‘হামলাও করলো ওরা, মামলাও করলো ওরা’

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা : আওয়ামী লীগ সরকার আবারো ক্ষমতায় থাকার জন্য ডিজিটাল ফর্মুলা বাস্তবায়ন শুরু করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসার প্রথম দিন দানারহাট এলাকায় গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে ওই এলাকার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের হামলায় পাঁচ/ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর ও ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়। কিন্তু নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু থাকার জন্য দলীয় কর্মীদের উস্কানিতে পা না বাড়াতে পরামর্শ দেই এবং হামলার ঘটনায় জেলা রিটার্নিং অফিসারকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করি। কিন্তু এক দলীয় শাসন ব্যবস্থার সরকার প্রমাণ দিল- যারাই হামলা করলো, আবার তারাই মামলা করলো।’

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় ঠাকুরগাঁওয়ে তিন দিনের নির্বাচনী প্রচার শেষে প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।

ওই দিনের ঘটনায় আওয়ামী লীগ বিএনপির ৫৭ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আইন শৃঙ্খলবাহিনী একজনকে আটকও করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সকল দল যখন সরকার পতন করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তখন নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। সরকার ইতোমধ্যে বিএনপির গণজোয়ারে হতাশ হয়ে পড়েছে। তাই দলীয় ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে নির্বাচন বানচাল করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে তারা।’

নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইসি ভোটের আগে নতুন কোনো মামলা, গ্রেপ্তার ও হয়রানি না করার কথা দিয়েছিল। সংলাপে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন আর কোনো মামলা, গ্রেপ্তার করা হবে না। সুষ্ঠু পরিবেশে সকল দলের অংশ গ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু  তা বাস্তবায়ন কতটুকু পত্রিকা ও টিভিতে চোখ রাখলেই বুঝা যায়।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ফের বলেন, ‘কোনো উস্কানিতে পা দেবেন না। আমরা নির্বাচনে যাব এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেখব। জাতির এই কঠিন সংকটে নির্বাচনই হচ্ছে একমাত্র পথ যার মাধ্যমে আমরা পরিবর্তন আনতে পারি। বিএনপির কোনো বন্দুক-পিস্তল-অস্ত্র নেই। শুধু রয়েছে ভোটের দিনে একটি ব্যালট পেপার। যা দিয়ে সরকার পরিবর্তন করা যেতে পারে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জনগণই পারে ধানের শীষে একটি করে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে।’

এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি পয়গাম আলীসহ জেলা ও উপজেলা নেতা-কর্মী ও ঠাকুরগাঁও জেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের প্রার্থী সংসদ রমেশ চন্দ্র সেন অভিযোগ করে বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা সাজানো ও নির্বাচনী কৌশল।’ আর এই মিথ্যা ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন রমেশ চন্দ্র।

উল্লেখ, নির্বাচনী প্রচারে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে ১১ ডিসেম্বর এসেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি আজ শুক্রবার রাতে বগুড়া-৬ আসনে নির্বাচনী প্রচারের জন্য ঠাকুরগাঁও ত্যাগ করবেন।




রাইজিংবিডি/ঠাকুরগাঁও/১৪ ডিসেম্বর ২০১৮/তানভীর হাসান তানু/সাইফুল