মাঠে মাঠে চলছে বোরো ধানের কাটা ও মাড়াই
হিলি (দিনাজপুর) সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
দিনাজপুরের মাঠে মাঠে চলছে বোরো ধানের কাটা ও মাড়াই। ধানের ফলন ভাল হওয়ায় আনন্দে ভাসছেন এ জেলার বোরো চাষিরা।
অনেকেই কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ধান কাটার এ মৌসুমে এ জেলায় শ্রমিক সংকট হবে না।
বিরামপুর উপজেলার কেটরা গ্রামের বোরো চাষি বাদল মন্ডল বলেন, ‘এবার আমি প্রায় ২১ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। তার মধ্যে ৫ বিঘা জমির ধান পাক ধরেছে। আজ (৮ মে) সকাল থেকে মাঠে ধান কাটার শ্রমিক লাগানো হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবছর ফলন অনেক ভাল।'
তিনি বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ধান কাটতে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আমার সব মাঠের ধান কাটা-মাড়াই শেষ হবে। আশা করছি, প্রতি বিঘা জমি থেকে ২৫ থেকে ২৬ মণ করে ধান ঘরে তুলতে পারবো।'
বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিকথন চন্দ্র পাল বলেন, ‘উপজেলায় এইবার ১৬ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবছর ধানের ফলন ভাল হয়েছে। ৯৭ হাজার মেট্রিক টন ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষক।'
তিনি আরো বলেন, ‘এবার ধান কাটা শ্রমিকের সংকট হবে না। উপজেলায় ছোট-বড় ৫ টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৭ টি রিপার মেশিন দিয়ে বোরো চাষিদের ধান কাটা-মাড়াই চলছে।'
হাকিমপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামের কৃষক আকরাম হোসেন বলেন, ‘মুই এইবার আদিবাড়ি বা বর্গাসহ ৩ বিঘা জমিত ইরি ধান লাগাইছু। মাঠত সবার চাই মোর ধান ভাল হয়ছে। একবেলা খাওয়ায়ে দুই জনক ৩০০ টাকার হাজরা নিয়ে মুই ধান কাটবা লাগিছু। আল্লা দিলে ভালই ধান ঘরত তুলমু এবার।'
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা নাজনীন জানান, উপজেলার প্রায় মাঠেই ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার উপজেলায় ৭২৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এতে ৩০ হাজার ৩১২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধান ক্ষেতে প্রাকৃতিক বা কোন ধানের রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ হয়নি।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের কৃষি উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ১৩ টি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। করোনার কারণে সৃষ্ট শ্রমিক সংকট কাটাতে কৃষকের মাঝে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ করা হয়েছে।
নীলফামারীর জলঢাকা থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিক সরদার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা হিলিতে ধান কাটতে আসি। এইবারও ২১ জন সদস্য নিয়ে এসেছি। হিলির নওপাড়া গ্রামের শামসুল হকের প্রায় ৮০ বিঘা জমির ধান কাটার চুক্তি নিয়েছি। সাড়ে ৩ হাজার টাকা প্রতি বিঘায় তিনি দিতে চেয়েছেন। তবে আমরা একটু বাড়িয়ে দিতে বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন কাজ শেষে কিছু বাড়িয়ে দিবেন।'
মোসলেম/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন