যতদূর চোখ যায় শুধু পেঁয়াজের সবুজ ক্ষেত
বগুড়া সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
যমুনার পানি শুকিয়ে গেছে। জেগে উঠেছে নতুন নতুন চর। সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটের চরাঞ্চলে যতদূর চোখ যায় শুধু পেঁয়াজের সবুজ ক্ষেত।
বগুড়ার এই তিন উপজেলায় এসময়ে চিনা বাদাম, ভূট্টা, মসুর, খেসারির চাষ হতো। এসব চরজুড়ে এখন পেঁয়াজ আর পেঁয়াজ।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং রোগবালাই না থাকায় এবার পেঁয়াজের ভাল ফলনের আশা করছেন বগুড়ার চরাঞ্চলের কৃষক ও কৃষিবিদরা। অবশ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কাও করছেন তারা।
চরাঞ্চলের কৃষকরা তাহেরপুরী, ফরিদপুরী ও বারি-১ জাতের পেঁয়াজের চাষ করেছেন।
জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, এবার বগুড়ার তিনটি উপজেলায় মোট ৩ হাজার ৮শ’হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে । এর মধ্যে এই তিন উপজেলার ২৪২০ হেক্টর জমিই চরাঞ্চলের।
সোনাতলা উপজেলার চালাকান্দির চরের পেঁয়াজ চাষি নজরুল ইসলাম জানান, গত বছর শিলা বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সে সময় তারা ৪০ টাকা কেজি দরে ব্যাপারিদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করার ক’দিন পরই বাজারে সেই পেঁয়াজ ১শ থেকে ২শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবার এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে আছে। শেষাবধি এই অবস্থা থাকলে প্রতি বিঘাতে তারা ৪০ মনের বেশি পেঁয়াজের ফলন আশা করছেন।
চাষি নজরুল জানান, এবার প্রতি বিঘাতে ১৯ হাজার টাকা এবং কেজিতে ১৪ টাকা উৎপাদন খরচ হয়েছে। যদি তারা ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারলেই তারা খুশি।
সারিয়াকান্দি উপজেলার চর ঘাগুয়ার কুদ্দুস শেখ জানান , গত বছরের তুলনায় এবার বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হেয়েছে। মাঠে এখন তাহেরপুরি ও বারি -১ পেঁয়াজ আছে। চরের ৬ ইঞ্চি বালুর নিচে বিশাল পলির আস্তরণ। চরের উপর থেকে ৬ ইঞ্চি সরিয়ে পেঁয়াজ চাষের উপযোগী করা সম্ভব হচ্ছে। গত বছর শিলা বৃষ্টিতে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল।
তিনি ১০ বিঘাতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। বিঘাতে তাদের উৎপাদন খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। এবার বিঘাতে ৪৫ মনের বেশি পেঁয়াজ পাওয়ার আশা করছেন। বিঘাতে উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৯ হাজার টাকা। প্রতিকেজিতে উৎপাদন খরচ হযেছে ১৩ টাকা। বাজারে তাহেরপুরি পেঁয়াজ এখন পাইকারিতে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এই দাম আরো নেমে আসবে বলেও মনে করছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, ‘এই সময়টাতে চরে চিনা বাদাম , ভূট্টা, খেসারি লাগিয়ে থাকেন কৃষকরা। তবে ভাল দামের আশায় এবার অনেকেই পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন।’
তিনি জানান, এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ৬১৯ মেট্রিকটন। গত বছর ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছিল। এবার পেঁয়াজ চাষে আরো ৩৬৫ হেক্টর জমি বেড়েছে।
আখতারুজ্জামান/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন