ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যার পরিকল্পনা করে তানিয়া

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ২৮ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যার পরিকল্পনা করে তানিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : স্বামীর গলা কেটে মাথা আলাদা করে এটি ছেলেধরার কাজ বলে চালিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল সৌদি প্রবাসী তানিয়া খাতুনের। বিদেশে বসে এই নারী পরকীয়া প্রেমের জন্য এমন পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে তার সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। রাজশাহীর পুলিশ ইতিমধ্যে তানিয়ার পরকীয়া প্রেমিকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

তানিয়া বাগেরহাটের মোল্লাহাট থানার গোড়ফা গ্রামের কাঞ্চু শিকদার ওরফে কাঞ্চনের স্ত্রী। কাঞ্চনের বাবার নাম জালাল শিকদার। একই গ্রামের রবিউল শেখের ছেলে রাসেল শেখের (২৪) সঙ্গে তানিয়ার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার অন্য তিনজন হলেন- নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে মো. সজীব (১৯), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকার মো. পারভেজ ওরফে মোশাররফ হোসেনের ছেলে মিরাজ হোসেন (১৯) এবং পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগি গ্রামের মজিব মৃধার ছেলে মো. কাওসার (২০)। কাওসার ভাড়া থাকেন ফতুল্লা এলাকায়। এই তিন যুবক তানিয়ার পরকীয়া প্রেমিক রাসেলের বন্ধু।

তাদের গ্রেপ্তারের পর রোববার দুপুরে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, রাসেলের পরকীয়া সম্পর্কে তানিয়ার ‘বাঁধা’ তার স্বামী কাঞ্চন। তাই কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তানিয়া ও রাসেল। তারা রাজশাহীতে কাঞ্চনকে গলা কেটে হত্যার পর এটি ছেলেধরাদের কাজ বলে চালিয়ে দেয়ার ছক কষেন।

পরিকল্পনা মতো পাসপোর্ট করানোর নাম করে রাসেল তার তিন বন্ধুর সহায়তায় কাঞ্চনকে রাজশাহী নিয়ে আসেন। কিন্তু এখানে আসার পর পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

এসপি জানান, শনিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে কাঞ্চনকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বাসুদেবপুর ফুলতলা বাজারে নিয়ে যান মিরাজ ও কাওসার। সেখানে কাঞ্চনের মনে সন্দেহ জাগে। তাই তখন তিনি চিৎকার করতে করতে দৌঁড় দেন। এ সময় বাজারের লোকজন মিরাজ ও কাওসারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ছুরি ও চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করেছে।

থানায় নেয়ার পর পুলিশের জেরার মুখে তারা জানান, আসলে তারা ছেলেধরা নন। কাঞ্চনকে অচেতন করে তার গলা কেটে মাথা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তারা। পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে কাঞ্চন খুন হতেন বলে জানান তারা।

পরে মিরাজ ও কাওসারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে রাসেল ও সজীবকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।

এসপি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে গ্রেপ্তার চারজনের মোবাইল ফোনে আদান-প্রদান হওয়া  ক্ষুদেবার্তায়ও প্রমাণ মিলেছে। সৌদি আরবে অবস্থানরত তানিয়া তার স্বামীকে হত্যার জন্য ২০ হাজার টাকাও পাঠিয়েছেন।

রাজশাহীর চারঘাট থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর কাঞ্চন ভয়ে বাগেরহাট চলে গেছেন। তবে তাকে ডাকা হচ্ছে। তিনি আসছেন। আর তার আসতে দেরি হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকেই গ্রেপ্তার চারজন ও প্রবাসী তানিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। চারঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বজলুর রহমান মামলার বাদী হচ্ছেন।

সোমবার সকালে ওই চার যুবককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানান ওসি।


রাইজিংবিডি/রাজশাহী/২৮ জুলাই ২০১৯/তানজিমুল হক/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়