ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কারাতের হাত ধরে স্বপ্নের চাকরি

ক্রীড়া প্রতিবেদক, নেপাল থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৪৩, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কারাতের হাত ধরে স্বপ্নের চাকরি

আত্মরক্ষার পাশাপাশি ‘কারাতে’ একটি দারুণ ক্রীড়া ইভেন্ট। যেটা অলিম্পিক ইভেন্ট। সাউথ এশিয়ান গেমসেও রয়েছে কারাতে। যেখানে পদক সংখ্যা ১৯টি (স্বর্ণ পদক)। চলমান এসএ গেমসের তৃতীয় দিনে এই কারাতে ডিসিপ্লিন থেকেই এসেছে ৩টি সোনার পদক। মঙ্গলবার সোনার পদক জিতে দিন শুরু করেন রাজশাহীর মো. আল-আমিন। তিনি কারাতের ডিসিপ্লিনের ব্যক্তিগত কুমির অনূর্ধ্ব-৬০ কেজি ওজন শ্রেণিতে পাকিস্তানের জাফরকে ৭-৩ পয়েন্টে উড়িয়ে দিয়ে সোনা জিতেন। যা ছিল চলতি এসএ গেমসে কারাতেতে প্রথম সোনার পদক জয়। দিনশেষে তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন রাইজিংবিডির জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। জানিয়েছেন কিভাবে তিনি কারাতে থেকে স্বপ্নের চাকরি পেয়েছেন। পূরণ করেছেন বাবা-মায়ের প্রত্যাশা। জানিয়েছেন তার পরবর্তী লক্ষ্যের কথাও।

প্রশ্ন : কারাতেতে আপনার হাত ধরে এল প্রথম সোনা। কেমন লাগছে?

আল-আমিন : খুবই ভালো লাগছে। প্রথমবার অংশ নিয়ে এসএ গেমসে স্বর্ণ জিতলাম। যা কারাতেতে এবারের আসরে প্রথম স্বর্ণ। দেশকে কিছু দিতে পেরেছি। নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। ভালো লাগাটা অন্যরকম।

প্রশ্ন : কারাতেতে কিভাবে আসা?

আল-আমিন : আমাকে কারাতেতে নিয়ে আসেন আমার চাচা মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম সাগর। ছোটবেলায় তার হাত ধরে কারাতের জগতে আসা। তিনিও কারাতের সঙ্গে ছিলেন। ১৯৯৫ সালের দিকে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণ জিতেছেন। উশুর কোচ ছিলেন।

প্রশ্ন : আপনাকে নিয়ে বাবা-মা কী স্বপ্ন দেখেছিলেন?

আল-আমিন : অন্যান্য বাবা-মা’র মতো আমার বাবা-মা অবশ্য স্বপ্ন দেখেননি তার ছেলেকে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার বানাবেন। তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন দেশের সেবার স্বার্থে আমাকে সেনাবাহিনীতে দিতে। আমি সেনাবাহিনীতে চাকরি করি সেটা ছিল তাদের চাওয়া। তাদের চাওয়া থেকেই সেনাবাহিনীতে চাকরি নেওয়াটা আমার স্বপ্নে পরিণত হয়। আল্লাহর রহমতে এই কারাতের হাত ধরে আমি ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে জব পাই। আমি এখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন গর্বিত সদস্য।

 

 

প্রশ্ন : আপনার ভাই-বোনদের মধ্যে কেউ কী ক্রীড়ার সঙ্গে আছে?

আল-আমিন : আমরা দুই ভাই, এক বোন। আমার ছোট ভাই মো. মিলন ইসলামও আছে এই এসএ গেমসে। উশুতে সে অনূর্ধ্ব-৬০ কেজিতে খেলতেছে। আশা করছি সেও ভালো কিছু করবে।

প্রশ্ন : কোচদের বাইরে আপনার অনুপ্রেরণার উৎস কে কে?

আল-আমিন : আমার বাবা-মা ও আমার স্ত্রী। আমি সম্প্রতি বিয়ে করেছি রাজশাহীতে। আমার স্ত্রী আমাকে নানাভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমাকে নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন। সে নামাজ-কালাম পড়ে দোয়া করে আমার জন্য। কান্নাকাটি করে আমার জন্য। আমার মা-বাবাও কান্নাকাটি করে। আমি যাতে ভালো করতে পারি। সাহস যোগায়।

প্রশ্ন : ম্যাটে নামার আগে আজ কী কথা হয়েছে আপনার স্ত্রীর সঙ্গে?

আল-আমিন : হ্যাঁ কথা হয়েছে। আজকে ফাইটে নামার আগেও কথা হয়েছে। সে আমাকে সাহস দিয়েছে অনেক। সে বলেছে যে, তুমি ভয় করবানা। তোমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবা। তুমি তো অনেক খেলেছো। অনেক পদক জিতেছো। মনে কোনো কিছু রাখবানা।’ এ নিয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই।

প্রশ্ন : পরবর্তী টার্গেট কী?

আল-আমিন : আমার পরবর্তী টার্গেট অলিম্পিক। ২০১১ সালে আমি কারাতের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে শুরু করি। ২০১৬ সালের এসএ গেমসে কারাতে ছিল না। এবার সোনা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলাম। সেটা পূরণ হয়েছে। এবার আমার টার্গেট অলিম্পিকে খেলা।



কাঠমান্ডু/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়