিদার রহিম আলীর স্বপ্নটাও সাদামাটা। ভবিষ্যৎ নিয়ে রহিম আলী বলেন, ‘আমার আর কি স্বপ্ন থাকবে। ঘাস বেচে যা পাই তা দিয়ে সংসার খরচ উঠে যায়। দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। যতদূর পারি ছেলেদের পড়ালেখা করাব, মানুষ করাব...এইতো।’

ওই গ্রামের বৃদ্ধ ইয়াছিন বললেন, ‘রহিমকে ছোট থেকেই দেখছি। ও খুব সহজ-সরল ছেলে। তবে পরিশ্রমী।’

 

 

রাইজিংবিডি/বগুড়া/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/একে আজাদ/টিপু/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়