ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

কবিগুরুর ম্যুরাল উন্মোচনে শতবর্ষ স্মরণোৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৬, ৫ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কবিগুরুর ম্যুরাল উন্মোচনে শতবর্ষ স্মরণোৎসব

১৯১৯ সালের ৫ নভেম্বর সিলেট এসেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার সফরসঙ্গী ছিলেন পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও পুত্রবধু প্রতিমাদেবী। চার দিন অবস্থানও করেন এ শহরে। যোগ দেন একাধিক অনুষ্ঠানেও। সিলেটে কবিগুরুর আগমনের শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে আজ।

এ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে আয়োজন করা হয়েছে ‘সিলেটে রবীন্দ্রনাথ: শতবর্ষ স্মরণোৎসব’। চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়েছে ক্বীন ব্রীজের নিচের মুক্তমঞ্চে। বিকেল সাড়ে ৩টায় ক্বীন ব্রীজের নিচে কবিগুরুর ম্যুরাল উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে মঞ্চে আগমনী সংগীতের সাথে নৃত্য পরিবেশ করেন শতাধিক নৃত্য শিল্পী।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্মরণোৎসব উদযাপন পর্ষদের আহবায়ক ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘একশ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ সিলেট এসেছিলেন। তিনি সিলেটে তিন দিন অবস্থান করেছিলেন। তিনদিন পর তিনি সিলেট থেকে ফিরে যান। তার আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতেই এ কর্মসূচির আয়োজন।’

এরপর থেকে মঞ্চে আবৃত্তি, গান, নৃত্য পরিবেশন করছেন শিল্পীরা। মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে এসব অনুষ্ঠান। এর আগে দুপুরে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবন থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। যা বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ সিসিকের সকল কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নগরবাসী অংশ নেন।

এদিকে সকাল সাড়ে ৭টায় সিলেট ব্রাহ্মসমাজের আয়োজনে সুরমার তীরের চাঁদনীঘাটে রবী ঠাকুরের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে সেখান থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে বন্দরবাজারের ব্রাহ্ম মন্দিরে আসা হয়। পরে মন্দিরে ‘শব্দে ছন্দে রবীন্দ্র স্মরণ’ অনুষ্ঠান করা হয়। সন্ধ্যায় কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে ‘আজি এ আনন্দ সন্ধ্যা’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। এখানে দুই বাংলার রবীন্দ্র গবেষকরাও উপস্থিত আছেন।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন বুধবার বেলা আড়াইটা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নগরীর মাছিমপুরে মনিপুরী রাজবাড়ীতে শতবর্ষ উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে কবিগুরুর ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি, আলোচনা সভা, রাখাল নৃত্য, রাসনৃত্যসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

একই দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত পর্যন্ত চৌহাট্টাস্থ সিংহবাড়ীতে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এখানে অতিথি হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত থাকবেন।

এছাড়া শতবর্ষী এমসি কলেজেও অনুষ্ঠানমালার আয়োজন রয়েছে। কলেজের শিক্ষাবিদ মিলনায়তন কক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও দক্ষিণ এশিয়া শীর্ষক সেমিনার। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সেমিনার উদ্বোধন করবেন। দুই পর্বের বিদ্যায়তনিক অধিবেশন বাংলাদেশ ও ভারতের শতাধিক রবীন্দ্র গবেষক ও শিক্ষাবিদ অংশ নেবেন।

এরপর ৭ ও ৮ নভেম্বর বিকেল ৪টা থেকে দু’দিন অনুষ্ঠান হবে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। ৭ নভেম্বর বিকেলে মোহাম্মদ আলী জিমনেসিয়ামে রবীন্দ্রনাথের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সংগৃহীত ছবি নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনি শুরু হবে। একই সাথে স্টেডিয়ামে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও থাকবে।

উৎসবের সমাপনী দিন সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য আয়োজন রয়েছে। যেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।

এছাড়া আবৃত্তি, আলোচনা ও দলীয় নৃত্যের পাশাপাশি একক পরিবেশনা নিয়ে উপস্থিত হবেন সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, লাইসা আহমেদ লিসা, ড. অনুপম কুমার পাল, ড. অসীম দত্ত এবং ভারতের মেধা বন্দ্যোপাধ্যায়, পদ্মশ্রী পূর্ণদাস বাউল ও অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বাংলাদেশ ও ভারতের খ্যাতিমান শিল্পীরা।


সিলেট/আব্দুল্লাহ আল নোমান/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়