ক্যাম্পাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে গুলি করে হত্যার হুমকি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ জাহিদুল হককে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রাবার (২২ নভেম্বর) হুমকির ঘটনায় ভুক্তভোগী রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

অভিযুক্ত সালাউদ্দীন মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব শাখার সহকারী পরিচালক বলে জানা গেছে।

ডায়েরিতে সহকারী প্রক্টর জাহিদুল হক বলেন, “গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে একটি অপরিচিত হোয়াটস অ্যাপ নাম্বার থেকে কল করে পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) সালাউদ্দিন মোলা আমাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন। এ সময় তিনি নিজেকে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী লোক হিসেবে পরিচয় দেন।”

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী বলেন, “হত্যার হুমকিদাতা সালাউদ্দীন মোল্লা আমার পূর্বপরিচিত না, তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত বিরোধও নেই। তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছে। তার অভিযোগ, আমি নাকি শরীর চর্চা শিক্ষা কেন্দ্রের সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুল কাদের ওরফে কাজী মনিরকে পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছি, যা সম্পূর্ণ মিথ্যে। কাজী মনির জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়া ও হামলার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও টেন্ডার বাণিজ্যে যুক্ত থাকায় শিক্ষার্থীরা তার বরখাস্তের দাবি জানিয়ে আসছে।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীদের সরাসরি হুমকি ও হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কাজী মনিরের সেখানে অভিযুক্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে তার আচরণ দেখে মনে হয়, সে কেবল অপরাধমূলক কাজগুলো সম্পাদন করে না, তার অপরাধের পরিকল্পনার সঙ্গে ক্যাম্পাসের আরও অনেক কর্মকর্তা জড়িত আছেন।

তিনি আরও বলেন, “তারা ভয় পাচ্ছেন, কাজী মনির ধরা পড়লে তাদের নাম চলে আসবে। সেই ভীতি থেকে কাজী মনিরের বিরুদ্ধে কেউ কিছু যাতে না করতে পারে, তার জন্য নানা তদবির চালাচ্ছে। কাজী মনির মনে করছে, আমি তাকে বরখাস্ত করার জন্য সুপারিশ করছি। এজন্য সে নিজে না পেরে, তার শুভাকাঙ্ক্ষী সালাউদ্দিন মোল্লাকে দিয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আমি কোনো প্রভাশালী শিক্ষক না, তাই আমার কাছে তদবির করার চেয়ে হুমকি দিয়ে থামিয়ে দেওয়া তাদের কাছে সহজ মনে হয়েছে।”

ভুক্তভোগী বলেন, “এ ঘটনায় আমি একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর হত্যার হুমকি দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে একটি আবেদন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সহযোগিতা না করা হলে আমি আমার আইনি পদক্ষেপ নিব।”

হত্যার হুমকিদাতা অভিযুক্ত সালাউদ্দীন মোল্লা বিদেশে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তবে বিশ্ববদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। কাউকে হত্যার হুমকি প্রদান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও কিছু অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”