ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ওসির নামে ছড়ানো অশ্লীল ভিডিওটি পর্ণো সাইটের!

জেলা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওসির নামে ছড়ানো অশ্লীল ভিডিওটি পর্ণো সাইটের!

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানার ওসির নামে ছড়ানো অশ্লীল ভিডিওটি ভূয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে। ভিডিওটি একটি ভারতীয় পর্ণো সাইট থেকে নিয়ে এডিট করা বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন কটিয়াদী থানার ওসি আবু শামা মোহাম্মদ ইকবাল হায়াত। তিনি জানান, ভিডিওটি ভারতীয় একটি পর্ণো সাইট থেকে নেয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ছড়ানো অশ্লীল ভিডিওটি ছেড়ে তাকে এবং পুলিশ বাহিনীকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

উল্লেখ‌্য, কটিয়াদী থানার ওসি আবু শামা মোহাম্মদ ইকবাল হায়াত ও এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে সামাজিক মাধ‌্যম ফেসবুকে ছাড়া হয়। ভিডিওটি খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। এ নিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে সেই সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। কটিয়াদী মডেল থানায় করা মামলাটি বর্তমানে ডিবি’র মাধ্যমে তদন্ত হচ্ছে।

মামলায় কটিয়াদী পৌর এলাকার আসাদ মিয়ার ছেলে হিমেল ও সৈয়দ সামছুদ্দোহার ছেলে কটিয়াদী প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ মুরছালিন দারাশিকোর নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর রাতেই মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে রাতেই মুচলেকা নিয়ে সাংবাদিক দারাশিকোকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরদিন প্রধান আসামি হিমেলকে আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি'র পরিদর্শক মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানী শেষে বিচারক তাছলিমা আক্তার আসামির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সে সময় ডিবি'র পরিদর্শক ওই অশ্লীল ভিডিও চিত্র ভারতীয় পর্ণো সাইট থেকে নেয়ার বিষয়টিও অবগত হয়েছেন বলে স্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে আজ মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, প্রথমে একটি ভিডিও ভাইরাল করা হয় এবং পরে একটি আনকাট ভিডিও পাওয়া গেছে। বিষয়টি ডিবিকে দেয়া হয়েছে তদন্ত করার জন্য। অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য আমরা সিআইডিরও সহযোগিতা নিতে পারি। ভিডিওটি গুরুত্বসহকারে সাইবার এক্সপার্টদের দিয়েও যাচাই করা হচ্ছে। অন্যদিকে ওই নারীর করা মামলাটিও তদন্ত করা হচ্ছে।

মামলায় বিবরণে জানা যায়, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে হিমেলের সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত হিমেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। হিমেল গোপনে তার মোবাইল ফোন থেকে স্বামীর সঙ্গে মেলামেশার কয়েকটি ছবি নিজের মোবাইলে নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে সম্পর্ক করতে রাজি না হওয়ায় সাংবাদিক দারাশিকোর সহযোগিতায় হিমেন্এ নারীর নগ্ন ছবি বিভিন্ন মোবাইলে দিয়ে ভাইরাল করে দেয়।

গত ২৯ আগস্ট হিমেল তার মোবাইলের ইমো আইডি থেকে ওই নারীর এক দেবরের মোবাইলে এক পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দু’টি ছবি পাঠায়। ওই নারীর দাবি ছবির মুখমণ্ডল তার হলেও শরীর অন্য কারো।

ওই নারী বলেন, ‘গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রিয়া সুলতানা নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে আমাকেসহ ওসি সাহেবের নামে বিভিন্ন অপবাদ ছড়ানো হয়। আসামিরা আমার ছবি বিকৃত করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন ও আমার মর্যাদা ক্ষুন্ন করছে। ওসি সাহেব একজন সরকারি কর্মচারী হওয়ায় তার সুনামও ক্ষুন্ন হয়েছে।’


কিশোরগঞ্জ/রুমন চক্রবর্তী/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়