ফেনীর সোনাগাজীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে হত্যার শিকার ছোটন ও অভিযুক্ত হৃদয়ের বিরুদ্ধে থানায় রয়েছে একাধিক মামলা।
এরমধ্যে অভিযুক্ত আরিফুর রহমান হৃদয়ের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় ৩টি ও গাজীপুর থানায় রয়েছে ১টি মামলা। নিহত আবির হোসেন ছোটনের বিরুদ্ধেও সোনাগাজী মডেল থানায় ২টি ও গাজীপুর থানায় ১টি মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায়।
সুদ্বীপ রায় বলেন, হত্যার শিকার আবির হোসেন ছোটন ও আসামি আরিফুর রহমান হৃদয় দুজনেই ভালো বন্ধু ছিলেন বলে জানতে পেরেছি। প্রাথমিক তদন্তে তাদের একসঙ্গে চলাফেরার বিষয়টি উঠে এসেছে। থানার রেকর্ড পর্যালোচনা করে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে গাজীপুর থানায় একটি প্রতারণার মামলার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও হৃদয়ের বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় মারামারি, মাদক এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৩টি মামলা রয়েছে। নিহত ছোটনের বিরুদ্ধেও সোনাগাজী থানায় মারামারি সংক্রান্ত ২টি মামলা রয়েছে।
গতকাল রোববার (২৪ মার্চ) সন্ধার দিকে দোকানে বাকি দেওয়া-নেওয়া নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সোনাগাজী মতিগঞ্জ সিএনজি স্টেশনের যাত্রী ছাউনির পাশে নিলয় স্টোরে বন্ধু হৃদয়ের হাতে খুন হন আবির হোসেন ছোটন (২৩)। হৃদয় নিলয় স্টোরের মালিক নিলয়ের বড় ভাই।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৬টার দিকে ইফতারের আগমুহূর্তে মতিগঞ্জ সিএনজি স্টেশনের সামনে নিলয় স্টোরের মালিক নিলয়ের সাথে দোকানে বাকি খাওয়া নিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়ায় ছোটন। এর কিছুক্ষণ পর নিলয়ের বড় ভাই আরিফুর রহমান হৃদয় এসে ছোটনের সঙ্গে তর্কে জড়ায়। এক পর্যায়ে হৃদয় দোকান থেকে ছুরি নিয়ে ছোটনের বাম বুকে আঘাত করে। ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আবির হোসেন ছোটন উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামের রমজান আলী মেস্তরী বাড়ির মৃত কালা মিয়ার ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের পর নিহত ছোটন ও অভিযুক্ত হৃদয়কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা তথ্য উঠে আসে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সোনাগাজীর মতিগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে ছোটন ও হৃদয় একসঙ্গে রাজনীতি করতো। সরকার দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাদের দেখা যেত। তাদের দু'জনেরই ছিল নিজস্ব কিশোর গ্যাং। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ছোটন ছাত্রলীগের কোন পদে ছিল না। তবে রাজনৈতিক প্রোগ্রামে সক্রিয় ছিল।
নিহতের ভাই আরমান বলেন, কোন কারণ ছাড়াই আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার দাবি করছি৷
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, দোকানে বাকি খাওয়ার তুচ্ছ ঘটনায় প্রথমে তর্কাতর্কি পরে ছুরিকাঘাতে ছোটনকে খুন করে হৃদয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ছোটনের বন্ধু মামুনকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। হৃদয়কে আটক ও হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে তুচ্ছ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে যুবক খুন