সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে ১৬ বছর পর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল পর্তুগাল। ২১ বছর বয়সী অভিষিক্ত রামোসের হ্যাটট্রিকে অতি সহজেই শেষ আটে পা রেখেছে পর্তুগাল। এবারের বিশ্বকাপে এটিই এখন পর্যন্ত একমাত্র হ্যাটট্রিক।
রামোসের হ্যাটট্রিক বাদে একটি করে গোল করেছেন পেপে, রাফায়েল জুরেরিও ও রাফায়েল লিও। শুরুর একাদশে ছিলেন না রোনালদো। তাকে ছাড়া পর্তুগালের জিততে একটুও বেগ পেতে হয়নি। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ মরক্কো।
মাঠে নেমে ৩ মিনিটেই গোল. . .
ব্রুনো ফার্নান্দেজকে তুলে ৮৭ মিনিটে কোচ সান্তোস মাঠে নামিয়েছিলেন রাফায়েল লিওকে। মাঠে নেমে তিন মিনিটেই গোলের দেখা পেয়ে যান এই পর্তুগিজ। রাফায়েল জুরেরিওর কাট করা বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতরে ঢুকে ডানপায়ে বাঁকানো শটে গোল করেন লিও। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচেও গোল পেয়েছিলেন এই বদলি খেলোয়াড়।
৭৩ মিনিটে মাঠে নামলেন রোনালদো
ফেলিক্সকে তুলে ম্যাচের ৭৩ মিনিটে রোনালদোকে মাঠে নামালেন কোচ সান্তোস। তখন পুরো স্টেডিয়ামে গগনবিদারী চিৎকার। রোনালদোকে মাঠে নামতে দেখে ভক্তরা উল্লাসে ফেটে পড়েছেন। টানা ৩১ ম্যাচ পর প্রথম কোনো মেজর প্রতিযোগিতায় শুরুর একাদশে ছিলেন না রোনালদো। শেষ ম্যাচে কোচের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন সিআর সেভেন।
বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিক রামোসের
নিজের অভিষেক ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করলেন গঞ্জালো রামোস। ২১ বছর বয়সী এই ফুটবলার ৬৭ মিনিটে নিজের তৃতীয় গোলের দেখা পান। গোল রক্ষক দিয়াগো কস্তার লং পাসে মধ্যমাঠে বল পান বার্নাডো সিলভা। তার বাড়ানো বল ডি বক্সের কাছে পান ফেলিক্স। ততক্ষণে রামোস বক্সের ভেতরে। ফেলিক্স তাকে দেখেই বল বাড়িয়ে দেন। বল রিসিভ করে হাওয়ায় ভাসিয়ে রামোসের গোল করতে কোনো সমস্যাই হয়নি।
পর্তুগাল ৪ - ১ সুইজারল্যান্ড
৫৫ মিনিটে পর্তুগাল চতুর্থ গোলের দেখা পেল। এবার গোল করেছেন রাফায়েল জুরেরিও। কাউন্টার অ্যাটাকে মধ্যমাঠে বল পান রামোস। দৌড়ে ভেতরে ঢুকে ডি বক্সের ভেতরে রাফায়েলকে বল বাড়ান রামোস। সেখানে ফাঁকায় ছিলেন রাফায়েল। ঠান্ডা মাথায় এই লেফট ব্যাক লক্ষ্যভেদ করে আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের প্রথম গোলের স্বাদ পান।
এর তিন মিনিট পরই সুইজারল্যান্ড নিজেদের প্রথম গোল করে। কর্ণার থেকে পাওয়া বলে পা ছুঁইয়ে গোল করেন ম্যানুয়েল আকাঞ্জি। সমতা ফেরাতে সুইসদের আরো তিন গোল করতে হবে।
রামোসের জোড়া গোল, ৩-০ গোলে এগিয়ে পর্তুগাল
বিরতি থেকে ফিরে এসে আবার গোলের দেখা পেলেন অভিষিক্ত রামোস। ম্যাচের ৫১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করলেন ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ডানপ্রান্ত থেকে দিয়াগো ডালোটের ক্রস থেকে পা ছুঁয়ে বল জালে পাঠান রামোস। গোলরক্ষক সোমারের পায়ের নিচ দিয়ে বল খুঁজে পায় ঠিকানা। ৩-০ গোলে এগিয়ে পর্তুগাল।
২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে পর্তুগাল
রামোস ও পেপের গোলে শেষ ষোলোর ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে পর্তুগাল। ম্যাচের নাটাই দারুণভাবে নিজেদের কাছেই রেখেছে পর্তুগাল। দলের সেরা তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো শুরুর একাদশে জায়গা পাননি। তাকে ছাড়া খেলতে নেমে পর্তুগাল বেশ ভালোভাবেই নিজেদের সামলে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ার্ধে সুইজারল্যান্ড অত্যাধিক ভালো ফুটবল না খেললে এ ম্যাচের ফল অনুমান করা যাচ্ছে সহজেই।
