সারা বাংলা

মোমবাতি জ্বালিয়ে তাজরীনে নিহতদের স্মরণ

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনে নিহত ১১৭ শ্রমিকের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করেছেন আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়ায় ইয়ারপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় তাজরীন ফ্যাশনসের গেটের সামনে মোমবাতি প্রজ্জ্বালন কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালন করেন।

নিহতদের স্বজনরা জানান, প্রতিবছরের মতো দিনটি স্মরণ করতে এবছরও নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেসব উদ্যোগের অংশ হিসেবে আজ সন্ধ্যায় তাজরিন কারখানার সামনে হাজির হন তারা। হাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

সমাবেশে বক্তরা ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ভেঙে আহত শ্রমিকদের বাসস্থান নির্মাণ, ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি মালিকের শাস্তি দাবি করেন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘‘২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীন ফ্যাশনের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ১১৪ শ্রমিক নিহত হন। পরে আরো তিন শ্রমিক মারা যান। রোববার (২৪ নভেম্বর) এই ট্র্যাজেডির ১২ বছর পূর্ণ হবে।”

তিনি আরো বলেন, “এটা কোনো দুর্ঘটনা ছিল না। আগুন লাগার পর মালিকপক্ষ ছুটি না দিয়ে উল্টো কারখানার সব গেট বন্ধ করে দেয়। যা ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।  দুঃখের বিষয় সেই হত্যাকাণ্ডের আরো একটি বছর পূর্ণ হতে চলল। তবে, দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি। এখনো তাজরীন গার্মেন্টের অনেক ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ক্ষতিপূরণ না পেয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।’

এতে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশন, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১৭ জন শ্রমিক দগ্ধ হয়ে মারা যান। এর মধ্যে পরিচয় শনাক্ত না হওয়া ৫৩ জনের মরদেহ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। জীবন বাঁচাতে লাফিয়ে পড়ে পঙ্গু হন অনেকে। তাদের স্মরণে রোববার সকালে আশুলিয়ার তাজরীন কারখানার সামনে অস্থায়ী বেদিতে নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।