ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

হেমন্তের বাতাসে ছড়ায় কমলার ঘ্রাণ

সাইফুল্লাহ হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হেমন্তের বাতাসে ছড়ায় কমলার ঘ্রাণ

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে ছোট-বড় টিলার ঢালে হাজার হাজার কমলাগাছ। সারি সারি গাছের পাতার ফাঁকে উঁকি দেয় সবুজ আর সোনালি কমলা। হেমন্তের বাতাসে ছড়ায় কমলার ঘ্রাণ।

গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের রূপাছড়া, লালছড়া, হায়াছড়া, শুকনাছড়া, কচুরগুলসহ পাহাড়ি এলাকায় এসব কমলা চাষ হয়। দেশজুড়ে এসব কমলার বেশ সুনাম আছে।

এখন কমলার মৌসুম। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাগানে ব্যস্ত সময় পার করছেন কমলাচাষি ও শ্রমিকরা।

চাষিরা জানান, জুড়ীতে মূলত দুই ধরনের কমলার চাষ হয়- নাগপুরী ও খাসি। এখানে খাসি কমলার চাষ বেশি হয়। নাগপুরী কমলাগুলো আকারে বড়, খাসি তুলনামূলক ছোট।

কয়েকটি কমলাবাগান ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রির জন্য বাগান থেকে পাকা কমলা সংগ্রহ করছেন চাষিরা। পরে বাড়ির উঠোনে এনে আকার অনুসারে বাছাই করছেন। এসব কমলা ঢাকা, ভৈরব, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর জন্য পাকা, আধা পাকা, ছোট ও বড়গুলো আলাদা আলাদা করে বাঁশের তৈরি খাঁচায় গুছিয়ে রাখছেন।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় ১৭৮ হেক্টর জমিতে ১৪৬টি কমলাবাগান আছে। জুড়ী উপজেলায় ৯২ হেক্টর, বড়লেখায় ৬০ হেক্টর, কুলাউড়ায় ২০ হেক্টর জমিতে কমলা চাষ হয়। কমলাচাষি ১৪৬ জন। গত বছর প্রতি হেক্টরে কমলার উৎপাদন ছিল চার থেকে সাড়ে চার টন। এবছর প্রতি হেক্টরে ৬ টন কমলা উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কথা হয় উপজেলার লালছড়া এলাকার কমলা বাগানের মালিক জয়নুল ইসলামের সঙ্গে। তার বাগানে কমলাগাছ আছে ১ হাজার ২০০টি। তিনি রাইজিংবিডিকে জানান, এবছর কমলার ফলন ভালো হয়েছে। তবে পোকামাকড়ের আক্রমণে কিছু কমলা নষ্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছি। আশা করছি, আরো ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারব।

ভারতীয় কমলা আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলন, ভারতীয় কমলার জন্য আমরা সঠিক দাম পাই না। পুরোপুরিভাবে যদি কমলা আমদানি বন্ধ করা যেত তাহলে আমরা লাভবান হতাম। ভারতীয় কমলা মিষ্টি হওয়ায় চলে ভালো। কিন্তু সিলেটি কমলা একটু টক হওয়ায় অনেকে নিতে চায় না।

স্থানীয় আরেক কমলা চাষি জাছির আহমদ বলেন, দেশীয় কমলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও ভারতীয় কমলা আমদানি বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের চাষ করা কমলা দিয়েই দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী রাইজিংবিডিকে জানান, কৃষক ভাইয়েরা আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী কমলাগাছের যত্ন করেছেন। পোকামাকড়, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ফলে এবছর কমলার ফলন ভালো হয়েছে।

ভারতীয় কমলার বিষয়ে তিনি বলন, মৌলভীবাজারে যখন কমলা সংগ্রহ শুরু হয়, এর আগেই ভারতীয় কমলা বাজারে চলে আসে। ওদের কমলাটা আরেকটু আগাম। আমাদেরকে হয়তো ভবিষ্যতে আরো আর্লি ভেরাইটি বের করতে হব। লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ প্রকল্পে (২০১৯-২০২৪) বছরমেয়াদি একটি প্রকল্প চালু হবে। সেখানে বারি কমলা-১, ২ ও ৩ দিয়ে নতুন বাগান করা শুরু হবে।

 

আরো পড়ুন > 

 

মৌলভীবাজার/সাইফুল্লাহ হাসান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়