ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

৪৮ শতাংশ ভোটার যেদিকে, রংপুরে জয় সেদিকে

নজরুল মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫৭, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৪৮ শতাংশ ভোটার যেদিকে, রংপুরে জয় সেদিকে

গত নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি না বোঝায় অর্ধেক ভোটারই ভোটদানে বিরত ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর: এ মুহূর্তে রংপুর সদর আসনের উপ নির্বাচন দেশজুড়ে আলোচনায়। প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি- প্রধান এই তিনটি রাজনৈতিক দলই। এখন ভোটের পালা।

স্থানীয় বিশ্লেষকদের ধারণা, গত নির্বাচনের মত ভোটাররা ইভিএম থেকে বিরত থাকলে এই আসনে বেকায়দায় পড়বে আওয়ামী লীগ। আর গত নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকা ৪৮ শতাংশ ভোটারকে যে কেন্দ্রে নিতে পারবে জয়ের পাল্লা থাকবে তারই দিকে।

এবার ফ্লাশব্যাকে ফিরে যাওয়া যাক- গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুর সদর আসনে ভোট পড়েছিল ৫২ শতাংশ। ভোট গ্রহণ হয়েছিল ইভিএম পদ্ধতিতে। ভোটদানে বিরত ছিল ৪৮ শতাংশ ভোটার। অনেকের মতে ইভিএম পদ্ধতি সঠিকভাবে না জানার কারণে দেশের অন্যান্য আসনগুলোর চেয়ে এই আসনে ভোটের সংখ্যা কম ছিল।

উপ-নির্বাচনে এবারো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হবে এ আসনে। স্থানীয় ভোটা বিশ্লেষকরা মনে করছেন গত নির্বাচনে ভোট থেকে বিরত থাকা ৪৮ শতাংশই হবে এবারের নির্বাচনের ফ্যাক্টর। যে এই ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে পারবে, জয় তারই হবে।

একাদশ সংসদ নির্বাচন জোটগতভাবে হওয়ায় আওয়ামী লীগ অংশ গ্রহণ করেনি। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আওয়ামী লীগ এই আসনে এবার জাপার মূল প্রতিপক্ষ।

নির্বাচন অফিসের সূত্রমতে, এ আসনে ভোটারের সংখ্যা ৪ লাখ ৪২ হাজার ১৪৯। একাদশ সংসদ নির্বাচনে এইচএম এরশাদ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৯২৬ ভোট । বিএনপি জোটের প্রার্থী রিটা রহমান পেয়েছেন ৫৩ হাজার ৮৯ ভোট। মোট ভোট কাস্ট হয়েছিল ৫২ শতাংশ। এবার আওয়ামী লীগকে বিজয়ী হতে হলে ভোট প্রদানের হার বাড়ানোর বিকল্প নেই।

বিশ্লেষকদের মতে, এই আসনে জাতীয় পার্টির বড় একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে। বিগত নির্বাচনে বিএনপিও খারাপ করেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন থেকে এই আসনে নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছে। তাই গত নির্বাচনে যারা ভোট কেন্দ্র গমনে বিমুখ ছিল তাদের ভোটপ্রদানে উৎসাহিত করতে প্রথমে আওয়ামী লীগকেই এগিয়ে আসতে হবে। গত নির্বাচনের মত বিশালসংখ্যক ভোটার যদি এবারো ইভিএম থেকে বিরত থাকে তা হলে সরকার দলীয় প্রাথীর বেকায়দায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিগত সংসদ নির্বাচনে শহর কেন্দ্রিক ভোটাররা ইভিএম পদ্ধতিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও গ্রামাঞ্চলের ভোটারদের ইভিএমে খুব একটা আগ্রহ দেখা যায়নি।

সমাজকর্মী হুমায়ুন কবির, চাকরিজীবী রমজান আলী, ব্যবসায়ী আলি হোসেনসহ অনেকেই বললেন, ইভিএম পদ্ধতি ভালো। তবে এই আসনের অধিকাংশ ভোটারই গ্রামের বাসিন্দা। তারা এখনও অনেকে ইভিএম পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে বোঝেনা। সে কারণে এখানে ইভিএম পদ্ধতির নেতিবাচক দিকই বেশি। এ আসনে ইভিএম পদ্ধতি কতটা কার্যকর হবে তা আগাম বলা যাচ্ছেনা। কারণ, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম না বোঝা এবং পছন্দের প্রার্থী না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক ভোটারই ভোটদান থেকে বিরত ছিল।

এদিকে বিগত সংসদ নির্বাচনে নগরীর নুরপুর এলাকায় ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নষ্ট হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন ভোটাররা। ইভিএম বিকল হওয়ায় একটি কক্ষের ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল সাড়ে চার ঘন্টা। পরে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে নতুন মেশিন এনে সেখানে ভোটগ্রহণ করা হয়। ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, ‘গত নির্বাচনে ইভিএমে ভোট দিতে অনেকেই বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। এবার যাতে সে রকম না হয় সেই দিকে আগেভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

রংপুর সদরের নির্বাচন অফিসার কামরুল ইসলাম জানান, গত সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে ইভিএম ব্যবহার হয়েছে। এ পদ্ধতি সম্পর্কে ভোটারদের ধারণা রয়েছে। সাধারণ ভোটাররা এর ব্যবহারে অভ্যস্থ না হলেও আমরা চেষ্টা করছি এ পদ্ধতি সম্পর্কে মানুষকে জানাতে।



রাইজিংবিডি/রংপুর/৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯/নজরুল মৃধা/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়