ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

এনজিও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

উপজেলা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এনজিও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ধামরাইয়ে ডাচ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির সদস্যদের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় জেলা সমবায় কার্যালয়ের তদন্ত ও যাচাই চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন সমিতির সম্পাদক মো. আরফান মিয়া।

জানা যায়, ২০১০ সালের ফ্রেরুয়ারিতে ধামরাই উপজেলার মলয়ঘাট এলাকায় রেজি. নম্বর-১৪৯ নিয়ে কাজ শুরু করে ডাচ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি। এতে সমিতির সভাপতি হিসেবে মো. শরিফুল ইসলাম এবং সম্পাদক হিসেবে মো. আরফান মিয়া ও ক্যাশিয়ার হিসেবে শরিফুলের ভাবি সুরভী আক্তারকে নির্বাচিত করা হয়। তবে শুরু থেকেই শরিফুল ইসলাম সমবায়ের আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে এককভাবে সব পরিচালনা করতে থাকে। এরপর ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পর থেকে সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে কোনো সভা করেননি। এমনকি বার্ষিক সভা ও অডিট বন্ধ করে দেন শরিফুল।

সংস্থাটির রেজিস্টার খাতা ও হিসাব খাতারও কোনো হদিস নেই বলে অভিযোগ করেন সম্পাদক আরফান মিয়া।

তিনি বলছেন, ‘সমবায় সমিতির নামে সদস্যদের কাছ থেকে এককালীন ডিপোজিট হিসেবে ৪০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করে শরিফুল। পরে সেসবের অডিট না দিতে পারায় তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এরইমধ্যে সমবায়ে সময় না দিয়ে ধামরাই বাজারে নিজের নামে উদয় বস্ত্রালয় নামে একটি প্রতিষ্ঠান করেন তিনি।’

আরফান মিয়া আরো বলেন, ‘সমিতির অনিয়ম দেখে জেলা ও উপজেলা সমবায় অফিসে অভিযোগ জানাই। এরপর থেকে সমিতির অফিসের দরজা আমার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে আমি ধামরাই থানায়  সাধারণ ডায়েরি করি। থানা থেকে আমাদের দুইজনকেই ডাকা হয়েছিল। সেসময় ৪০ লাখ টাকা শরীফ আমাকে ফিরিয়ে দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সে আমাকে ৪০ লাখ টাকার একটি চেকও দেয়। কিন্তু চেকের ব্যালেন্স না থাকায় আজ পর্যন্ত টাকা না পেয়ে আমি চেক ডিজঅনার করে কোর্টে মামলা দায়ের করি। সে মামলাও চলমান।’

এদিকে এই ঘটনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে উপজেলা সমবায় অফিস থেকে সমিতির যাচাই প্রসঙ্গে একটি নোটিশ জারি করে সকল রেজিস্টার ও খাতাপত্র নিয়ে আরফান ও শরিফুলকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন।

পরে দেখা যায়, ২০১০ সাল থেকে সমিতির ক্যাশিয়ারের সব দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মো. শরিফুল ইসলাম। এসময় সমিতির যৌথ অ্যাকাউন্ট সোনালি ব্যাংক ধামরাই শাখায় লেনদেন না করে উক্ত সংস্থার সকল লেনদেন তার নিজ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করেন। এ ছাড়া শরিফুল নিজেই সম্পাদক ও ক্যাশিয়ারের কাজ করেন।

নিজের অ্যাকাউন্টে লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করে চেক দেয়ার কথা উল্লেখ করেন সমিতির সভাপতি মো. শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ধামরাই উপজেলা সমবায় সমিতির কর্মকর্তা অডিট কমিটি করার জন্য আমাদেরকে ডাকলে আমি সমিতির সভাপতি হিসাবে উপস্থিত হই। তবে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আরফান মিয়া সেখানে উপস্থিত হননি।’

তবে এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি শরীফুল ইসলাম।

এদিকে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ধামরাই উপজেলার সমবায় সমিতির কর্মকর্তা পারভীন আশরাফি।

তিনি বলেন, ‘ডাচ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির সভাপতির নামে সাধারণ সম্পাদক গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। ঘটনার তদন্ত করে একটা প্রতিবেদন জেলা সমবায় অফিস বরাবর দেয়া হয়েছে। গ্রাহকদের পাওনা টাকা যেন ফিরিয়ে দেয়া যায় সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এই ব্যাপারে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সামিউল হক বলেন, ‘সমিতির নামে বরাদ্দকৃত জলমহাল অন্য কোথাও হস্তান্তর করতে পারবে না। যদি সমিতির লোকজন করে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

সাভার/সাব্বির/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়