ধান কাটছেন এমপি, বিস্মিত কৃষক (ভিডিও)
দাওয়াল (ধান কাটা শ্রমিক) সংকটে কাঁচি হাতে নিজেই মাঠে নেমেছেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। পাশাপাশি তিনি নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন কাঁচি হাতে কৃষকের সঙ্গে মাঠে যেতে।
দেশের হাওরাঞ্চলের বাতাসে এখন পাকা ধানের ঘ্রাণ। যত দূরে দৃষ্টি যায় দিগন্তের নীল গিয়ে মিশেছে পাকা ধানের সোনালি রঙে। দেশের ৭টি হাওরাঞ্চলে এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম। ফলনও এবার ভালো। তবুও মন ভালো নেই কৃষকের। করোনার এই কালে দাওয়াল না-পাওয়ায় ধান কাটা এবং মাড়াই নিয়ে কৃষকের কপালে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
এমন সংকটে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি ৩টি উপজেলার ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদেরও ধান কাটার নির্দেশ দিয়ে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। নির্দেশ দিয়েই তিনি দায়িত্ব শেষ করেননি। নেতাকর্মীদের মধ্যে ধান কাটার কাঁচি বিতরণ করেছেন। এছাড়া সরকারিভাবে ধান কাটার মেশিন আনার ব্যবস্থাও করেছেন তিনি। ফলে হাওরের চাষীরা ধান কাটার ক্ষেত্রে মনোবল ফিরে পেয়েছে।
এরই মধ্যে এমপি তৌফিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে ধান কাটতে শুরু করেছেন। স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে বিষয়টি আনন্দ এবং বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। যদিও আগে থেকেই সাংসদ তৌফিক জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ এবং ভালোবাসা দিয়ে স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি ‘ভাটির শার্দুল’খ্যাত রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট মো. আবদুল হামিদের বড় ছেলে।
অষ্টগ্রাম উপজেলার কৃষক ইদ্রিস আলি বলেন, হেইল্যা (তিনি) দুই একর জমিত ধান কাটছে। আমরা তো স্বপ্নেও ভাবছি না, হেইল্যার মতো মানুষ আমরার ধান কাটবো। দেশে কিতা জানি আইসে- করোনাভাইরাস! এইড্যার লাইগ্যা কোনো কামলাও পাই না। কেও ঘরের থন বাইর হয় না। কিন্তু এতো বড় বাপের বেডা, নিজেও এমপি, তবুও আমরার দুক্কে খ্যাতে গিয়া ধান কাটছে। বিপদ-আপদে তারে সবসময় আমরা কাছে পাই। দোয়া করি আল্লাহ হেইল্যার বালা করুক।’
রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক রাইজিংবিডিকে বলেন, বিশ্ব করোনা আতঙ্কে ভুগছে। আমাদের কৃষিনির্ভর দেশের খাদ্য চাহিদায় হাওর বড় ভূমিকা পালন করে। এই সময়ে যদি কৃষক ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বন্যার পানিতে ফসল হানি হয় তাহলে দেশে খাদ্যাভাব দেখা দেবে। বিষয়টি চিন্তা করে ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈশাখ মাসজুড়ে আমরা ধান কাটা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।
জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং নিকলী উপজেলায় ১ লাখ ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অন্যান্য বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ সময় হাওরে ধান কাটার শ্রমিক এলেও এ বছর করোনার কারণে তারা আসেনি। ফলে এলাকায় ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে।
কিশোরগঞ্জ/রুমন চক্রবর্তী/তারা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন