পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করায় কাজ বন্ধ করে দিয়ে ঠিকাদারের ট্রাক ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভাঙ্গুড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরভাঙ্গুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জনতার বাধার মুখে দুই ট্রাক নিম্নমানের ইট ফেরত নিয়ে যায় ঠিকাদার। খবর পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদ মোড় থেকে চরভাঙ্গুড়া গ্রামের নদীর ঘাট পর্যন্ত ১৩৬৫ মিটার সড়ক সংস্কার কাজের দরপত্র আহবান করে উপজেলা প্রকৌশল অফিস। এতে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৮৫ লাখ টাকা। ১৩৬৫ মিটার সড়কের মধ্যে ১১৪ মিটার সড়ক আরসিসি এবং ১৮ মিটার প্রশস্ত হবে এবং অবশিষ্ট সড়ক ১০ ফুট প্রশস্ত বিটুমিন কার্পেটিং হবে।
কাজটি পায় পাবনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাব্বির হাসান ট্রেডার্স। সেই কাজটি কিনে নেয় পাবনার আরেকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আয়মান ট্রেডার্স। চলতি মাসের শুরুতে কাজটি শুরু করেন ঠিকাদার। শুরু থেকেই অনিয়ম হতে থাকে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার তিনটি ট্রাক ভর্তি করে এনে নিম্নমানের ইট খোয়া তৈরি করতে সড়কের ওপর রাখে। এ সময় এলাকাবাসী নিম্নমানের ইট সরিয়ে নিতে বললেও তাতে কর্ণপাত না করে ঠিকাদারের লোকজন ইট ঢালতে থাকে সড়কের ওপর। এক পর্যায়ে সাধারণ জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাক ভাঙচুর করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কে ব্যবহৃত পূর্বের ইট দিয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দু'দিন ধরে পাবনা থেকে নতুন ইট নিয়ে আসা হচ্ছে। এসব ইট অত্যন্ত নিম্নমানের। কিছু কিছু ইট দেখতে অনেকটা পোড়া মাটির মতো।
গ্রামের বাসিন্দা আরজু মিয়া বলেন, “ট্রাকে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট নিয়ে আসা হয়েছিল। প্রথমেই তাদেরকে নিষেধ করা হয় এই ইট সড়কের কাজে ব্যবহার না করতে। কিন্তু তারা দুইটি ট্রাক ফেরত নিয়ে গেলেও একটি ট্রাকের ইট ফেলতে শুরু করে। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসী ট্রাক ভাঙচুর করে। ট্রাকের ড্রাইভার পালিয়ে যায়। ট্রাক ভাঙচুরের বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত।”
এ বিষয়ে ঠিকাদারি কাজে নিয়োজিত আয়মান ট্রেডার্সের পক্ষে ঠিকাদার সজীব আহমেদ বলেন, “আমরা ভাটা থেকে ইট কিনেছি। সেখান থেকে রাতের আঁধারে নিম্নমানের ইট ট্রাকে লোড করে দিয়েছে। এটা আমাদের অজান্তে হয়েছে। জনগণ নিষেধ করার কারণে দুই ট্রাক ইট ফেরত নেওয়া হয়েছে। এরপরেও বিক্ষুব্ধ জনগণ আমাদের ট্রাক ভেঙে ক্ষতি করেছে।”
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আফরোজা পারভীন বলেন, “ঘটনাটি জানার পরে সরেজমিনে গিয়েছিলাম। নিম্নমানের ইট ব্যবহারের সত্যতা পাওয়ায় ইট সরিয়ে নিতে বলেছি। ভালো মানের ইট ছাড়া কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”