ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ত্রিপুরায় ক্যাব ইস্যুতে চাঁদার জুলুম

আগরতলা থেকে অভিজিৎ ঘোষ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৫২, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ত্রিপুরায় ক্যাব ইস্যুতে চাঁদার জুলুম

ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় ক্যাব প্রত্যাহারের ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার নামে পাহাড়ি জনপদ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ ওঠেছে।

জানা গেছে, নতুন সংগঠন জেএমএ-সিএবি'র (জয়েন্ট মুভমেন্ট অ্যাগেইনস্ট সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল) কর্মী-সমর্থক আন্দোলন ও মামলা করার নামে চাঁদা আদায় করছে।

ক্যাব ইস্যুতে এই সংগঠনের জন্ম। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই জনজাতির কাছে এই সংগঠন আতঙ্ক হয়ে ধরা দিয়েছে। কারণ ওই সংগঠনের বিভিন্ন জেলার কর্মীরা সহজ-সরল পাহাড়ি আদিবাসীদের থেকে জঙ্গিদের কায়দায় চাঁদা আদায় করছে। সংগঠনের এসব কর্মকাণ্ডে অতিষ্ট হয়ে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে আগে থেকে আঁচ করতে পেরে সংগঠনের সভাপতি প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন সম্প্রতি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে জানান, তিনি নিজের টাকায় ক্যাব প্রত্যাহারের ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। কেউ যেন সংগঠনের নামে চাঁদা আদায় না করেন সেই বিষয়ে নিজের অনুগামীদের সাবধান করেছিলেন।

কিন্তু কে শোনে কার কথা। শেষ পর্যন্ত প্রদ্যুতের আশঙ্কা সত্যি হয়েছে।

পাহাড়ী আদিবাসীদের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ধর্মনগর থেকে সাব্রুম সব জায়গাতেই জেএমএ-সিএবি'র কর্মী সমর্থক রয়েছেন। তাদের একাংশ আন্দোলনের নামে  চাঁদা আদায় করছে। সংগঠনের উগ্র কিছু সমর্থক গ্রাম-পাহাড়ে গিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনকে বুঝানোর চেষ্টা করছে, ‘এই লড়াই তাদের স্বাধীনতার লড়াই, জাত্যাভিমানের লড়াই,রাজ্য বাঁচানোর লড়াই।’

আর এই ভাবাবেগের ভাষা প্রয়োগ করেই কর্মীরা আদিবাসীদের থেকে কষ্টার্জিত টাকা আদায় করছে। অবশ্য চাঁদা দেওয়ার পর এই হতদরিদ্র আদিবাসীদের ভুগতে হয় আর্থিক সংকটে। কেউ না দিতে চাইলে রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে কর্মীরা।

যাদের জন্য এই লড়াই তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের নামে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করছে সংগঠনের কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ।

গোটা ঘটনার অন্তরালে কী নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (এনএলএফটি) বিশ্বমোহন গোষ্ঠীর হাত রয়েছে? উঠছে এই প্রশ্নও।

কারণ ক্যাব ইস্যুতে এনএলএফটির সাধারণ সম্পাদক উমথাই দেববর্মা আদিবাসীদের এনএলএফটিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিল, রাজ্য ও জাতিকে বাঁচাতে আদিবাসীদের অস্ত্র হাতে নেওয়া প্রয়োজন।

গোটা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। কেননা এই চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্য আপাত দৃষ্টিতে ‘আন্দোলন ’ হলেও তার পেছনে কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না তা খাতিয়ে দেখছে পুলিশ-গোয়েন্দা।

পারিপার্শ্বিক এই সমস্ত ঘটনা থেকে গোয়েন্দা আশঙ্কা করছে আদিবাসীদের থেকে চাঁদা আদায়ের পেছনে বড় কোনো  খারাপ উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

 

ত্রিপুরা/ অভিজিৎ/জেনিস

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়