হাওর-পাহাড়ে বেষ্টিত জেলা হবিগঞ্জ। বর্ষায় যেমন ধু ধু করে পানি, আসে পর্যটন, তেমনি শীতে শুকিয়ে তৈরি হয় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। চায়ে মোড়ানো পাহাড়ের প্রায় প্রতিটি পাদদেশ। জেলা-উপজেলা শহর ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠছে শিল্পকারখানা। ধীরে ধীরে নির্মূল হচ্ছে বেকারত্বের অভিশাপ।
২৬৩৬.৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে জেলা হবিগঞ্জ। এর উত্তরে সুনামগঞ্জ ও সিলেট, পূর্বে মৌলভীবাজার, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।
সুফি সাধক হযরত শাহজালাল (র.) এর অনুসারী সৈয়দ নাছির উদ্দিন (র.) এর পুণ্যস্মৃতি বিজড়িত খোয়াই, করাঙ্গী সুতাং, বিজনা, রত্না নদী বিধৌত হবিগঞ্জ একটি ঐতিহাসিক জনপদের নাম। ঐতিহাসিক সুলতানসী হাবেলীর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ সুলতানের অধঃস্তন পুরুষ সৈয়দ হেদায়েত উল্লাহর পুত্র সৈয়দ হবিব উল্লাহ খোয়াই নদীর তীরে একটি গঞ্জ বা বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। তার নাম অনুসারে হবিগঞ্জ নামকরণ করা হয়।
১৮৬৭ সালে ইংরেজ শাসনামলে হবিগঞ্জকে মহকুমা ঘোষণা করা হয় এবং ১৮৭৮ সালে মহকুমায় রূপান্তর করা হয়। আসাম প্রাদেশিক সরকারের ২৭৩ নম্বর নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ১৮৯৩ সালের ৭ এপ্রিল হবিগঞ্জ থানা গঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬০ সালে সার্কেল অফিসারের (উন্নয়ন) অফিস স্থাপিত হয় এবং সর্বশেষ ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ জেলায় উন্নীত হয়।
বর্তমান সরকারের পদক্ষেপে বদলে গেছে হবিগঞ্জ। বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠছে বড় বড় শিল্প কারখানা। এর মধ্যে ১১টি বৃহৎ, মাঝারি ১৩২ ও ২৩৭৩টি ক্ষুদ্র উৎপাদন অব্যাহত আছে। নির্মাণাধীন রয়েছে বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান। তাই শিল্পায়নে এসেছে বিপ্লব। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৩ লাখ লোকের। পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে ৫১১ একর জমিতে চুনারুঘাট উপজেলায় শিল্প এলাকা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া নিয়েছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ এই তিন খাতের উপর ভিত্তি করে শিল্পকারখানা গড়ার উপযোগীসহ শিল্পবান্ধব পরিবেশের কারণে এই জেলাকে বেছে নিয়েছে বহুজাতিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। জেলার স্থানে স্থানে রাস্তা, ব্রিজ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ অব্যাহত আছে। এতে তৃণমূল মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।
জেলায় নির্মাণ হয়েছে হবিগঞ্জ আধুনিক স্টেডিয়াম, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, দুর্নীতি দমন কার্যালয়, হবিগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ভবন, খাদ্য অফিস, ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ভবন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা ভবন, ৮টি উপজেলায় ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন, ফায়ার সার্ভিস ভবন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়, বিজিবি-৫৫ কার্যালয়, কয়েকটি থানা ভবন, উপজেলা পরিষদ ভবন, কলেজ, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম, শিল্পকলা একাডেমি, মডেল মসজিদ, স্কুল ও মাদ্রাসা ভবনসহ ব্যাপক উন্নয়ন চলমান রয়েছে।
গ্রাম ও হাওর উন্নয়ন
গ্রামে গ্রামে পাকা রাস্তা আছে। শুধু হাওরে রাস্তা-ব্রিজের কাজ চলমান। এতে গ্রাম হয়েছে শহর। বর্তমান সরকারের ১২ বছরে এলজিইডি হবিগঞ্জের মাধ্যমে চলতি বছরের ২৩ মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকার উন্নয়ন হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন এলজিইডি হবিগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাছির ও সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন
সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগ (সওজ)। ২০০৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সওজের মাধ্যমে জেলার সড়ক ও ব্রিজ নির্মাণ, মেরামত বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮০৭ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৯৪ টাকা। সওজের (হবিগঞ্জ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সজীব আহামেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
বাল্লা স্থলবন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য
জেলার চুনারুঘাট দক্ষিণাঞ্চলের প্রাণের দাবি বাল্লা স্থলবন্দর। নির্মাণকাজ শেষ হলে দেশের ২৩তম স্থলবন্দর হবে এটি। উপজেলার কাটানীপার মৌজায় মো. আতাউর রহমান খানের ১০০ শতক জমি অধিক গ্রহণের মাধ্যমে আবাসিক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ২৮ আগস্ট থেকে স্থলবন্দরের আবাসিক প্রকল্পের সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হয়। ২৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান।
