ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

‘তথ্য আপা’য় আলোকিত চুনারুঘাট

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৬ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘তথ্য আপা’য় আলোকিত চুনারুঘাট

জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় ‘তথ্য আপা’ সেবাটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে ছাত্রী ও সুবিধাবঞ্চিত তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয়।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকারের নতুন সেবা ‘তথ্য আপা’। তথ্য আপার কাজ হচ্ছে- কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন সহায়তা, জেন্ডার ও ব্যবসায় উন্নয়ন, নির্যাতিত নারী, সুবিধাবঞ্চিত নারীদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে জাতীয় মহিলা সংস্থা। এ উপজেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার নারী ‘তথ্য আপা’র কাছ থেকে বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করেছে।

উপজেলা ‘তথ্য আপা’ কেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন তথ্যসেবা কর্মকর্তা সোনালি রাণী, তথ্যসেবা সহকারী রিপা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস ও অফিস সহায়ক মো. হাসান আলী।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ‘তথ্য আপা’ যৌতুক নিরোধ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেয়েদের বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও প্রতি মাসে উঠান বৈঠক করে তৃণমূল নারীদের সচেতন করছেন। এতে বিশেষ করে চুনারুঘাট উপজেলা জুড়ে ‘তথ্য আপা’র সেবায় বঞ্চিত নারীরা আলোকিত হচ্ছেন।

শিক্ষার্থী পপি আক্তার রাইজিংবিডিকে জানান, বিএ পাস করেছি। বিভিন্ন জায়গায় চাকরির চেষ্টা করছি। তথ্যকেন্দ্রে তথ্য আপার কাছে গিয়ে অনলাইনে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আবেদন করি। আমার অনেক ঝামেলা করে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, আমি বড় ধরনের সমস্যায় পড়ে তথ্য আপার সহযোগিতায় বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পেয়েছি।

উপজেলার পানছড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা তাসলিমা আক্তার, জয় রাণী, তামান্না আক্তার বলেন, আমরা অন্ধকারে ছিলাম। তথ‌্য আপা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছেন। আমরা আর বসে থাকি না। যেকোন প্রয়োজনে আপার সাথে দেখা করে প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করি। 

গোঁড়ামি গ্রামের বাসিন্দা নারী নেত্রী বকুল তালুকদার রাইজিংবিডিকে জানান, তথ্যকেন্দ্রের আপারা উপজেলার গ্রামে গ্রামে গিয়ে ইন্টারনেট, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি বিষয়ক উঠান বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা করে থাকেন।

তারা আমাদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন। এতে করে উপকৃত হচ্ছেন নারীরা। তার সাথে সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হচ্ছে। এভাবে শত শত সেবা বঞ্চিত নারী তথ্য আপার সেবা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন।

উপজেলা তথ্যসেবা সহকারী রিপা বেগম ও জান্নাতুল ফেরদৌস রাইজিংবিডিকে বলেন, অফিসের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ডিজিটাল সেবা কী, কীভাবে সেবা পাওয়া যাবে- এসব বিষয়ে আলোচনা করে থাকি। এতে নারীরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হচ্ছেন। তাই দিনে দিনে এই উপজেলায় ‘তথ্য আপা’ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা সোনালি রাণী রাইজিংবিডিকে বলেন, ভবিষ্যতে সেবার মান আরও বাড়ানো হবে। বর্তমানে এ কার্যালয়ে নারীদের সব ধরনের সেবা বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয়। এ পর্যায়ে দেশে আরও ৪৯০টি উপজেলায় এ তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে বলে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

৫৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটি ২০২২ সালে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম ২০১১ সালে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি ২০১৫ সালে শেষ হয়।

 

হবিগঞ্জ/মামুন/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়