ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের নির্বাচনী প্রচারণার প্রধানের দায়িত্বে থাকা মুসা মিয়াকে (৮০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তবে আত্মগোপনে রয়েছেন, আবু আসিফের শ্যালক শাফায়েত সুমন।
বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আশুগঞ্জ পূর্ব বাজার বিওসি ঘাট এলাকার নিজ বাসা থেকে মুসাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আবু আসিফের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, বুধবার আসিফসহ তারা সরাইলের পানিশ্বর এবং সন্ধ্যায় শাহবাজপুর ইউনিয়নে প্রচারণা চালান। রাতে একসঙ্গে সবাই আশুগঞ্জে ফিরেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুমন তাদের কাছ থেকে বিদায় নেন। এরপর তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে আবু আসিফকে নির্বাচন থেকে সরানো সকল চেষ্টাই করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
গ্রেপ্তার মুসা মিয়ার মেয়ে সাথী আক্তার ও ফাতেমা আক্তার বলেন, বুধবার রাত আড়াইটার দিকে দুটি মাইক্রো বাসে ডিবি পুলিশের সাত থেকে আট জন সদস্য আমার বাবাকে তুলে নিয়ে গেছেন। ‘ওপরের নির্দেশে’ তাকে থানায় নিয়ে যাচ্ছে বলে জানান।
তারা আরও বলেন, আবার বাবা কোনও দল করেন না। পারিবারিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণে আমার বাবা আসিফের সঙ্গে চলাফেরা করে থাকেন। আমার বাবা বৃদ্ধ, তবে সুস্থ মানুষ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হব। পুরো এলাকায় দিন দিন আমার সমর্থন বাড়ছে। এ অবস্থায় গত রাতে আমার নির্বাচনের প্রধান প্রচারক মুসা মিয়াকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। ভয়ে আমার শ্যালক শাফায়াত সুমন মনে হয় আত্মগোপন চলে গেছেন।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে যাওয়া সকলকে ভয় দেখানো হচ্ছে। কেন এমন করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। তবে আমি নির্বাচনের মাঠে আছি। নিরাপত্তা নিয়ে আমি শঙ্কায় আছি। এ অবস্থায় আমি কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করতে পারি? আমি ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের কাছে যাব। সরকার একজন ব্যক্তিকে জেতানোর জন্য যদি এমনটি করে থাকে, তবে নির্বাচন দিল কেন?
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজাদ রহমান বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি আশুগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলার একটি মামলায় মুসা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারে ২০০ থেকে ৩০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে। তদন্তে মুসা মিয়ার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর তিনি দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে আছেন বিএনপির দলছুট পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (কলার ছড়া), আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ (মোটরগাড়ি), জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী (লাঙল) ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম (গোলাপ ফুল)।