ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ব্রিজ আছে সড়ক নেই

আল আমিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ১৯ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্রিজ আছে সড়ক নেই

জেলা শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে কানলার হাওর পাড়ে সিংগিদাইর ব্রিজ। এটি নির্মাণের পর চার বছর শেষ। প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও মাত্র তিন কিলোমিটার সড়কের জন্য গাড়ি যোগাযোগ বন্ধ।

সড়ক যোগাযোগ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের তিনটি ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ।

এলাকাবাসী জানান, জেলা সদরের রঙ্গারচর ইউনিয়ন ও লক্ষীপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান কানলার হাওর। এই হাওরের মধ্যে সড়ক সিংগিদাইর। এই সড়ক দিয়ে দোয়াবাজার উপজেলার সুরমা, লক্ষ্মীপুর, বোগলাবাজার তিনটি ইউনিয়নের চকবাজার, তিলুরা, নোয়াগাঁও, কালাইউড়া, লক্ষ্মীপুর, লিয়াকতগঞ্জ, বাংলাবাজার, বক্তারপুর, রসরাই, নোয়াপাড়া, মাঠগাঁওসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক লক্ষাধিক মানুষের জেলা সদরে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ দিনের দাবি ছিলো সিংগিদাইরে একটি ব্রিজ।

ব্রিজ দিয়ে ওই অঞ্চলের মানুষের জেলা শহরে যেতে সময় লাগে ৪০ মিনিট। আর উপজেলা সদর দিয়ে জেলা শহরে যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। জেলা সদরে যেতে ২২ কিলোমিটার সড়ক। এর মধ্যে ১৯ কিলোমিটার সড়ক পাকা করা হয়েছে। মাত্র তিন কিলোমিটার সড়কের মধ্যে এই ব্রিজের অবস্থান। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণের পরও এখনো সড়কের কাজ হয়নি।

এই সড়কে শুধু মোটরসাইকেল ছাড়া আর কোনো যানচলাচল করেনি। সড়ক ঠিক হলে সিএনজি, লেগুনা, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যাত্রীবাহী যানযাহন চলাচল হলে হাওর পাড়ের মানুষের জীবন বৈচিত্র বদলে যাবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ সালে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আধারবাজার থেকে চকবাজার যাওয়ার পথে কানলার হাওরপাড়ে ৯০ মিটার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করে ‘মের্সাস নুরুল ইসলাম’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ২ বছর পর ২০১৫ সালে নির্মাণ কাজ শেষ করে। নির্মাণ কাজে অনিয়ম করায় সে সময়েও ব্রিজ ধসের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দা আলকাছ মিয়া বলেন, ‘ব্রিজ নির্মাণের চার বছর শেষ কিন্তু এখনো সড়কের কাজ শেষ হয়নি। কেন যে সড়কের কাজ শেষ হচ্ছে না এ নিয়ে চিন্তা আমাদের।’

কর্তৃপক্ষের প্রতি দ্রুত সড়কটি করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

মোটরসাইকেল চালক আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘আমরা উপজেলার অধিকাংশ মানুষ জেলা শহরে যেতে বিকল্প সড়ক হিসেবে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। সামান্য জায়গার জন্য এই সড়কটি সম্পূর্ণ হচ্ছে না। সড়কটি সম্পূর্ণ হলে মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।’

স্থানীয় লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল হক জানান, সড়কের ব্যাপারে আমার স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে। তিনি আমায় আশ্বস্ত করেছেন এলজিইডির প্রকল্পের আওতায় দ্রুত এই সড়কের কাজ শেষ করা হবে।

দোয়ারাবাজার উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী হরজিৎ সরকার বলেন, ‘সিংগিদাইর ব্রিজটি এসডিডিজির প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ কাজ করা। ব্রিজের দুই পাশে যে কাঁচা রাস্তা রয়েছে, তার ১৯ কিলোমিটার অংশ করা হয়েছে। বাকি তিন চার কিলোমিটার রাস্তা আমাদের প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। আমরা যখন পর্যায়ক্রমে অনুমোদন পাবো, তখন আমরা করে ফেলব।’


সুনামগঞ্জ/আল আমিন/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়