বছরের শেষ সূর্যাস্তের সঙ্গেই প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির হিসেব নিয়ে বিদায় নিচ্ছে আরও একটি বছর। ২০২৩ সালের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উপস্থিত হয়েছেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজারো পর্যটকের পাশাপাশি স্থানীয় দর্শণার্থীরা। নতুন বছর যেন সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে কাটাতে পারেন সেই প্রত্যাশাই করেছেন সবাই।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, পর্যটকরা ভিড় করেছেন সমুদ্রপাড়ে। সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে একটি বছরকে বিদায় জানানো পর্যটকের কাছে স্মৃতিময়। সমুদ্রের বিশালতায় পুরনো সব গ্লানি মুছে নতুনকে গ্রহণের শপথ নিচ্ছেন অনেকে। পর্যটকের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় দর্শনার্থীরাও। অনেককে হাঁটু সমান পানিতে নেমে সূর্যকে হাতছানি দিতে দেখা গেছে। অনেককে সৈকতের বালুচরে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলে ২০২৩ সালের শেষ সূর্যটিকে ক্যামেরা বন্দি করতেও দেখা গেছে।
ঢাকা থেকে স্বপরিবারে আসা শাহজাহান তালুকদার বলেন, অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করেছিলাম এ বছরের শেষ দিনটা কক্সবাজার এসে পরিবারের সঙ্গে কাটাবো। অবশেষে তাই হলো। বালুচরে দাঁড়িয়ে সবাই বছরের শেষ সূর্যটাকে বিদায় জানাচ্ছি।
রাজশাহীর বেসরকারি কলেজ শিক্ষক মিরাজুন নুর চৌধুরী বলেন, ‘সূর্যাস্ত উপভোগ করার জন্য কক্সবাজার একটি সেরা জায়গা। তাই বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে কয়েকদিন আগে কক্সবাজারে এসেছি। বছরের শেষ দিনটি স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে আমরা অনেক মজা করছি এখানে।’
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী শফিউল আলম সবুজ বলেন, ‘কক্সবাজার আমার জন্মস্থান। অবসর সময়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সমুদ্রপাড়ে চলে আসি। আজ বছরের শেষ দিনটিও সমুদ্রপাড়ে এসে কাটালাম। খুবই ভালো লাগছে।’
হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ জানান, ‘এবার কক্সবাজারে থার্টি ফাস্ট নাইটের কোনো আয়োজন না থাকলেও অনেক পর্যটক কক্সবাজার এসেছেন বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে। তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তাই অধিকাংশ হোটেল কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘কক্সবাজারে উন্মুক্তভাবে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সমুদ্র সৈকত কিংবা পর্যটন স্পটের কোথাও আতশবাজি ও ফটকা ফোটানোসহ গান-বাজনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা ব্যান্ড সংগীতের আয়োজন করা নিষেধ। পর্যটন এলাকার নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘কক্সবাজারে থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোনো উন্মুক্ত আয়োজন না থাকলেও পর্যটকদের নির্বিঘ্নে ভ্রমণের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এজন্য পর্যটন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।’