বাল্লা স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির নেতা জালাল আহমেদ জানান, বন্দরের কাজ সমাপ্ত হলে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হবে এখানে।
চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর বলেন, হবিগঞ্জের উন্নয়নে বাল্লা স্থলবন্দর একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
১৯৫১ সালে চুনারুঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী বাল্লা নামক স্থানে ৪ দশমিক ৩৭ একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত বাল্লা স্থল শুল্কবন্দর চালু করা হয়। এ বন্দর দিয়ে সিমেন্টসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। দুই দেশের সীমান্ত দিয়ে বয়ে চলছে খোয়াই নদী। বর্ষায় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে শ্রমিকরা মাথা ও কাঁধে করে পণ্য আনা-নেওয়া করে থাকেন। ফলে একদিকে ঝুঁকি, অন্যদিকে আমদানি-রপ্তানিকারকদের অর্থ ব্যয় হয় বেশি।
এ সমস্যা দূর করতে ২০১২ সালের ১১ জুন ভারত ও বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রতিনিধিদল কেদারাকোট এলাকাটি পরিদর্শন শেষে উভয়পক্ষই শুল্কস্টেশনের দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে কেদারাকোটে স্থলবন্দর করার বিষয়ে একমত হয়।
২০১৭ সালের ৮ জুলাই স্থলবন্দর চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তী জানান, একনেক সভায় স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার অনুমোদন পেয়েছে এবং এটি দেশের ২৩তম স্থলবন্দর। অবকাঠামো তৈরির জন্য অর্থও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এরপর স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের জুলাইয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে ২১ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব পাঠায়। প্রস্তাবিত জমিতে বসতবাড়ি থাকায় আপত্তি জানান স্থানীয়রা। এ অবস্থায় থমকে যায় পুরো প্রক্রিয়াটি। তবে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে স্থলবন্দরের জন্য ১৩ একর ভূমি অধিগ্রহণে ভূমি জরিপ সম্পন্ন করা হয়। ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের কেদারাকোর্টে বাল্লা স্থলবন্দরকে দেশের ২৩তম স্থলবন্দর ঘোষণা করেন তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রী মো. শাজাহান খান।
ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসে। এরপর শুরু হয় ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ। সেই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পুরো জেলায় প্রায় ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৫৭৮টি বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. মোতাহার হোসেন।
তিনি জানান, মোট বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৪ লাখ ৯০ হাজার ৪৫৬ জন। মোট লাইন নির্মাণ হয়েছে ৭ হাজার ৮০৮ কিলোমিটার। বিদ্যুৎ সংযোগ সহজে পাওয়ায় জেলার যোগাযোগের কেন্দ্রস্থলে একের পর এক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। বিদ্যুৎ সুবিধা কাজে লাগিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জীবনমানে এসেছে বিরাট অগ্রগতি।
বিসিকে কর্মসংস্থান
সকাল হলেই দলে দলে লোক আসেন, আবার বিকেল হলে তারা ফিরে যান। সারাদিন তাদের কর্মচাঞ্চল্যে মুখর হবিগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী। এখানকার ৪২টি ক্ষুদ্র কলকারখানায় কাজ করছেন হাজারও লোক। তারা এখন স্বাবলম্বী, সংসারে এসেছে সুখ-সমৃদ্ধি। তাদের চোখেমুখে এখন সোনালি স্বপ্ন। আর এখানে উৎপাদিত পণ্য যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে।
জেলা কারাগারের কাছেই প্রায় ১৫ একর জমিতে বিসিক শিল্পনগরীর অবস্থান। ১৯৮৬ সালে এটি স্থাপিত হয়। বাস্তবায়নকাল ছিল ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত। শুরুতে এখানে হাতেগোনা কয়েকটি কারখানার কাজ শুরু হয়। এখানে কারখানা স্থাপনে তেমন একটা আগ্রহী ছিলেন না উদ্যোক্তারা। তারপরও কর্তৃপক্ষ উদ্যোক্তাদের নানাভাবে উৎসাহ জোগান। এতে তারা ধীরে ধীরে কারখানা স্থাপন শুরু হয়। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও সড়ক যোগাযোগের সহজলভ্যতাকে কাজে লাগিয়ে মুড়ি, চিড়া, কৃষিপণ্য, কনফেকশনারি খাবার, ময়দার মিল, দরজা-জানালা, কাপড়, মবিল, টায়ার তৈরির কারখানাসহ ৪২টি শিল্পকারখানা স্থাপন করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারও লোকের। এছাড়া আরও ১০টি কারখানার নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন। এসব প্রতিষ্ঠান স্থাপন হলে আরও এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
হবিগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর শিল্পসহায়ক কেন্দ্রের সহকারী মহাব্যবস্থাপক নাজমুল হোসেন বলেন, দিন দিন লোকজন শিল্পমুখী হচ্ছেন। উদ্যোক্তারা কারখানা স্থাপনে আগ্রহী হচ্ছেন, অনেকে কারখানা স্থাপন করেছেন। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন। তাছাড়া আধুনিক বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণে জমি বরাদ্দ দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। বিসিক থেকে সহজ কিস্তিতে ঋণ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, যেভাবে এখানে ক্ষুদ্র শিল্প বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আর কয়েক বছরের মধ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। এখানকার প্রতিষ্ঠানগুলো দেশীয় শিল্প রক্ষায় কাজ করছে।
রেলওয়ে জংশন থেকে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা
দেশেজুড়ে পরিচিত নাম শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন। এ জংশন থেকে বিভিন্ন ট্রেন যোগে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে শত শত যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। এটি ১৯০৩ সালে প্রতিষ্ঠা পায়। সেই থেকে এ পর্যন্ত জংশনটি হবিগঞ্জের ঐতিহ্য বহন করছে। প্রথমে এ জংশনকে ঘিরে গড়ে ওঠে হাট-বাজার। হবিগঞ্জ জেলা প্রতিষ্ঠা পেলে ক্রমান্বয়ে শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়ন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে ১৯৯৯ সালে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠা পায়। এরপর ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠা হয় থানা। সর্বশেষ ২০১৭ সালে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা হয়।
চা উৎপাদন
জেলার বাহুবল উপজেলার আমতলী চা বাগানে ২৮ মার্চ থেকেই এ মৌসুমে চা উৎপাদন শুরু হয়। করোনায় শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে উঁচু ও ঢালু পাহাড়ি জমি থেকে চা পাতা সংগ্রহ করছেন। পরে প্রক্রিয়াজাতের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফ্যাক্টরিতে। সময়ের সঙ্গে এ বাগানের চারপাশে সবুজের সমারোহে শ্রমিকরা কাজ করছে।
যদিও দেশের সিলেট, চট্টগ্রাম ও পঞ্চগড়ে ৭টি ভ্যালির মাধ্যমে প্রায় ২৫৬টি বাগানে চা উৎপাদন হয়ে আসছে। দেশের অন্যান্য বাগানসহ সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলায় অবস্থিত বাগানগুলোতে ব্যাক ‘টি’ উৎপাদন হচ্ছে ব্রিটিশ আমল থেকে। সেই সময় থেকে বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে চা-পাতার উৎপাদন শুরু হয়, সমাপ্ত হয় ডিসেম্বর মাসে। উৎপাদন শেষ হলে চায়ের গাছগুলোকে নানাভাবে পরিচর্যা করা হয়।
প্রতি মৌসুমে হবিগঞ্জে প্রায় দেড় কোটি কেজি চা-পাতা উৎপাদন হয়। এ জেলায় প্রায় ৪১টি বাগানে চা পাতা উৎপাদন হচ্ছে।
হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ
২০১৮ সালে ৫১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের যাত্রা শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি অনুমোদন পায় এই মেডিক্যাল কলেজ। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান ডা. মো. আবু সুফিয়ান।
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
চলতি বছরের মার্চে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. আবদুল বাসেত। রাষ্ট্রপতির এক আদেশে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিসম্পদ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক।
বাংলাদেশের হাওড় অঞ্চল খ্যাত বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ জেলায় দেশের সপ্তম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইনগত অনুমোদন হয় গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর। ২০১৪ সালের ২৯ নবেম্বর হবিগঞ্জ নিউফিল্ডে জনসভায় জেলাবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট চারটি বড় দাবি উপস্থাপন করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি।
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, হবিগঞ্জে কী নেই। একদিকে হাওর, অন্যদিকে পাহাড়। মাটির উপরে হচ্ছে নানা ফসল। স্থাপন হয়েছে শিল্পাঞ্চল। মাটির নিচ থেকে উত্তোলন হচ্ছে গ্যাস ও তেল। শিল্পাঞ্চলে লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। স্থানে স্থানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ভবন, রাস্তা ও ব্রিজ হওয়ায় তৃণমূল মানুষের জীবনমান এগিয়েছে।
হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির বলেন, সরকারের একের পর এক বরাদ্দে হবিগঞ্জ জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। গ্রাম রূপ নিয়েছে শহরে। শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠায় লাখো বেকার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।