যবিপ্রবিতে হুমকি প্রতিবাদে শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে হুমকির প্রতিবাদে অনিদিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক পরিষদ।
শনিবার দুপুরে হুমকিদাতার বিচার দাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন শেষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে হুমকিদাতার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছেন। শিক্ষকরা ক্লাসে যাবে না।
দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। শিক্ষকরা জানান, গত ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ২৪মিনিটে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল মোবাইল ফোনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ইকবাল কবীর জাহিদকে অকথ্য ভাষা গালিগালাজ করেন। এ সময় তিনি দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। হুমকি দেওয়ার পর তিনি ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকে ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অশান্ত করে তুলেছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ, কমর্কর্তা-কর্মচারীদের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
শিক্ষকদের মানববন্ধন চলাকালে শেখ হাসিনা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমাইয়ারা আজমীরা এরিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ সময় তারা শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।
হুমাইয়ারা আজমীরা এরিন দাবি করেন, ক্যাম্পাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারে ব্যবহৃত নৌকা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে অপসারণের দাবি করছেন।
অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, যে নৌকা পোড়ানোর কথা বলা হচ্ছে, সেটি সঠিক নয়। র্যাগিং বিরোধী বিলবোর্ড টাঙানোর কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘টেন্ডারের মাধ্যমে শহীদ মশিয়ুর রহমান হলে নিম্নমানের চেয়ার টেবিল সরবরাহ করা হয়েছে। বিলে আমি আপত্তি করেছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।’’
দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় অধ্যাপক ইকবালকে হুমকি দিয়েছে। বিপুল কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল না। তিনি বহিরাগত। হুমকির বিষয়টি দুঃখজনক।
তিনি বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসে গতবার নতুন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং করা হয়েছে। এবার আমরা আগে থেকে র্যাগিংবিরোধী সচেতনতা পোস্টার করেছি। সেগুলো ছিড়ে ফেলা হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় চালু থাকবে। আমি শিক্ষকদের সঙ্গে বসব। তারা ক্লাসে ফিরে যাবে, এটা আমার বিশ্বাস।’’
রাইজিংবিডি/যশোর/১২ জানুয়ারি ২০১৯/বি এম ফারুক/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন