সারা বাংলা

কুমিল্লার অর্ধেক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই

কুমিল্লার প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। যার ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছর পরও জেলার সব বিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয়নি শহিদ মিনার।

এ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে কলাগাছ কিংবা বাঁশ-কাঠ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহিদ মিনার তৈরি করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয়। আবারও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে শুধু পতাকা উত্তোলন করে বিশেষ দিবস পালন করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শিক্ষা অর্জনে। জাতীয় দিবসের গুরুত্ব বুঝতে পারছে না তারা।

জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, কুমিল্লায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার সংখ্যা ৩ হাজার ২২৫টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৪৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই। এরমধ্যে জেলার ১ হাজার ২৩৮ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই। অর্ধেকের চেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই।

জেলায় ৫৭৪ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭২টিতে, ৫০ স্কুল অ্যান্ড কলেজের মধ্যে ৩টিতে, ১১৭টি কলেজের মধ্যে ১৪টিতে এবং ৩৭৭ মাদ্রাসার মধ্যে ২৫৯টিতে শহিদ মিনার নেই।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম কনকাপৈত ইউনিয়নের আতকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুই শতাধিক। এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, ২১ ফেব্রুযারি শ্রদ্ধা জানাতে তারা ইট, বাঁশ বা কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি করে। একটি শহিদ মিনার থাকলে শ্রদ্ধা জানাতে সুবিধা হতো।

এ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাসেল মজুমদার বলেন, স্কুলে প্রাঙ্গণে শহিদ মিনার না থাকায়, ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হতো না। এখন কলা গাছ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করে ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিউল আলম বলেন, ‘জেলার সব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বা শহিদ দিবসটির তাৎপর্য বুঝতে পারতো। আমরা আশাবাদী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে। এ বিষয় আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। আশা করছি, নতুন আরও অর্ধশতাধিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার হবে।’

কুমিল্লা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে প্রতিটি স্কুলে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়। সরকারি উদ্যোগে অনেক স্কুলে শহিদ মিনার করা হয়েছে। অন্য বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার না হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে উদ্যোগের অভাব। আমরা প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দিয়েছি। আশা করছি, সব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে।’