সারাহ বেগম কবরী। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে স্বর্ণালী সময়ে দাপিয়ে বেরিয়েছেন এমন নায়িকাদের একজন তিনি। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এফডিসির এ ফ্লোর থেকে ও ফ্লোরে শুটিং করেছেন প্রিয় সহকর্মীদের সঙ্গে। বলা চলে, এফডিসির প্রতিটি ধুলোকণার সঙ্গে ছিল তার সখ্যতা।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাত ১২টা ২০ মিনিটে মারা গেছেন বরেণ্য এই অভিনেত্রী। কিন্তু শেষবারের মতো তার যাওয়া হলো না সেই চির চেনা এফডিসিতে।
করোনা মহামারির কারণে সারা দেশে লকডাউন। পুরোপুরি স্বাস্ব্যবিধি মেনে নন্দিত এই শিল্পীকে সমাহিত করা হয়েছে। এই কারণে কবরীর মরদেহ প্রিয় প্রাঙ্গণ এফডিসিতে নেওয়া হয়নি বলে রাইজিংবিডিকে জানান শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
রাজধানীর বনানী কবরস্থানে কবরীকে সমাহিত করা হয়েছে। এর আগে কবরীকে হাসপাতালের হিম ঘর থেকে মোহাম্মদপুর আল মারকাজুলে নেওয়া হয়। সেখানে গোসল করানো শেষে তার মরদেহ গুলশান ২ নম্বর এলাকার লেক রোডের বাড়িতে শেষবারের মতো নেওয়া হয়েছিল। বাদ জোহর বনানী কবরস্থান এলাকায় তার জানাজা হয়। তারও আগে বনানী কবরস্থানের সামনেই মুক্তিযোদ্ধা এই অভিনয়শিল্পীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
খুসখুসে কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হলে করোনার উপসর্গ ভেবে গত ৫ এপ্রিল রাতে কবরীকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শে নমুনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। গত ৭ এপ্রিল রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তরের কথা জানান। তখন এই অভিনেত্রীকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ১৫ এপ্রিল বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কবরীর। ১৯৬৫ সালে ‘জলছবি’ ও ‘বাহানা’, ১৯৬৮ সালে ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘আবির্ভাব’, ‘বাঁশরি’, ‘যে আগুনে পুড়ি’। ১৯৭০ সালে ‘দীপ নেভে নাই’, ‘দর্পচূর্ণ, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বিনিময়’ সিনেমায় অভিনয় করেন।
কবরী অভিনয়ের পাশাপাশি সিনেমা পরিচালনা করেছেন। কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনাও করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বরেণ্য এই অভিনেত্রী।