রাজনীতি

ছাত্রদল নেতাকে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি রিজভীর

অবিলম্বে ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমান রাসেলকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

তিনি বলেন, গত ১ জুলাই সোমবার তাকে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। ৮দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি বা আদালতে হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে পরিবার, বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন ও দলের নেতাকর্মীর প্রত্যেকে গভীর উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। বাবা-মায়ের যে আকুতি তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে তুলে নিয়ে গেছে তা অনেকে দেখেছেন এবং সে গোয়েন্দা হেফাজতে রয়েছে বলে দাবি করেন রিজভী।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

এই ঘটনা মর্মান্তিক ও মর্মস্পর্শী উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, এই ধরনের তরুণদেরকে নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হচ্ছে- কারণ তারা মানুষের পক্ষে কথা বলে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে, গণতন্ত্রের পক্ষে স্লোগান দেয়। তাদের স্লোগান স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিষ্ঠুর দমন-নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আতিকুর রহমান রাসেলদের মতো তরুণদের নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হচ্ছে, নিখোঁজ করে দিচ্ছে সরকার।

তিনি আরও বলেন, দেশ এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা অতিক্রম করছে। মানুষের অধিকারগুলো দখলদার সরকার একের পর এক হরণ করেছে। মানুষ অধিকার বঞ্চিত, গণতন্ত্রে মানুষের যে অধিকারগুলো স্বীকৃত সে অধিকারগুলোকে মানুষ যাতে প্রয়োগ করতে না পারে, তার জন্য রাষ্ট্রশক্তিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে শেখ হাসিনা ইচ্ছে পূরণ করতে পারেন। এই বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে কেউ যেনো কথা না বলতে পারে। তার বিরুদ্ধে কেউ যেনো মিছিল না করতে পারে। এদেশে কেউ যেনো সমাবেশ না করতে পারে। বাংলাদেশের সংবিধান কাটাছেঁড়া করার পরেও গণতন্ত্রের যে অধিকারগুলো আছে সেই অধিকারগুলো সরকারি যন্ত্র দিয়ে নানাভাবে দমন করছে। এই দমন পৈশাচিক, এই দমন নিষ্ঠুর, এই দমন রক্তাক্ত।

রিজভী বলেন, যতদিন যাচ্ছে তত একের পর এক সরকারের কুকীর্তি বেরিয়ে আসছে। শেখ হাসিনা যাদেরকে দিয়ে বিরোধী দমন করেছেন তারা এদেশের জনগণের সম্পদ-অর্থ লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে এবং দেশের মধ্যেও অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। এতো যত সম্পদ নবাবদেরও এতো সম্পদ ছিলো না। লুটপাট আর দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, রাজকোষ শূন্য হয়ে গেছে। দেশ তিন মাস যে চলবে সেই প্রয়োজনীয় অর্থ এখন ব্যাংকে নেই। যারা ঋণখেলাপি হয়েছেন এক লাখ বিরানব্বই হাজার কোটি টাকার তাদেরকে নিয়ম করে সুদ মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। যারা লুটপাট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা সবাই ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ লোক।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।