ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জয়তু মাশরাফি-মুশফিক-তামিম

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জয়তু মাশরাফি-মুশফিক-তামিম

আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অসাধারণ এক অর্জন করেছে বাংলাদেশ। সেখানে শনিবার অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ ক্রিকেটে মাশরাফি বাহিনী বধ করেছে শ্রীলঙ্কার ম্যাথুস বাহিনীকে।  ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হাতুরু সিংহের শিষ্যদের পরাজিত করেছে মুশফিক-তামিম-মিথুনরা। যেখানে মুশফিক অনন্য-অসাধারণ এক ইনিংস খেলে দলকে টেনে নিয়ে গেছেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। খেলেছেন ১৪৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস যা তার এক দিনের ম্যাচে সর্বোচ্চ রান।

এদিন মুশফিককে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মিথুন (৬৩ রান)। আর শেষ দিকে ভাঙ্গা হাতে খেলতে নেমে এক হাতে ব্যাট করে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে গেছেন তামিম ইকবাল। ব্যাটিংয়ের পর ফিল্ডিংয়ে নেমে মাশরাফি-মুস্তাফিজ-মিরাজদের বোলিং তোপে উড়ে যায় ম্যাথুস-থারাঙ্গা-লাকমলরা। ফলে ১২৪ রানে থেমে যায় লঙ্কানদের ইনিংস।   

টসে জিতে বাংলাদেশ দল ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে প্রথম ওভারে লাসিথ মালিঙ্গার শেষ দুই বলে ২ উইকেট (লিটন দাস, সাকিব) হারিয়ে।  এরপর বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং স্তম্ভ তামিম ইকবাল আহত হয়ে মাঠের বাইরে চলে গেলে হোঁচট খায় টাইগাররা। শ্রীলঙ্কান পেসার লাকমলের বাউন্সে পুল করতে গিয়ে কবজিতে ব্যথা পান তামিম। পরে এক্স-রে রিপোর্টে তামিমের বাঁ কবজিতে চিড় ধরা পড়ে। এদিন মালিঙ্গা দীর্ঘ ১৬ মাস পর মাঠে নেমে বোলিংয়ে অসাধারণ সাফল্য দেখান। মাত্র ২৩ বলে মাশরাফিদের মূল্যবান চারটি উইকেট নেন তিনি।

মুশফিকুর রহিম যখন উইকেটে এলেন, বাংলাদেশের তখন ত্রাহি অবস্থা। কিন্তু সে অবস্থা থেকে দারুণভাবে দলকে টেনে নিয়ে যান ২৬১ রান পর্যন্ত। মিথুনকে নিয়ে ১৩১ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন। মিথুন ফেরার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকলেও অন্য প্রান্তে মুশফিক দৃঢ় ও অবিচল থেকে  ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন। মুস্তাফিজুর রহমান নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হন দলের রান তখন ২২৯।

সবাই ভাবছিল এখানেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। কেননা হাতের কবজিতে চিড় ধরায় তামিম আর মাঠে নামবেন না তেমনটিই ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে নামলেন তিনি। ব্যাটিং করলেন এক হাতে! যদিও একটি বল খেলেছেন। কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা, মুশফিককে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন। তামিমের সাহসিকতায় ঝড় তোলেন মুশফিক এবং আউট হওয়ার আগে মাত্র ১৫ বলে করেন ৩২ রান। তাতেই ২৬১ রানের লড়াকু পুঁজি পায় টাইগাররা।

তামিম ইকবাল মাত্র দুই রান করলেও তার সাহসিকতায় পুরো ক্রিকেট বিশ্বের নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। দেশ-বিদেশে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের এ দাপুটে জয়ে মুশফিকের বীরত্ব এবং তামিমের সাহসের বন্দনা করছে ক্রিকেট বিশ্ব। আর মুশফিক-তামিমদের ২৬১ রান তাড়া করতে গিয়ে একের পর এক উইকেট হারায় প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বাংলাদেশ দলের বোলিং তোপে ১২৪ রানেই গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। এককথায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপট দেখিয়ে লঙ্কান সিংহদের কুপোকাৎ করেছে বাংলাদেশের টাইগাররা। লঙ্কানদের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানে জয়। পাশাপাশি এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যবধানেরও জয় এটি।

অধিনায়ক মাশরাফির অনুপ্রেরণা ও অনবদ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি পুরো দলের লড়াকু মনোভাব এশিয়া কাপে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। এজন্য মাশরাফি বাহিনীকে আমাদের অভিনন্দন। সে সঙ্গে আমরা  অভিবাদন জানাই মুশফিক ও তামিমকে। টুর্নামেন্টের পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও টাইগারদের এই লড়াকু মনোভাব ও দৃঢ়তা বজায় থাকবে এমনটিই প্রত্যাশা আমাদের। জয়তু মাশরাফি-মুশফিক-তামিম। জয়তু বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়