পাঁচ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ, ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন গোপালগঞ্জের মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের প্রশাসসিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে ৫ দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পরে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের মুলগেটে তালা মেরে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান খান, আবু সালেহ সিহাব, পাতা রায় প্রমুখ। এ সময় বক্তারা, পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে (১) নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ সংশোধনের মাধ্যমে ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নির্ধারিত পদে একক নিয়োগ এবং ডিপ্লোমাধারীদের ভর্তির যোগ্যতার সঙ্গে চাকরিতে আবেদনের যোগ্যতা সামঞ্জস্যকরণ, (২) কৃষির ন্যায় ১০ম গ্রেডে উপ-সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা পদে ডিপ্লোমাধারীদের একক নিয়োগ নিশ্চিত করে মাঠ পর্যায়ে দ্রুত নিয়োগ দেওয়া, (৩) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমাধারীদের সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ইনস্টিটিউটে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে চাকরির ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করা, (৪) উচ্চ শিক্ষা সহজীকরণের মাধ্যমে সরকারিভাবে বা সরকারি সহায়তায় উক্ত বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দেওয়া ও (৫) মৎস্য অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ে শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ প্রদান করে মৎস্য সেক্টরের উন্নয়নকে গতিশীল করা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মো. আবু সালেহ সিহাব বলেন, ‘বর্তমানে আমরা প্রতিষ্ঠানে এমন একটি পরিস্থিতিতে রয়েছি যে, আমরা মাছের নাম অনেক জানি, বইতে পড়েছি। একশতটি মাছের নাম মুখে বললেও সর্বোচ্চ ১১টি মাছ চিনব। আর চিনবোই বা কীভাবে? আমাদের হাতে কলমে কোনো শিক্ষা দেওয়া হয় না। আমরা এখন শুধু পাঙ্গশ, ইলিশ মাছ চিনি।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী পাতা রায় বলেন, ‘আমাদের ৫ দফা দাবি আদায়ে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে সরব না। আমরা এখানে ঠিকভাবে কিছু শিখতে পারছি না। চাকরি পাচ্ছি না। তাহলে আমারদের ৪টি বছর নষ্ট করে লাভ কী?’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান খান বলেন, ‘আজ সন্ধ্যা থেকে আমরা অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমাদের দাবি বিষয়ে অধ্যক্ষ এখনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাননি।’
তবে গোপালগঞ্জের মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো, সাজদার রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যে দাবি রয়েছে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরাও তাদের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করছি। তবে তারা আমাদের অবরুদ্ধ করে বিদ্যুত, পানি বন্ধ করে যে আন্দোলন করছে, এটা ঠিক নয়।’