ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দেশী খেজুরে ইফতার

জুনাইদ আল হাবিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১২, ২০ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশী খেজুরে ইফতার

জুনাইদ আল হাবিব : গ্রাম-বাংলার মেঠোপথ ধরে হাঁটলে দু’পাশে দেখা মিলতো সারি সারি খেজুর গাছ। শীতে খেজুরের রস আর শীত শেষে গ্রীষ্মে সুস্বাদু খেজুর মিলতো গাছ থেকে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় খেজুর গাছের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে গেছে। এক সময় গ্রামাঞ্চলে মানুষ দেশী খেজুর দিয়েই ইফতার করতো। যা এখনকার প্রজন্মের কাছে শুধু গল্পই মনে হবে। বাজারে হরেক রকমের খেজুর পাওয়া গেলেও এখন আর ‘দেশী খেজুর’ চোখেই পড়ে না। ফলে এই প্রজন্ম ভুলে যাচ্ছে দেশী খেজুরের কথা।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে নানা স্বাদের বিদেশী খেজুর আমদানির কারণে দেশী খেজুরের চাহিদা কমে যাওয়া অন্যতম একটি কারণ। তবে বিদেশ থেকে আসা খেজুরগুলো দীর্ঘ সময় ধরে টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়। যা আমাদের স্বাস্থ্যে নানান সংকটের সৃষ্টি করছে। তবে, যদি আমদানি করা খেজুর সঠিক প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করা হয়, তবে এ আশঙ্কা থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। খেজুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভালো।   

যদিও এখনও শীতকালে গ্রামে গাছিদের খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে দেখা যায়। দেশী খেজুরের চাহিদা কমলেও রসের চাহিদা কমে যায়নি। খেজুরের রস কাঁচা খাওয়া থেকে শুরু করে গুড় তৈরি, পিঠা, সেমাইসহ নানা কাজে ব্যবহার করা যায়। বিদেশী খেজুরের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশী খেজুরের চাহিদা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। দেশী খেজুরের উৎপাদন না বাড়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, এ খেজুর উৎপাদনে এবং বাজারজাতকরণে মানুষের আগ্রহের অভাব। ফলে দেশী খেজুর দিন দিন জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। 



লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মেঘনাতীরের গ্রাম চর মার্টিন। একসময় এখানকার মানুষ প্রচুর খেজুর গাছ রোপণ করতো। রসের পাশাপাশি খেজুরও খেত মানুষ। রমজানে দেশী খেজুর দিয়ে ইফতারও করতো। কিন্তু এখন গাছে ঠিকই খেজুর পড়ে আছে, মানুষ বাজার থেকে বিদেশী খেজুর কিনে এনে ইফতার করছে। এর কারণ সম্পর্কে গ্রামবাসী বেলাল হোসেন বলেন, ‘এত ঝামেলা আমরা করতে পারি না। গাছ থেকে খেজুর পারা এবং তা পানিতে ভিজিয়ে রাখা। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। গাছের খেজুর গাছেই থাকুক। পাকলে গাছ থেকে পাখিরা খাবে। গাছ থেকে পড়লে শিশু-কিশোর কুড়িয়ে  খাবে। ইফতারের জন্য বাজার থেকে কিনে আনা খেজুরগুলোই দারুণ। মুখ ভরে খাওয়া যায়।’

বিদেশী খেজুরের মতো দেশী খেজুরেরও পুষ্টিগুণ রয়েছে। মানুষের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য উপাদান এখান থেকেই যোগান দেয়া সম্ভব। এজন্য দেশী খেজুর টিকিয়ে রাখা জরুরি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মে ২০১৯/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়