ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

৮ গ্রামের কৃষকের কচুর লতিতে ভাগ্য বদল

সাকিরুল কবীর রিটন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৬, ১৯ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৮ গ্রামের কৃষকের কচুর লতিতে ভাগ্য বদল

কচুর লতি চাষে সাফল্য পেয়েছে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের আট গ্রামের কৃষক। লাভ ভালো হওয়ায় এই ইউনিয়নের বেশির ভাগ কৃষক এখন কচুর লতি চাষে ঝুঁকে পড়েছে।

গত কয়েক বছর ধানের দরপতনে লোকসানের মুখে পড়ে এখানকার কৃষকরা। এ জন্য এই ইউনিয়নের হিংগারপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক আশরাফ আলী বছর তিনেক আগে পরীক্ষামূলকভাবে অল্প পরিসরে কচুর লতি চাষ শুরু করেন। এতে তিনি সাফল্যও পান। তিন বছর ধরে কচুর লতি চাষ করে পরিবার নিয়ে সাচ্ছন্দে রয়েছেন মধ্যবয়সী কৃষক আশরাফ আলী।

তার দেখাদেখি কচুর লতি চাষ শুরু করেন এখানকার শতাধিক কৃষক। বর্তমান এ অঞ্চলের কচুর লতি পাঠানো হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাঘারপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী জহুরপুর ইউনিয়নের হিংগারপাড়া, আটকী, শ্বশাড়পাড়া, গরীবপুর, বেতালপাড়া, হলদা, জহুরপুর ও চাঁদপুরে গ্রামে প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হচ্ছে। ক্ষেত পরিচর্যায় কৃষকদের সঙ্গে কাজ করছেন কৃষাণীরাও। এখানকার শতাধিক কৃষক কচুর লতি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে এদের অধিকাংশই বর্গা চাষি।

আটকী গ্রামের কৃষক সাধন সরকার জানান, এ বছর তিনি এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে কচুর লতি চাষ করছেন। লতি উঠা পর্যন্ত আনুমানিক খরচ হবে ২০ হাজার টাকার মতো। প্রতি সপ্তাহে সার, কীটনাশক ও লতি তোলায় খরচ হচ্ছে ২ হাজার টাকা। গেল বছর এক বিঘা জমিতে লতি চাষ করে এক লাখ টাকার বিক্রি করেছেন। এতে তার লাভ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা।

হিংগারপাড়ার চাষি সাবেক ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর প্রথম দিকে কচুর লতি কেজি প্রতি ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে পেরেছেন। বর্তমানে আশানুরুপ দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এখন ২০ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বেতালপাড়া গ্রামের চাষি মোক্তার হোসেন জানান, আগে ধান চাষ করতেন। গত দুই বছর কচুর লতি চাষ করছেন। এ চাষে কষ্ট বেশি হলেও দাম ভালো পাওয়া যায়। যে কারণে এখানকার শতকরা ৯০ ভাগ কৃষক লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে বলে জানান হাফিজুর রহমান। 

বাঘারপাড়ার খাজুরা হাট ইজারাদার সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভোলা জানান, সপ্তাহের প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার এই হাটে প্রায় হাজার মণ কচুর লতি ওঠে। এখানকার লতি সুস্বাদু হওয়ায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফরিদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যাপারিরা আসেন লতি কিনতে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, যশোরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ কচুর লতি চাষ হচ্ছে বাঘারপাড়ার জহুরপুর ইউনিয়নে। বাঘারপাড়া উপজেলায় ২৬ হেক্টর জমিতে এ বছর কচুর লতি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে জহুরপুর ইউনিয়নে ২২ হেক্টর।



যশোর/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়