চলন্ত বাস থেকেই যাত্রী অপহরণ!

নরসিংদীর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলন্ত বাসে যাত্রী অপহরণের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের পরই দুর্বৃত্তরা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা চালায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

ঘটনায় জড়িত ৪ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) । এরা হলেন, নরসিংদী সদর উপজেলার আসমান্দীচর গ্রামের হাসিম মিয়া ছেল জাকির হোসেন (২৮), কাকশিয়া গ্রামের মোঃ শুক্কুর আলীর ছেলে মোঃ শাহজালাল (২২), পাঁচদোনা গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে রানা মিয়া (২২) ও স্বর্পনিগর গ্রামের ইউনুস মিয়া ছেলে আবু তাহের (২০) ।

জেলা গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিদর্শক জাকারিয়া আলমের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল শনিবার বিকালে তাদের গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানিয়েছে এরা পেশাদার অপহরণকারী ও মুক্তিপণ আদায়কারী।

পুলিশ জানায়, অপহৃত হওয়া মাহবুব হাসানের বাড়ি পাবনার আটঘরিয়া এলাকায়। তিনি নরসিংদী শহরের বিলাসদী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থেকে মাধবদীতে একটি স্পিনিং মিলের প্রোডাকশন অফিসার হিসেবে চাকরি করতেন। মাহবুব গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর শেখের চর থেকে বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে একটি লোকাল বাসে উঠেন। বাসটি ভেলানগর মোড়ে আসার পর বাসে যাত্রীবেশে থাকা চার অপহরণকারী কৌশলে মাহবুবকে বাসের ভেতর জিম্মি করে রাখে। এসময় দ্রুত বাসটি ঘুরিয়ে পাঁচদোনার দিকে যেতে থাকে। পরে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখে মাহবুবের মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রীর নম্বরে ফোন করে জিম্মি করার কথা জানিয়ে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। দাবিকৃত মুক্তিপণ না দিলে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়া হয়। এসময় মাহবুবকে মারধরও করা হয়।

পরে মাহবুবের স্ত্রী কামরুন্নাহার খুশি এ ঘটনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে জানান। গোয়েন্দা পুলিশ অপহরণকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করে শুক্রবার রাতে পাঁচদোনা মোড় এলাকায় অভিযান চালায়। টের পেয়ে অপহরণকারীরা সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা রেখে মাহবুবকে পাঁচদোনা মোড়ের ঝংকার সিনেমা হলের সামনে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে উদ্ধার হওয়া মাহবুব হাসানের দেয়া তথ্যমতে শনাক্ত করে শনিবার বিকালে অপহরণকারী চক্রের ২ সদস্যকে নরসিংদী শহরের জেলখানা মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যমতে আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের নামে অস্ত্র, ছিনতাই, অপহরণ, চুরিসহ বিভিন্ন আইনে মামলা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশ এর উপ পরিদর্শক জাকারিয়া আলম।


নরসিংদী/গাজী হানিফ মাহমুদ/টিপু