ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নতুন চাকরিতে যা করবেন না

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নতুন চাকরিতে যা করবেন না

প্রতীকী ছবি

নতুন চাকরি পাওয়ার জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা। এখন হয়তো আপনি ভাবছেন কঠিন কাজ সেরে গেছে। আসলে তা না। অফিসে প্রথম কয়েকটি সপ্তাহ আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ের আচরণ ঠিক করে দেবে নতুন চাকরিটি আপনার জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপের। শুধু আপনার কর্মদক্ষতাই নয়, নতুন কাজের পরিবেশে আপনি কেমন আচরণ করেন, তাও এ সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। নতুন চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার পর আপনাকে তাই নিচের কাজগুলো সতর্কতার সাথে পরিহার করতে হবে।

অফিস কালচার উপেক্ষা করা: প্রতিটি অফিসে নিজস্ব কিছু কালচার বা সংস্কৃতি থাকে। অর্থাৎ কিভাবে কাজ করতে হবে, সহকর্মী ও বসের সাথে কিভাবে কথা বলবেন, কেমন পোশাক পড়তে হবে, কাজের ধরন এসব। এগুলোর সাথে বেশিরভাগ নতুন চাকরিজীবীই প্রথম দিকে খাপ খাওয়াতে পারেন না। এটি প্রাথমিকভাবে বড় একটি সমস্যা। একটি কোম্পানির কালচার প্রথমে সহজবোধ্য নাও হতে পারে। আর তাই সবকিছু পর্যবেক্ষণ করুন। প্রয়োজনে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে অফিসে যান। বের হন দেরি করে। অতিরিক্ত সময়ে দেখুন-কিভাবে অন্য সহকর্মীরা একে অন্যের সাথে আচরণ করেন। কখন, কোথায় গিয়ে সবাই চা খান, লাঞ্চ করেন। আর কিভাবেই দিনের কাজ শেষ করেন তারা।

উদ্ধত ভাব দেখানো: নতুন অফিসে গিয়ে অনেকের মধ্যে এক ধরনের উদ্ধতভাব কাজ করে। তারা ভাবেন চাকরিটা যেহেতু পেয়েই গেছেন, এখন আর চিন্তা নেই। তাকে নিয়ে নতুন সহকর্মীরা কে কি ভাবলো তাতে কিছু যায় আসে না। বিষয়টি ঠিক নয়। যে সহকর্মীদের সাথে আপনার অনেক দিন কাটাতে হবে, তাদের সাথে আপনার প্রথম থেকেই ভদ্রোচিত আচরণ করা উচিত। আর তাই সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলুন। সব কিছু দেখেশুনে শিখুন।

আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব: নতুন হিসেবে প্রথম দিকে অফিসে এক ধরনের আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব দেখা যেতে পারে আপনার মধ্যে। সময় নিয়ে কোম্পানির পরিবেশ, কাজের ধরন বুঝতে চেষ্টা করুন। উদ্ধতপনার উল্টোদিকেই থাকে ভয়। হয়তো নতুন পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়াতে না পারার ভয়ে উদ্ধত আচরণ করছেন আপনি। গুটিয়ে রাখছেন নিজেকে। এতে অফিসে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আপনার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে। সাবলীল ভাবে অন্য সহকর্মীদের সাথে মিশুন।

কাজের ধরন বুঝতে না পারা: অফিস আপনার কাছ থেকে কি কাজ আশা করছে, তা যদি না ই বুঝতে পারেন, তাহলে কাজ করাই কঠিন হয়ে পড়বে। দায়িত্বগুলো কেমন হবে, কোন কাজগুলো আগে করতে হবে এসব কিছু জেনে নিন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে।

ভুল স্বীকার না করা: সবাই ভুল করে। এক্ষেত্রে নতুন চাকরিতে যারা নিয়োগ পায়, তাদের ভুলের পরিমাণ আরো বেশি থাকে। তবে নতুন চাকরিজীবীদের অনেকেই নিজের ভুল স্বীকার করতে চান না। এটা ভাববেন না যে আপনাকে কেউ দেখছে না। বরং নতুনদের অন্য সহকর্মীরা খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন। ভুল ধরার চেষ্টা করেন বেশি। তাই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হাসিমুখে ও বিনয়ের সাথে নিজের ভুল ত্রুটিগুলো স্বীকার করুন। তারপর সেগুলো শুধরে নিয়ে এগিয়ে চলুন।

মুন্সিয়ানা দেখানো: নতুন চাকরিজীবীদের জন্য আরেকটি মারাত্মক ভুল হলো মুন্সিয়ানা দেখানো। নিজেকে প্রমাণের জন্য মরিয়া হয়ে আপনি হয়তো কোনো কাজের ধরন নতুনভাবে করার ব্যাপারে সিনিয়রদের পরামর্শ দিয়ে বসলেন। এটি ভালো ফল আনবে না আপনার জন্য। কথা বলার আগে অফিসের প্রচলিত নিয়ম কানুন ও কাজের প্রকৃতি সব ভালো করে জেনে নিন। এরপর আপনি যুক্তির মাধ্যমে নিজের মত প্রকাশ করতে পারবেন।

নিজের কাজের মূল্যায়ন না করা: নতুন যারা কাজ করেন, তাদের জন্য অফিসে প্রথম ছয় মাস মূলত অগ্নি পরীক্ষা দেয়ার সময়। এ সময়ে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য সব কিছু করতে হবে আপনাকে। তবে নিজের কাজের মূল্যায়ন করতে ছয় মাস বা এক বছর যদি আপনি অপেক্ষা করেন, তাহলে ভুল করবেন। এ সময়ে আপনার পাশাপাশি, আপনার টিম এমনকি কোম্পানিও পিছিয়ে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে আপনার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এক মাস পরই কাজের মূল্যায়নের জন্য অনুরোধ করতে পারেন। কোন কাজগুলো ভালো করেছেন, কোনগুলো ঠিক মতো করতে পারেননি এবং কিভাবে আপনার ভুলগুলো শুধরাতে পারেন সেসব বিষয়ে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিন।

আপনার দোষকে গুণে রূপান্তর করুন: নতুন চাকরি শুরু করা কখনোই সহজ কাজ না। যদি মনে হয় উপরের দোষগুলোর একটি বা কয়েকটি আপনার মাধ্যমে সংঘটিত হচ্ছে, তাহলে সতর্ক হোন এখনই। আপনার সম্ভাবনাময়ী মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগান। মনে রাখতে হবে নতুন অফিসে কেউ আপনাকে চেনে না। তাই প্রথম দিনেই নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে ও আপনার উপস্থিতি জোরালো করতে সচেষ্ট হোন।

পড়ুন :

 

ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়