ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

এবার সারোগেট মুরগি!

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এবার সারোগেট মুরগি!

বিজ্ঞান-প্রযু্ক্তি ডেস্ক : সারোগেট মা- বিষয়টির সঙ্গে আমরা কম-বেশি অনেকেই পরিচিত। যেটাকে বলা হয়, অন্যের গর্ভে নিজের সন্তান জন্মদান।

সারোগেট বিষয়টি এতদিন মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বিজ্ঞানীরা এবার সারোগেট সুবিধার মুরগি তৈরি করেছেন! বিট্রিশ বিজ্ঞানীরা মুরগি জেনেটিক্যালি সংশোধন করেছেন, ফলে এই মুরগি বিভিন্ন প্রজাতির ডিম পাড়তে পারবে।

এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে, ভবিষ্যতে বার্ড ফ্লুর মতো বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ থেকে বিরল মুরগির জাত সংরক্ষণ করা। অথবা অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য যেমন চমৎকার মাংস মান।

বোস্টনে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান সম্মেলনে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথা জানান।

তারা জিন এডিটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুরগির ডিডিএক্স৪ নামক জিন সম্পাদন করেছেন, যা পাখির উর্বরতার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

এই সারোগেট মুরগি ইউরোপে উৎপাদিত প্রথম জিন-এডিটেড পাখি এবং বিশ্বে এই প্রথমবারের মতো মুরগির জিন এডিট করে বিরল প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য রুপান্তরিত হয়েছে।

জেনেটিক্যালি পরিবর্তন করা মুরগি নিজস্ব ডিম পাড়তে পারে না, তবে সারোগেট মা হিসেবে কাজ করতে পারবে।

অবিশ্বাস্যভাবে, এসব মুরগি তাদের শরীরে স্থাপিত স্টেম সেল থেকে ডিম পাড়তে সক্ষম হয়েছে, যা বিরল প্রজাতির ভ্রুণ থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিজ্ঞানী ডা. গ্রিউ বলেন, ‘এ ধরনের মুরগি তৈরি হচ্ছে প্রথম পদক্ষেপ, যা পোল্ট্রির বিরল জাতের মুরগি সংরক্ষণ ও রক্ষায় ভবিষ্যতে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে অর্থনৈতিক ও জলবায়ু চাপ থেকে পোল্ট্রি শিল্পকে রক্ষা করবে।’

‘আমরা প্রমাণ করতে চেয়েছি যে, জিন এডিটিং টেকনোলজি ব্যবহার করে একটি গুরুত্বপূর্ণ জিন এডিট করে শুক্রাণু ও মুরগির ডিমের উন্নয়নের ক্ষেত্র।’

‘আমরা এমন মুরগি উৎপাদন করেছি, যার নিজস্ব কোনো ডিম নেই।’

‘এজন্য আমরা বাজা মুরগি ব্যবহার করেছি কারণ আমাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি স্টেম সেলে স্থাপন করার পর তা মুরগির মধ্যে শুক্রাণু অথবা ডিম তৈরি করে। তাই যেকোনো প্রজাতির মুরগির স্টেম সেল সংগ্রহ করে তা বাজা মুরগির মধ্যে স্থাপন করে বাজা মুরগি ওই প্রজাতির মুরগির ডিম ও বাচ্চা দিতে সক্ষম হবে।’

জেনেটিকালি উন্নয়ন করা মুরগি বিভিন্ন প্রজাতির থেকে ডিম পাড়তে পারে। এই প্রকল্প বিজ্ঞানীদের সাহায্য করেছে বিরল এবং বহিরাগত পাখি সংরক্ষণ করতে একটি ‘হিমায়িত পক্ষিশালা’ গঠনে।

ডা. গ্রিউ বলেন, ‘এটা অনেকটা বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ রক্ষায় বীজ ব্যাংকের মতো। বীজ ব্যাংকে যেমন উদ্ভিদের বীজ সংরক্ষণ করে রাখা হয় তেমনি পোল্ট্রির বিভিন্ন প্রজাতির স্টেম সেল হিমায়িত পক্ষিশালায় রাখা হবে, যা মুরগি দিয়ে শুরু। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির মুরগির আদিম স্টেম সেল সংরক্ষণ করা হবে, ফলে পুরুষ অথবা নারী মুরগির অসময়ে ডিম ও বাচ্চা উদপাদন করা যাবে।’

এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোজলিন ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী দলটি ২৫টি বিভিন্ন প্রজাতি থেকে ৫০০ এর বেশি নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এসব কোষ হিমাঙ্কের নিচে ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কয়েক দশক করে টেকসই থাকবে।

ডা. ড্রিউ বলেন, আমরা হাঁস এবং কোয়েলের মতো অন্যান্য প্রজাতিও এভাবে সংরক্ষণ করতে পারবো বলে আশা করছি।

তথ্যসূত্র: মিরর

 




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়