এবার গোল করলেন পেপে, ২-০ গোলে এগিয়ে পর্তুগাল
রামোসের পর গোল করলেন পেপে। ৩৩ মিনিটে তার মাথা ছুঁয়ে আসে দ্বিতীয় গোল। ব্রুনো ফার্নান্দেজের কর্ণার কিক থেকে অসাধারণ টাইমিংয়ে হেড দিয়ে গোল করেন পেপে। নক আউট পর্বে সবচেয়ে বেশি বয়সের খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার অনন্য কীর্তি গড়েছেন এ খেলোয়াড়।
পর্তুগিজ ডিফেন্ডার এর আগেও একাধিকবার কর্ণার থেকে হেডে গোল করেছেন। ৩৯ বছর বয়সী পেপে নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে এসে এমন গোলে নিশ্চয়ই উচ্ছ্বসিত। ২-০ গোলে পিছিয়ে সুইজারল্যান্ড। এখান থেকে ম্যাচে ফিরতে তাদের অলৌকিক কিছুই করতে হবে।
রামোসের গোলে এগিয়ে পর্তুগাল
জাতীয় দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেই গোলের দেখা পেলেন গঞ্জালো রামোস। ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের গোলে লিড নিল পর্তুগাল। ম্যাচের ১৭ মিনিটে গোল করেছেন তরুণ তুর্কী। ফেলিক্সের থ্রো থেকে ডি বক্সের ভেতরে বল পান রামোস। একটু জগলিং করে বল নিয়ে ভেতরে ঢুকে জোড়ালো শট নেন। তাতেই বোকা বনে যান সুইস গোলরক্ষক সোমার। টপ লেফট কর্ণার দিয়ে বল চলে যায় জালে।
রোনালদোকে ছাড়া সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ে পর্তুগাল
শঙ্কাই সত্যি হলো। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ছাড়াই সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে মাঠে নেমেছে পর্তুগাল। তাকে প্রথম একাদশে রাখেননি কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। রাত একটায় দুই দল লুসাইল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছে।
কেন নেই রোনালদো?
গণমাধ্যমে এসেছে, গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে হেরে যায় পর্তুগাল। সেই ম্যাচে রোনালদোকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সান্তোস। সেই সময় ৩৭ বছরের রোনালদো যে অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন, তা ভালো ভাবে নেননি কোচ। সেই ম্যাচে মাঠ থেকে বেরোনোর সময় মুখে আঙুল দেখান সিআরসেভেন। কোচের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় এবার তাকে একাদশ থেকে জায়গা হারাতে হলো।
হেড টু হেড
পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ছয়বার মুখোমুখি হয়েছে। দুই দলই জিতেছে তিনটি করে ম্যাচ। মেজর প্রতিযোগিতায় এর আগে কেবল একবারই খেলেছে দুই দল। ২০০৮ সালে ইউরোর সেই ম্যাচে পর্তুগালকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল সুইজারল্যান্ড। চলতি বছর দুই দল তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। ইউয়েফা নেশন্স লিগের ম্যাচে গত জুনে লিসবনে পর্তুগাল ৪-০ গোলে হারায় সুইজারল্যান্ডকে। এর আগের সপ্তাহে জেনেভাতে সুইসরা জেতে ১-০ গোলে।
কে যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে?
২০০৬ বিশ্বকাপের পর পর্তুগাল শেষ ষোলোর বাধা পেরোতে পারেনি আর। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া দলটি কি এবার যেতে পারবে কোয়ার্টার ফাইনালে?
শেষ আটে যেতে তাদের হারাতে হবে আত্মবিশ্বাসী সুইজারল্যান্ডকে। তবে রেকর্ড তাদের পক্ষে কথা বলছে না। দুই জয় নিয়ে শেষ ষোলোতে পা রাখা সুইসরা কখনো তিন ম্যাচ জিততে পারেনি বিশ্বকাপে। ১৯৫৪ সালে আয়োজক হিসেবে সর্বশেষ তারা কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল। এরপর তিনবার সুযোগ পেয়েও শেষ ষোলোর বাধা পেরোতে পারেনি।
আজ কার মুখে ফুটবে হাসি?